চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে তৈরি হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারের জনপ্রিয় পণ্য ড্রাই ম্যাংগো। স্বাদ ও ঘ্রাণে অনন্য আশ্বিনা জাতের আমকে আধুনিক প্রক্রিয়ায় রূপ দিয়ে এ ড্রাই ম্যাংগো তৈরি করছেন স্থানীয় উদ্যোক্তা ইসমাইল খান শামীম। যা একদিকে বদলে দিচ্ছে আমের কদর। অন্যদিকে খুলে দিচ্ছে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। কৃষক থেকে উদ্যোক্তা সবাই দেখছেন এরমধ্যে গ্রামীণ অর্থনীতির নতুন স্বপ্ন।
ইসমাইল খান শামীম চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌর এলাকার খানপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। পারিবারিকভাবে আম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনি। সাধারণ আম চাষিদের দাবি আদায়ের জন্যও কাজ করেন তিনি। গত দুই বছর চেষ্টার পর থাইল্যান্ডের ড্রাই ম্যাংগো তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
ইসমাইল খান শামীম জানান, ২০২২ সালে থাইল্যান্ডে গিয়ে প্রথম ড্রাই ম্যাংগো দেখে পছন্দ হয়। সেখান থেকে এসে নিজ বাগানে বিদেশি সংস্থা সুইসকন্ট্যাক্টের সহযোগীতায় গড়ে তোলেন ড্রাই ম্যাংগো প্রসেসিং যন্ত্রাংশ। এখন আশ্বিনা আম দিয়ে দিন এক মনের বেশি ড্রাই ম্যাংগো তৈরি করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, আমাদের সিজনের ৬০ শতাংশ আম গাছ থেকে পেকে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। কোনো কাজে পাওয়া যায় না এসব আম। স্থানীয়ভাবে চাষ হওয়া এসব আমের প্রক্রিয়াজাতকরণে আমরা লাভবান হব।
শামীম খানের কারখানার শ্রমিক আকালু বলেন, গাছ থেকে আমগুলো নামিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে খোসা ছাড়ানো হয়। তারপর পাতলা স্লাইস করে দেন আধুনিক ড্রায়িং মেশিনে। কয়েক ঘণ্টা তাপ ও বায়ুপ্রবাহের নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে নেওয়া হয় প্রতিটি স্লাইস। এটি খেতেও অত্যন্ত সুস্বাদু।
শিবগঞ্জ সুইসকন্ট্যাক্টের এলএডি কর্মকর্তা আলামিন আলি বলেন, সারাবিশ্বে ড্রাই ম্যাংগো অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমরা বাংলাদেশে এ পণ্যের বিস্তার ঘটাতে চাই। এতে স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়ন হবে। লাভবান হবেন চাষি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, এসব পণ্যের বিস্তার ঘটানো গেলে বাড়বে কম দামি আমের দাম। লাভবান হবেন চাষি। তবে প্রক্রিয়াজাতকরণে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মো ইয়াছিন আলী বলেন, জেলায় আমের প্রক্রিয়াজাতকরণের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। নতুন উদ্যোক্তাদের সবধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ড্রাই ম্যাংগোর বিস্তার ঘটনা গেলে চাঙ্গা হবে জেলার অর্থনীতি। লাভবান হবেন চাষি।
সোহান মাহমুদ/আরএইচ/এমএস