এ এক অভিনব কায়দায় চুরি। সোনাদানা, টাকাপয়সা ছেড়ে ছাগল চুরি! চোরদের কাণ্ড দেখেও অবাক সবাই। ছাগল চুরি করতে রীতিমতো চারচাকা ও বাইক নিয়ে গ্রামে হাজির হচ্ছেন তারা। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা ও মেমারিতে ছাগল চুরি করতে গিয়ে দুটি চোরের দল গ্রেফতার হয়েছে পুলিশের হাতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মেমারি থানার শান্তিডাঙা কলোনি পাড়ার বাসিন্দা গোপাল হালদারের একটি ছাগল শনিবার (২৮ জুন) সকালে বাড়ির বাইরে বাঁধা ছিল। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ির লোকজন দেখেন, তিনজন লোক একটি বাইকে চাপিয়ে ছাগলটিকে নিয়ে পালাচ্ছেন। বাড়ির লোকজন ফোন করে বিষয়টি পাশের গ্রামের লোকজনদের জানান। পাশের গ্রামের বাসিন্দারা জীবন ঠাকুর মোড়ে বাইকটিকে আটকান ও ছাগলটিকে উদ্ধার করেন। এর পর তিনজনকে আটকে রাখেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তারা ওই তিনজনকে থানায় নিয়ে যায়। পরে গোপালের অভিযোগের ভিত্তিতে চোরদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মীর মুক্ত, মনির শেখ ওরফে মনি ও নাসিরুদ্দিন সিকদার। কালনা থানার নারেঙ্গা গ্রামে তাদের বাড়ি। অভিযোগ উঠেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিডাঙা ও তার আশপাশ এলাকায় ছাগল চুরি করে আসছিলেন। রোববার (২৯ জুন) ওই তিনজনকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে পাঠানো। তবে বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে, কলকাতা থেকে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহরে ছাগল চুরি করতে এসেও ধরা পড়েছেন তিন যুবক। জানা গেছে, তারা চারচাকা গাড়িতে ঘুরতেন। শিকার ধরতে চলে যেতেন দূরদূরান্তে। এবার ছাগল চুরির অপরাধে তাদেরকে গ্রেফতার করে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মোহাম্মদ নাজহাল, মোহাম্মদ মাজহাল ও মইনুদ্দিন খান। তাদের বয়স ২৫-২৭ এর মধ্যে। বাড়ি কলকাতার গার্ডেনরিচ এলাকায়। শনিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করার পর, রোববার তাদের বর্ধমান আদালতে পাঠানো হয়। জব্দ করা হয়েছে একটি চারচাকা গাড়িও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গুসকরা শহরের ইটাচাঁদা এলাকা থেকে একটি ছাগলকে চারচাকা গাড়িতে তুলতে দেখেন স্থানীয় কয়েকজন। লোকজন কাছাকাছি আসতেই গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান তারা। ওই গাড়ির পিছন ধাওয়া করে বেশ কিছুটা দূরে তাদের ধরে ফেলেন স্থানীয়েরা। এরপর খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গাড়িসহ তিনজনকে আটক করে নিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইটাচাঁদার বাসিন্দা আলিনূর শেখ পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। জানান, ওই ছাগলের মালিক তিনিই। শনিবার (২৮ জুন) ছাগলটি রাস্তার ধারে ফাঁকা জায়গায় চরছিল। তখন ওই তিন যুবক পাউরুটির লোভ দেখিয়ে ছাগলটিকে তাদের গাড়ির কাছ পর্যন্ত ডেকে নিয়ে যান। পরে সুযোগ বুঝে ছাগলটিকে চ্যাংদোলা করে চারচাকা গাড়িতে ঢুকিয়ে পালিয়ে যান। বিষয়টি নজরে পড়ে যায় কয়েকজনের। তারপর স্থানীয়রাই তাদের ধরে ফেলেন।
প্রাথমিক জেরায় গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেন, এর আগেও তারা বহু জায়গায় ছাগল চুরি করেছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলা, হুগলিসহ বিভিন্ন এলাকায় চারচাকা গাড়িতে ঘুরে ঘুরে ছাগল চুরি করতেন তারা। ছাগল বিক্রি করে মোটা টাকা আয়ও হতো তাদের। এসব ঘটনায় আর কারা জড়িত রয়েছে, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
সূত্র: আনন্দ বাজার
এসএএইচ