চাঁদাবাজি বন্ধ-নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ কম: রিজভী

3 weeks ago 17

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে পারছে না। অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবের মধ্যে গঠিত হয়েছে। এই সরকারকে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। সেই প্রত্যাশা পূরণে ঘাটতি থাকলে, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের চিন্তা অনুযায়ী কথা বলবে।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল মহানগর উত্তরের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ও চাঁদাবাজি বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, রাস্তার মোড়ে মোড়ে চাঁদাবাজদের ধরুন। অনেক সময় পুলিশ খাদ্যপণ্যের গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায় করছে। এগুলো বন্ধ করলেই দাম কমে আসবে। আমরা বলছি না যে সরকারের কোনো লোক এটা করছে। কিন্তু শক্তিশালী প্রশাসনিক নির্দেশনা থাকলে রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি হতো না। মানুষকে এই পরিস্থিতি যদি আগের আমলের চেয়ে স্বস্তি দিতে না পারে তাহলে মানুষ হতাশ হবে। খাদ্যপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমেনি। জাতীয়তাবাদী কৃষক দল শাকসবজি নিজেরা কিনে ভর্তুকি দিয়ে বিক্রি করছে। এটাই হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের বৈশিষ্ট্য।

যখন গণতন্ত্র ছিল না তখন আমাদের আন্দোলন করতে হয়েছে। শেখ হাসিনার লাল চক্ষু উপেক্ষা করে বিশেষ করে তার প্রশাসনের সামনে বুকে সাহস নিয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়েছে। তাদের অনেকে গ্রেফতার হয়েছে, অনেকে মৃত্যুবরণ করেছে। দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কৃষক দল কৃষি উন্নয়নে কাজ করবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ছেলেরা যদি কৃষকের জন্য কাজ করে সেই কৃষির উন্নয়ন দ্রুত হবে। মানুষ যেন অনাহারে না থাকে সরকারকে এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। এটাই তাদের কাজ।

আরও পড়ুন:
দেশে বিরাজনীতিকরণের প্রয়াস চলছে: রিজভী https://www.jagonews24.com/politics/news/988066

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করবে। কেউ হুমকিতে থাকবে না। কিন্তু আপনারা যদি প্রশাসনে শেখ হাসিনার দোসরদের লালনপালন করেন। আপনি নারায়নগঞ্জে এসপি যিনি যুবদলের শাওন হত্যায় জড়িত। সেই এসপিকে যদি ডিসি হেডকোয়ার্টার বানান। তাহলে আপনি সমাজ থেকে কীভাবে চাঁদাবাজি বন্ধ করবেন। কীভাবে খুন বন্ধ করবেন। কীভাবে হানাহানি বন্ধ করবেন। আপনাকে সুফি হওয়ার দরকার নেই। সাধক হওয়ার দরকার নেই। আপনি দেখুন কে অন্যায় করছে। তাকে গ্রেফতার করুন, আইনের আওতায় আনুন। যে পুলিশ আহত হয়েছিল তাকে ভালো পোস্টিং দিলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না। যুবদল নেতা, যে সিএনজি চালাতো। সেই যুবদল নেতা হত্যাকারীকে ভালো পোস্টিং দিলে আপনি কীসের প্রশাসন চালাবেন। প্রশাসনের ভেতরে যে কালো দোসর ও ভূতগুলো আছে। তারা আপনাদের এবং পরবর্তী পর্যায়ে যে সরকার আসবে তাদের নানাভাবে বিনষ্ট করার চেষ্টা করবে। আপনাদের প্রাথমিক দায়িত্ব ছিল তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা। তা না করে যদি আপনারা ভালো পোস্টিং দেন। পদোন্নতি দেন তাহলে কিন্তু মানুষ ভালো চোখে দেখবে না।

রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে সম্প্রতি এক উপদেষ্টার বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, এটা এক ধরনের অহংবোধে অভিব্যক্তি। একাত্তর কার সৃষ্টি, যুদ্ধ সৃষ্টি, যুদ্ধে বিজয় কাদের, এরশাদকে নামিয়ে যে গণতন্ত্রের আরেকবার বিজয় করেছিলাম এটা কি সুশীল সমাজের অবদান, তখন সুশীল সমাজ সমর্থন দিয়েছে। আপনারা যদি প্রকৃত সংস্কার করেন। তাহলে নির্বাচন, গণতন্ত্রের অপরিহার্য অংশগুলো, আইনের শাসন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করা এত বিলম্ব হওয়ার কথা না। এতদিনের আপনাদের ক্ষমতায় শাসন বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করতে পারতেন। শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরের গণতন্ত্র নিরুদ্দেশ করে দিয়েছিল। আপনারা সেই সেই ভোটের অধিকারটি হয়ত ফিরিয়ে দিতে চান না এই ধরনের ধারণা মানুষ করবে। মানুষের মধ্যে এমন আশঙ্কা তৈরি হবে। আপনারা যেটা করবেন অতি তাড়াতাড়ি ভোট দিতে পারে, নির্বাচন হতে পারে সেই আশাবাদ মানুষের কাছে আপনারা তুলে ধরুন।

শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, দপ্তর সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শামসুর রহমান শামসহ মহানগর উত্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

কেএইচ/এমআরএম/জিকেএস

Read Entire Article