আড়াই বছর পর ওমান থেকে দেশে ফিরলেন প্রবাসী বাহার উদ্দিন। তাকে আনতে পরিবারে ১১ সদস্য মাইক্রোবাসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাস খালে পড়ে পরিবারটির ৭ সদস্যই মারা যান।
এমন মর্মান্তিক ঘটনায় শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা। স্বজনদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
বেঁচে ফেরা প্রবাসী বাহার উদ্দিন ও আব্দুর রহিম জানান, ঘুম চোখে নিয়ে মাইক্রোবাস চালাচ্ছিলেন চালক রাসেল। বার বার বলা সত্ত্বেও গাড়ি থামিয়ে সামান্যও বিশ্রাম নেননি তিনি। এর আগে কুমিল্লায় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে আসে। কিন্তু বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার আগেই ঘুমন্ত চালক গাড়িটি সড়কের পাশে খালে ফেলে দেন। গাড়ি তাৎক্ষণিক ডোবেনি, ধীরে ধীরে ডুবছিল। তখন চালককে গাড়ির লক খুলতে বললেও খুলে দেননি। তবে তিনি নিজে গাড়ির কাঁচ নামিয়ে বের হয়ে পালিয়ে যান। কাউকে বাঁচানোর চেষ্টাও করেননি।
একপর্যায়ে গাড়ি থেকে প্রবাসী বাহার, তার বাবা আব্দুর রহিম, শ্বশুর ইস্কান্দার মীর্জা, ভাবি সুইটি ও শ্যালক রিয়াজ বের হয়ে আসেন। তবে বাঁচতে পারেননি বাহারের স্ত্রী কবিতা আক্তার (২৪), মেয়ে মীম আক্তার (২), মা মুরশিদা বেগম (৫০), নানি ফয়জুন নেছা (৭০), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯), লামিয়া আক্তার (৮) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী আক্তার (২৫)। নিহতরা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী এলাকার কাশারি বাড়ির বাসিন্দা।
বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে নোয়াখালী বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব বাজার এলাকায় লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে খালে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর আগে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে বাহারকে আনার জন্য মাইক্রোবাসে পরিবারের সদস্যরা বিমানবন্দরে যান।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। কয়েকজন বের হতে পারলেও সাতজন ভেতরে আটকা পড়ে মারা যান। তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো বাড়িতে নিয়ে গেছেন স্বজনরা।
কাজল কায়েস/এফএ/জেআইএম