যশোরের ২৩ বছর বয়সী নারী জান্নাতুল নাঈম প্রায় এক বছর ধরে মেরুদণ্ডের জটিল সমস্যায় ভুগছিলেন। তীব্র ব্যাকপেইনের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছিল তার। দেশে ১১ মাস ধরে একের পর এক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও কাঙ্ক্ষিত উন্নতি মেলেনি।
চিকিৎসা ব্যয়, সময় ও ঝুঁকির বিষয়গুলো ভেবে প্রথমে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতকেই চিকিৎসার জন্য সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে বিবেচনায় নেয় জান্নাতুলের পরিবার। বাবা না থাকায় জান্নাতুল তার ফুফাতো ভাইকে অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে নিয়ে ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু ফুফাতো ভাই আটেনডেন্ট বলে ভিসা হয়নি তাদের।
কুনমিয়ের তংরেন হাসপাতোলের চিকিৎসা অতুলনীয় ছিল। ডাক্তাররা যে পরিমাণ পেশাদারত্ব দেখিয়েছেন তাতে আমি মুগ্ধ।- জান্নাতুল নাঈম
তখনই গণমাধ্যমে চীনের কুনমিং শহরে উন্নত চিকিৎসাসেবা ও সহজ ভিসা প্রক্রিয়ার খবর চোখে পড়ে জান্নাতুলের। কয়েকদিন অনলাইনে যোগাযোগের পর পুরো চিকিৎসার খরচ সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া হয় তাকে।
এরপর শুরু হয় জান্নাতুলের কুনমিং যাত্রা। সেই ফুফাত ভাই ওমর ফারুক রাশেদিনকে নিয়ে কুনমিংয়ের তংরেন হাসপাতালে যান। ভর্তি হওয়ার পরপরই সেখানে শুরু হয় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা। চিকিৎসকেরা দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন এবং সফলভাবে তা সম্পন্ন করেন। সব মিলিয়ে ১৭ দিনের চিকিৎসা শেষে গত ১৫ আগস্ট দেশে ফিরেছেন তারা।
নার্সরা রাতে ৮-১০ বার এসে রোগীর খোঁজ নিতেন। চিকিৎসকরাও অনেক বেশি আন্তরিক। অনেক সময় নিজ হাতে রোগীর ড্রেসিং করাতেন, সাধারণত আমাদের দেশের চিকিৎসকরা যেখানে হাতও দেন না।- জান্নাতুলের ভাই ওমর ফারুক রাশেদিন
চীনে চিকিৎসা নেওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে জান্নাতুল নাঈম জাগো নিউজকে বলেন, ‘কুনমিয়ের তংরেন হাসপাতোলের চিকিৎসা অতুলনীয় ছিল। ডাক্তাররা যে পরিমাণ পেশাদারত্ব দেখিয়েছেন তাতে আমি মুগ্ধ। এমনকি আমার মেরুদণ্ডে জটিল অপারেশনের পর ১৫ দিনের চিকিৎসা শেষে আমাকে বাড়তি কোনো ওষুধপত্রও সাজেস্ট করেনি। অথচ আমি গত ১১ মাস অনেক ওষুধ খেয়েছি। কুনমিয়ের চিকিৎসায় বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতালের মতোই খরচ পড়েছে, কিন্তু সেখানকার সেবার মান একেবারে আলাদা।’
জান্নাতুলের ভাই ওমর ফারুক বলেন, ‘নার্সরা রাতে ৮-১০ বার এসে রোগীর খোঁজ নিতেন। চিকিৎসকরাও অনেক বেশি আন্তরিক। অনেক সময় নিজ হাতে রোগীর ড্রেসিং করাতেন, সাধারণত আমাদের দেশের চিকিৎসকরা যেখানে হাতও দেন না। এমনকি কখনো কখনো বিছানাও গুছিয়ে দিতেন চিকিৎসকরা। সেখানকার আন্তরিকতা, পেশাদারত্ব ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখে আমরা অভিভূত।’
- আরও পড়ুন
- যে কারণে উন্নত চিকিৎসায় বিকল্প ভাবা হচ্ছে চীনের হাসপাতাল
- বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে চীনের হাসপাতালে
- বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন
- স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়লো ৫০১ কোটি টাকা
চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীনা সরকারের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ থেকে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি কুনমিং সফর করে। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের নেতৃত্বে ২৩ সদস্যের এই দলটি সেখানকার বিভিন্ন আধুনিক হাসপাতাল ঘুরে দেখে।
ভিসা চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় চীন সরকার খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। একই সঙ্গে রোগীদের সুবিধার্থে একটি তথ্যভিত্তিক ফেসবুক পেজও চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।- কুনমিয়ে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. খালিদ
সেখানেই দেখা হয় জান্নাতুল নাঈমের মতো আরও অনেক বাংলাদেশি রোগীর সঙ্গে। তাদের অধিকাংশই সেখানকার চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে ভাষাগত সংকট ও খাবারের সহজলভ্যতা নিয়ে কিছুটা সমস্যার কথাও জানান তারা।
ঢাকা থেকে কুনমিংয়ে ফ্লাইটে যাত্রায় মাত্র আড়াই ঘণ্টা সময় লাগলেও সরাসরি ফ্লাইট বর্তমানে মাত্র একটি। তবে চীন সরকার বাংলাদেশিদের জন্য চিকিৎসা সুবিধা সহজ করতে পাঁচটি আধুনিক হাসপাতাল বিশেষভাবে নির্ধারণ করেছে। তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের মার্চ থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চিকিৎসা ভিসায় ৬০০-এরও বেশি বাংলাদেশি চীন ভ্রমণ করেন।
চীনারা ইংরেজি না জানায় ভাষাগত সমস্যায় পড়তে হয়। তাছাড়া বাংলাদেশিদের উপযোগী খাবারও সহজে মেলে না। ঢাকা-কুনমিং রুটের দূরত্ব কম হলেও ফ্লাইটের সংখ্যা মাত্র একটি।- বলছেন বাংলাদেশি রোগীরা
কুনমিংয়ের ওই একই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া আরেক বাংলাদেশির সঙ্গে কথা হয়। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক রোবটিকস প্রযুক্তির মাধ্যমে আমার অপারেশন করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমি যাচাই-বাছাই করে জানতে পারলাম চীন এক্ষেত্রে ভালো। তাই এখানে এসেছি।’
একদিনেই মিলছে চিকিৎসা ভিসা
ঢাকায় চীনা দূতাবাস জানিয়েছে, এখন থেকে এক কর্মদিবসেই চিকিৎসা ভিসা দেওয়া হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে এ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে ‘গ্রিন চ্যানেল সার্ভিস’র আওতায়। তুলে দেওয়া হয়েছে ভিসা আবেদনকারীর সাক্ষাৎকারের বাধ্যবাধকতাও।
চীন থেকে উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাচ্ছে তুলনামূলক কম খরচে। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড বা সিঙ্গাপুরের চেয়ে চিকিৎসা ব্যয় কিছুটা কম, অথচ প্রযুক্তিগত ও দক্ষতার দিক থেকে চীনের হাসপাতালগুলো সমপর্যায়ের।- বলছেন রোগী ও তাদের স্বজনেরা
কুনমিংয়ে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. খালিদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভিসা চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় চীন সরকার খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। একই সঙ্গে রোগীদের সুবিধার্থে একটি তথ্যভিত্তিক ফেসবুক পেজও চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
জরুরি প্রয়োজনে একদিনের মধ্যেও ভিসা দেওয়া হচ্ছে এবং গ্রিন চ্যানেলের মাধ্যমে প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
চীনে চিকিৎসা ভিসা পেতে শুধু একটি আমন্ত্রণপত্র থাকলেই যথেষ্ট। ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা এখন আর কোনো বাধা নয়।’
