যশোর পৌর যুবদলের এক নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি তারেক হোসেন চুন্নু ও নগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবিতে এক নারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। চাঁদার তিন লাখ টাকা না পেয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন তারা। এসময় ওই নারীর শ্লীলতাহানিও করা হয়।
রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন শহরের বারান্দীপাড়া ঢাকা রোড এলাকার বাসিন্দা এক নারী।
লিখিত বক্তব্যে ওই নারী বলেন, ‘আমার জীবিকার একমাত্র ভরসা চারটি ইজিবাইক। যা ভাড়া দিয়ে সংসার চালাই। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে আমার ব্যবসার দিকে নজর পড়ে চুন্নুর। কিছুদিন পর তিনি আমার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় চুন্নু ও তার সহযোগীরা আমাকে বারবার হুমকি দিতে থাকেন। গত ৪ আগস্ট বিকেলে শহরের বৌবাজার এলাকার চুন্নু, বিশাল, আকাশ, লাল্টু, সোহেল ওরফে চাকু সোহেল, শফিক, হাসান, সনু, মন্ডল, হাবিব, তুষার, আল আমিনসহ আরও ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালান। আমার ঘরে ঢুকে দুই লাখ টাকা দাবি করেন তারা। টাকা না দেওয়ায় আমাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। সানু ও লাল্টু আমার শ্লীলতাহানি ঘটান। এসময় চুন্নু ঘর তল্লাশি করে আমার ব্যবসার ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। এসময় আমার ছেলেকেও মারধর করেন তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মাত্র ১১ মাস বয়সী শিশুর গলায় চাকু করে অবশিষ্ট টাকা দিতে বলেন তারা। এসময় আমার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে অনেকে পালিয়ে যায়। তবে চুন্নুসহ কয়েকজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। পরে কিছু দুর্বৃত্ত এসে চাকুর ভয় দেখিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান। কিছু সময় পর চুন্নুর নেতৃত্বে আরও ৩০-৪০জন আবার আমার বাড়িতে আসেন। সঙ্গে বস্তি এলাকা থেকে ৩০ জন নারী এনে ঘিরে ফেলেন আমার বাড়ি। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন তারা। পরে আমি ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।’
ওই নারী অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিতে গেলে প্রথমে তারা অভিযোগ নিতে চাননি। পরে অভিযোগ নিলেও আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেননি। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ফোনটি ফেরত পাই। বর্তমানে আমি শিশু সন্তান নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। চাঁদাবাজ চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
তবে চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যশোর পৌর যুবদলের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি তারেক হোসেন চুন্নু।
তিনি বলেন, ‘ওই নারী ইজিবাইক ভাড়া দেন। তার ইজিবাইক ভাড়ায় চালাতেন একজন। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওই চালককে দুই হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। মীমাংসার জন্য ওই নারী আমাকে ডাকেন। আমরা সেখানে গিয়ে দেখি ওই নারী অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন। পরে আমরা তাকে পুলিশে সোপর্দ করি। এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।’
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন জানান, ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের তদন্ত চলছে। সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মিলন রহমান/এসআর/জিকেএস