চাঁনখারপুলে ৬ হত্যা: পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ১৪ সেপ্টেম্বর

11 hours ago 4

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর চাঁনখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ দিনের মতো দুই জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী সাক্ষী গ্রহণের জন্য আগামী রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সাক্ষ্য গ্রহণের নির্ধারিত দিনে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে দুই জনের সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাক্ষীরা হলেন- মো. টিপু সুলতান ও মো মনিরুজ্জামান।

এর আগে, গত ৭ সেপ্টেম্বর মামলায় পঞ্চম দিনের মতো তিনজনের সাক্ষী গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে একজন শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের মা সানজিদা খান দীপ্তি। বাকি দু’জন হলেন-আনাসকে গুলি করতে দেখা প্রত্যক্ষদর্শী রাব্বি হোসেন ও ব্যবসায়ী আবদুল গফুর। ওই দিন সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাদের জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।

এর আগে গত ২১ আগস্ট চতুর্থ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ওই দিন ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন শহীদ রাকিব হোসেন হাওলাদারের বাবা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও বড় ভাই রাহাত হাওলাদার। তারা দু’জনই হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।

গত ১৩ আগস্ট তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন শহীদ ইয়াকুবের মা রহিমা আক্তার, তার প্রতিবেশী চাচা শহীদ আহমেদ ও শহীদ মো. ইসমামুল হকের ভাই মহিবুল হক। এরও আগে গত ১২ আগস্ট দ্বিতীয় দিনে জবানবন্দি দিয়েছেন দু’জন। এর মধ্যে একজন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আঞ্জুয়ারা ইয়াসমিন ও আরেকজন শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদের বাবা শেখ জামাল হাসান।

গত ১১ আগস্ট চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সূচনা বক্তব্য শেষে মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন শহীদ আনাসের বাবা সাহরিয়ার খান পলাশ। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১১ জন জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিনে, আজও কারাগার থেকে মামলার চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশেদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।

গত ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

গত ২০ এপ্রিল চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এটিই ছিল জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন। পরে গত ২৫ মে এই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নেন।

এ মামলায় ৭৯ জনকে সাক্ষী করেছে প্রসিকিউশন। গত ১৪ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। সেই ধারাবাহিকতায় গত ১১ আগস্ট প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্যের পর শুরু হয় সাক্ষ্য গ্রহণ।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চাঁনখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।

এফএইচ/এনএইচআর/জেআইএম

Read Entire Article