চীনের প্রায় সব হাসপাতালেই চিকিৎসা ব্যয়ের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই। কোথাও অপারেশনের খরচ বেশি বা কম হয় না। সবকিছুই নির্ধারিত ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় চলে।- বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আরিফিন ইসলাম
চিকিৎসার মান ও ব্যয়
চীনে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, চীন থেকে উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাচ্ছে তুলনামূলক কম খরচে। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড বা সিঙ্গাপুরের চেয়ে চিকিৎসা ব্যয় কিছুটা কম, অথচ প্রযুক্তিগত ও দক্ষতার দিক থেকে চীনের হাসপাতালগুলো সমপর্যায়ের।
কুনমিং মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হাসপাতালের পিএইচডি শিক্ষার্থী আরিফিন ইসলাম বলেন, ‘চীনের প্রায় সব হাসপাতালেই চিকিৎসা ব্যয়ের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই। কোথাও অপারেশনের খরচ বেশি বা কম হয় না। সবকিছুই নির্ধারিত ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় চলে।’
বাংলাদেশি রোগী জান্নাতুল নাঈমের ভাই ওমর ফারুক বলেন, ‘ওর চিকিৎসা ব্যয় ছিল প্রায় ৬০ হাজার ইউয়ান বা ১০ লাখ টাকা (১ ইউয়ান সমান ১৬.৯৫ টাকা), যা বাংলাদেশের শীর্ষ বেসরকারি হাসপাতালের খরচের সমান হলেও সেবার মান ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।’
‘যাতায়াতসহ সব মিলিয়ে ১৫ লাখ টাকার মধ্যে চিকিৎসা শেষ করে দেশে ফিরেছেন’- জানান জান্নাতুল। তার কথায়, ‘আমি গত এক বছর ধরে অসহনীয় যন্ত্রণা সহ্য করেছি। তাই এখন আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া এই টাকার বিনিময়ে সুস্থ হয়ে ফিরতে পেরেছি।’
চীনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, চিকিৎসার ক্ষেত্রে একজন চীনা নাগরিকের মতোই খরচ হবে বাংলাদেশিদের। তবে চীনা নাগরিকদের ইন্স্যুরেন্স সুবিধা রয়েছে। বাংলাদেশিরা সেটা এখানে পাবে না। এটুকুই পার্থক্য।
উন্নত প্রযুক্তি ও হাসপাতাল সুবিধা
চিকিৎসা নিতে আসা বাংলাদেশিদের অভিজ্ঞতা আরও সহজ করতে কাজ করছে চীনা কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাংলাদেশি মুসলিম রোগীদের জন্য হালাল খাদ্য নিশ্চিত করতে হাসপাতালগুলোতে ‘হালাল ক্যান্টিন’ চালুর কাজও চলছে।
ইউনান প্রদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে স্বাস্থ্য কমিশনের উপপরিচালক ওয়াং জিয়ানকুন বলেন, ‘এ প্রদেশে বর্তমানে মোট ২৯ হাজার ৬৭৮টি চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে ১ হাজার ৩১৯টি হাসপাতাল, ১২২টি টারশিয়ারি (উচ্চতর বিশেষায়িত) স্তরের এবং ৪৭২টি সেকেন্ডারি (মধ্যম মানের) হাসপাতাল। সব মিলিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানে শয্যাসংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি।’
তিনি জানান, বাংলাদেশি রোগীদের জন্য যেসব হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়েছে, সেগুলো আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি, প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও সর্বোচ্চ মানের সেবার নিশ্চয়তা দেয়।
চীনের স্বাস্থ্য খাতের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশিদের জন্য এমন হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়েছে, যারা সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা সেবা দিতে সক্ষম এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারেও এগিয়ে।
