প্রধান চরিত্রে অভিনয় না করেও মনোযোগ কেড়ে নিতেন তিনি। সপ্রতিভ অভিনয়দক্ষতা ছিল তার। তিনি হাসলে দর্শক বিনোদিত হতেন, তিনি কাঁদলে সংক্রমিত হতো হৃদয়ে হৃদয়ে। সেই অভিনেতার নাম চ্যালেঞ্জার। বলা চলে অকালেই তিনি চলে গেলেন পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে। আজ এই অভিনেতার জন্মদিন। এই দিনে তাকে স্মরণ করছেন তার ভক্ত অনুরাগীরা।
তার ছোট বোন অভিনেত্রী মনিরা মিঠু। তিনিও ভাইয়ের স্মৃতিচারণ করে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা দিয়েছেন। মিঠু ফেসবুকে লেখেন, ‘অগোছালো জীবনে আপনাকে খুব বেশি মিস করি।’
ফেসবুক পোস্টে বেশ কয়েকটি ছবিও দেন মনিরা মিঠু। সঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘ভাইজান, আমার এই অগোছালো জীবনে আপনাকে খুব বেশি মিস করি। আল্লাহ যেন আপনার সমস্ত গুনাহ মাফ করে আপনাকে শান্তিতে রাখেন ।
শুভ জন্মদিন ভাইজান।’
অভিনেতা চ্যালেঞ্জার ১৯৫৯ সালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তার মেজ ভাই চাকরিজীবী এবং ছোট ভাই অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী। তার দুই বোনের একজন মনিরা মিঠু অভিনেত্রী আর আরেকজন গৃহিণী। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে যান। ছেলে ঢাকায় থাকেন। মেয়ে থাকেন অস্ট্রেলিয়া।
তার বোন অভিনেত্রী মনিরা মিঠু জানান, তার ভাইয়ের আসল নাম এ এফ এম তোফাজ্জল হোসেন। নাম পাল্টে তাকে চ্যালেঞ্জার বানিয়ে দেন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ। তারই ‘হাবলঙ্গের বাজার’ নাটকের মাধ্যমে টিভি নাটকে অভিনয় শুরু করেন অভিনেতা চ্যালেঞ্জার। হুমায়ূন আহমেদর ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’, ‘চন্দ্রকারিগর’, ‘কালা কইতর’, ‘বৃক্ষমানব’, ‘যমুনার জল দেখতে কালো’, ‘লীলাবতী’, ‘জুতা বাবা’, ‘খোয়াব নগর’, ‘চোর’, ‘পিশাচ মকবুল’সহ বহু নাটকে অভিনয় করেছেন চ্যালেঞ্জার। এর বাইরেও অনেক নির্মাতার নাটকে দেখা গেছে তাকে।
টিভি ও চলচ্চিত্র মিলিয়ে আট বছরে চ্যালেঞ্জারের কাজের সংখ্যা দুই শতাধিক। তার অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে হুমায়ুন আহমেদের ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’, ‘শ্যামল ছায়া’, আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’, তৌকির আহমেদের ‘দারুচিনি দ্বীপ’, শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘লাল সবুজ’ উল্লেখযোগ্য।
২০১০ সালের ১২ অক্টোবর মস্তিষ্কের ক্যানসারে মারা যান চ্যালেঞ্জার। মাত্র ৫১ বছর বয়সে নিভে যায় অসামান্য এক অভিনেতার জীবন প্রদীপ। মৃত্যুর পর আজও সমান জনপ্রিয় এই অভিনেতা।
এমআই/এলআইএ/এমএস