চিলমারী বন্দরে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় ঢালাই বন্ধ

3 days ago 6

কুড়িগ্রামের চিলমারী নদী বন্দরের কাজ রাতের আঁধারে নিম্নমানের পাথর বালু দিয়ে ঢালাই দেওয়ার সময় ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। বন্দরের টার্মিনালের ছাদে ঢালাই দেওয়ার সময় সিমেন্ট পরিমাণে কম ও নিম্নমানের পাথর ব্যবহার করায় রোববার (১৭ নভেম্বর) রাতে স্থানীয় নেতাকর্মীরা কাজ বন্ধ করে দেন।

এর আগে সকাল ৯টায় বন্দরের টার্মিনালের ঢালাই শুরু হয়। এ সময় পাথর ও বালু মিশ্রণে সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে রাত হলে অব্যবহৃত পাথর দিয়ে ঢালাই দিতে দেখা যায় শ্রমিকদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ছিল ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারায় প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সাল পর্যন্ত করা হয়। তবে সে সময়ে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়নি।

সম্প্রতি প্রকল্পটির সংশোধিত প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এতে প্রকল্পের ব্যয় ১০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে দিপু এন্টারপ্রাইজের আওতায় টার্মিনাল নির্মাণের কাজ হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দেন। এসময় দেখা যায় নিম্নমানের পাথর ও বালুর সংমিশ্রণ।

এ সময় শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সকাল ৯টার পর ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়। এরপর ঢালাইয়ে ব্যবহৃত পাথর শেষ হওয়ায় সন্ধ্যার পর বড় বড় পাথর দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়েছে। যেসব পাথর ঢালাইয়ের জন্য যোগ্য নয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন এসে কাজ বন্ধ করতে বলেন। আমরা কাজ বন্ধ করে দেই।

উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাখ খাইরুল ইসলাম স্বাগত, মুরশীদ আলম শিমুল, রমনা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদুল ইসলাম, থানাহাট ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব ইব্রাহিম, যুব নেতা ইদ্রিস আলীসহ আরও অনেকে জানান, কাজের মান একেবারে নিম্নমানের হওয়ায় আমরা বেশ কয়েকবার কাজ বন্ধ করে দিলেও তারা আমাদের অনুপস্থিতে কাজ চালিয়ে যায়।

এখানে ময়লাযুক্ত বড় সাইজের পাথর দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যা ছাদ ঢালাইয়ের অনুপযোগী। ঢালাইয়ের সময় পাথর ও বালুর সঙ্গে যে সিমেন্ট দেওয়া হচ্ছে তাও পরিমাণের তুলনায় অনেক কম। সাধারণ মানুষকে ফাঁকি দিতে রাতের আধারে তারা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছে। এটি আমাদের এলাকার সম্পদ যা দেখার দায়িত্ব আমাদের সবার। তাই আমরা একত্রিত হয়ে কাজটি বন্ধ করে দিয়েছি।

নদী বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী দাউদ ইসলাম বলেন, টার্মিনাল ভবনের ছাদ ঢালাইকালে স্থানীয়রা এসে মিষ্টি খেতে চায়। মিষ্টির জন্য বরাদ্দ নেই জানালে তারা কাজ বন্ধ করে দেন।

Read Entire Article