কুনমিং আই হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ঝ্যাং মিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশি রোগীরা এখানে উন্নত ও সাশ্রয়ী চিকিৎসাসেবা পাবেন। আমাদের এখানে প্রতিবছর ভারত, রাশিয়া ও অন্যান্য দেশ থেকে প্রচুর রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। বাংলাদেশিদের জন্যও আমাদের দরজা সবসময় খোলা।’
রোগী, হাসপাতাল ও মেডিকেল ট্যুরিজম সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য অনুযায়ী, কুনমিংয়ে চিকিৎসা ব্যয় থাইল্যান্ডের তুলনায় অনেকটাই কম। আর ভারতের দিল্লির আধুনিক হাসপাতালগুলোর তুলনায় খরচ গড়ে ১০ শতাংশের মতো বেশি হলেও, সেবার মান এবং সুযোগ-সুবিধা আন্তর্জাতিক মানের।
ফুয়ায়ি হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট লু জিয়াং বলেন, ‘চীনের চিকিৎসাব্যবস্থা থাইল্যান্ডের সমমানের হলেও খরচ অনেক কম। কিছু ক্ষেত্রে চার ভাগের এক ভাগ মাত্র। এমনকি মালয়েশিয়ার তুলনায়ও ব্যয় সাশ্রয়ী।’
ভাষা ও খাওয়ার চ্যালেঞ্জ
চীনে চিকিৎসা নিতে গিয়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে ভাষা ও খাবারের বিষয়টি। তবে এ সমস্যা সমাধানে কিছু হাসপাতাল হালাল ক্যান্টিন চালু করেছে। দোভাষীর ব্যবস্থা থাকলেও শুরুর দিনগুলোতে এর জন্য ৫০০ ইউয়ান খরচ পড়তে পারে। পরবর্তী দিনে এ খরচ কমে আসে।
- আরও পড়ুন
- চীনের মডেলে ‘শিল্পায়নের কেন্দ্রস্থল’ হতে চায় বাংলাদেশ
- এখানে এলে প্রেসার ও জ্বর মেপে দেয়, ওষুধ দেয় না
- স্বাস্থ্যখাতে যেমন ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর
কিছু বাংলাদেশি পর্যটক অভিযোগ করেন, কিছু হাসপাতালে ক্রেডিট কার্ড নেয় না, ফলে বিল পরিশোধে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিদেশি রোগীদের জন্য আলাদা বুথ থেকে ইংরেজি অনুবাদসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র সরবরাহ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশি রোগীরা জানান, চীনারা ইংরেজি না জানায় ভাষাগত সমস্যায় পড়তে হয়। তাছাড়া বাংলাদেশিদের উপযোগী খাবারও সহজে মেলে না। তবে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আরিফিন ইসলাম জানিয়েছেন, ইংরেজি না জানার কারণে রোগীরা যেন সমস্যায় না পড়েন, সেজন্য হাসপাতালগুলোতে বাংলা, ইংরেজি ও চাইনিজ ভাষায় অনুবাদ করতে সক্ষম দোভাষীদের রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশি রোগীদের সহায়তার জন্য সেখানে কিছু দোভাষী কাজ করছে, যাদের অধিকাংশই চীনে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থী। দৈনিক আনুমানিক খরচ ১০ হাজার টাকার মতো, যার মধ্যে থাকা, খাওয়া ও অন্য সেবাগুলো অন্তর্ভুক্ত।
যাতায়াতে ফ্লাইট সংকট
বাংলাদেশি রোগীদের স্বজনরা জানান, ঢাকা থেকে কুনমিংয়ের ফ্লাইট যাত্রায় সময় মাত্র আড়াই ঘণ্টা হওয়ায় বাংলাদেশি রোগীরা সহজেই চিকিৎসার জন্য যেতে পারেন। চিকিৎসার খরচও তুলনামূলক কম। তবে ভাষা, খাবার ও যোগাযোগ সমস্যা রয়ে গেছে। এসবের সমাধান জরুরি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে সরাসরি ঢাকা-কুনমিং রুটে শুধু চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট রয়েছে। রাউন্ড ট্রিপে খরচ পড়ে প্রায় ৭০-৮০ হাজার টাকা। তবে চট্টগ্রাম-কুনমিং রুটে নতুন ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ উদ্যোগ শুধু চিকিৎসা নয়, ব্যবসায়িক সম্পর্ককেও বেগবান করবে।’
জেপিআই/এমকেআর/এমএফএ/জিকেএস