এই সপ্তাহের বাজারদরে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন পেঁয়াজের দামে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে তা কেজিপ্রতি প্রায় ৪০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে যারা ৮০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনেছেন, তারা এখন কিনছেন ১২০ টাকা দরে।
অন্যদিকে, বাজারে আমন ধানের নতুন চাল আসি আসি করছে। এতে চালের দামে কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। আগের চেয়ে চালের দাম এখন কেজিপ্রতি ২-৩ টাকা কম।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর রামপুরা মালিবাগ ও তালতলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমনই। বাজারে ক্রেতারা পেঁয়াজের দামে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তির কথা বলছেন।
একই কথা বলছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর তথ্যও। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ৫৮ দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়ে এখন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে গত সোমবার থেকে। তবে কিছু পাইকারি বিক্রেতা শুক্রবার জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। কারণ এ মাসেই নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসছে। হুট করে দাম বাড়ায় বাজারে মনিটরিং বাড়িয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন
কিছুটা কমলো মূল্যস্ফীতি: স্বস্তি খাদ্যে, চাপ খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে
দেশে ২০২৫ সালের মধ্যে ওষুধের বাজার ৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে
ঘাটতি থাকলে আমদানি হবে পেঁয়াজ
খিলগাঁও তালতলা বাজারে বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, চলতি মাসে নতুন পেঁয়াজের একটি বড় চালান বাজারে আসতে শুরু করবে। যা বাজারে পেঁয়াজের দামে ভূমিকা রাখবে। ফলে দাম কিছুটা বাড়লেও আর বাড়ার সুযোগ নেই, বরং কমছে এখন।

কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। যা এক সপ্তাহ আগে বাজার ও মানভেদে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৭০-৮০ টাকায়।সেই হিসেবে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত।
রামপুরার মুদি ব্যবসায়ী মাসুদ মিয়া বলেন, এক সপ্তাহই লাগেনি, পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকার বেশি বাড়লো। এতে আমাদের বিক্রি কমে গেছে, আবার ক্রেতাদেরও জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে।
তিনি জানান, পাইকারি বাজারে এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছাড়িয়েছে ১০৮-১১০ টাকা, যা গত বুধবারও একই ছিল। তবে সপ্তাহখানেক আগে পেঁয়াজের পাইকারি দাম ছিল মাত্র ৭২-৭৪ টাকা।
এদিকে, বাজারে কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেছে চালের দামে। কারণ আমনের ভরা মৌসুম শুরু হতে আর বাকি মাত্র ১০-১৫ দিন। এরইমধ্যে কোনো কোনো অঞ্চলে রোপা আমন ধান মাঠ থেকে উঠতে শুরু করেছে।
পাশাপাশি কিছু চাল আমদানিও করা হচ্ছে। এই দুইয়ে মিলে চালের বাজারে স্বস্তির আভাস মিলছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, জিরা, পাইজাম, গুটি স্বর্ণাসহ কয়েক ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি ১ থেকে ২ টাকা কমেছে। দাম এর আগের সপ্তাহেও ১ টাকা করে কমেছিল। সে হিসাবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কেজিপ্রতি ২-৩ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
এখন বাজারে শম্পা কাটারি কিংবা নাজিরশাইলের মতো ভালো মানের সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৮-৮০ টাকা কেজি। এ ছাড়া জিরাশাইল, জিরা নাজির, মিনিকেটসহ বিভিন্ন জাতের সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৬ টাকায়।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এই চালগুলোর দাম গত এক সপ্তাহে কেজিপ্রতি ১ থেকে ২ টাকা কমেছে। তবে মোটা ধরনের ব্রি২৮ চালের দাম স্থির রয়েছে আগের মতোই কেজিপ্রতি ৫৮-৬০ টাকায়।
অন্যদিকে, পাইজাম, গুটি স্বর্ণা ও কিছু মোটা জাতের চালের দামও কমেছে কিছুটা। এসব চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৬ টাকা কেজি। গত সপ্তাহ পর্যন্ত তা ছিল ৫২-৫৩ টাকা কেজি।
টিসিবির তথ্যও বলছে, গত এক সপ্তাহে মাঝারি ও মোটা চালের দাম ১-২ টাকা কমেছে। এখন মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪-৬০ টাকা কেজি, যা কয়েক দিন আগে ছিল ৫৫-৬০ টাকা।
বাজারে ফার্মের মুরগির ডিম ১৪০ টাকার ডজন এবং প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি অপরিবর্তিত দেখা গেছে। এছাড়া তেল, চিনিসহ অন্যান্য মুদি পণ্যের দামেও তেমন হেরফের লক্ষ্য করা যায়নি।
এনএইচ/এসএনআর/জিকেএস

4 hours ago
6









English (US) ·