কর্মক্ষেত্রের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুললে সেই শিক্ষা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে নিডফুল এডুকেশন বা চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। এ ধরনের শিক্ষাই কেবল দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। কর্মমুখী বিশেষায়িত শিক্ষাই দেশের বিপুল তরুণ প্রজন্মকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে পারে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) ‘বাংলাদেশে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভের (ইআরআই) উদ্যোগে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, কর্মমুখী কারিগরি শিক্ষার প্রতি সমাজের কোনো প্রকার অবজ্ঞা সমীচীন নয়। চাকরি, গবেষণা, প্রকৌশল, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ সব বিষয়েই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক এ প্রতিযোগিতার উপযুক্ত করে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।
কোটা না মেধা- এ ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলে ছাত্র-ছাত্রীরা দেশকে আজ নতুন জায়গায় নিয়ে এসেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ফায়েজ বলেন, ‘জিনিস (কোটা না মেধা) কত বড় হয়ে দাঁড়ালো তা তো আমরা দেখেছি। আমি যখন পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলাম, তখন এটি সামনে আসতো, খুব ঝামেলাপূর্ণ। অনেকে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও আসতো। অবস্থাদৃষ্টে বিষয়টি এমন যে, আমরা প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরই চিহ্নিত করতে পারছি না।
‘যারা এ কোটা (মুক্তিযোদ্ধা) সুবিধা পাচ্ছেন, তাদের সন্তানরাও সুবিধা পাবেন। আবার যারা তাদের কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন, তাদের সন্তানরাও বঞ্চিত থেকে যাবেন। এটা আসলেই চলতে পারে না। চব্বিশে এসে সত্যিই তাতে ছেদ পড়েছে, সেটা এক অভ্যুত্থানে।’
সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান। মূল প্রবন্ধে ইন্ডাস্ট্রি ও অ্যাকাডেমিয়ার সমন্বয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ, বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাঈদ ফেরদৌস।
বক্তারা বলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী ও চাহিদাভিত্তিক করে গড়ে তুলতে কারিগরি, প্রযুক্তিগত ও পেশাভিত্তিক শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে গবেষণা সহযোগিতা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং শিল্প ও অ্যাকাডেমিয়া সংযোগ বাড়ানো জরুরি।
ইআরআই’র চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিললেরন সভাপতিত্বে সেমিনারে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলার, শিক্ষাবিদ, নীতি নির্ধারক ও গবেষকরা অংশ নেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইআরআই’র সদস্যসচিব সৈয়দ রেজওনুল কবির।
এএএইচ/ইএ/জেআইএম