ছাত্র অধিকার পরিষদের ১৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা

2 hours ago 3

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ ঘোষিত প্যানেল 'ডাকসু ফর চেঞ্জ, ভোট ফর চেঞ্জ'। ইশতেহারে মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা সমুন্নত রাখা, ডাকসুকে নিয়মিত ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্তি, রেজিস্ট্রার বিল্ডিং সংস্কারসহ শিক্ষার্থীবান্ধব বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। `নো মোর ডার্টি পলিটিক্স, নো মোর ভায়োলেন্স': 'মেক দ্যা ডাকসু ফর একাডেমিক এক্সিলেন্স'-স্লোগানকে সামনে রেখে জোটের ভিপি প্রার্থী বিন ইয়ামিন মোল্যা ‌এ ইশতেহার পাঠ করেন।

এ সময় এই জোটের ভিপি প্রার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লা, জিএস (সাধারণ সম্পাদক) প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন ও এজিএস (সহ-সাধারণ সম্পাদক) প্রার্থী রকিবুল ইসলামসহ প্যানেলের অন্য পদের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জোটের ভিপি প্রার্থী বিন ইয়ামিন মোল্যা ‌বলেন, আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দখলদারিত্ব আর আধিপত্য বাদের রাজনীতি ফিরে আসতে দেব না।

ছাত্র অধিকার পরিষদের ১৪ দফা ইশতেহারগুলো হলো

১. ডাকসুকে নিয়মিত ক্যালেন্ডার ইভেন্টে পরিণত করা। ডাকসু চলমান থাকতেই পরবর্তী ডাকসুর প্রস্তুতি সম্পন্ন করা।

২. শিক্ষার্থীদের দাবি One student, One bed, one table এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করা। অনতিবিলম্বে প্রথম বর্ষ ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা করা, তার আগ পর্যন্ত মেধা ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে আবাসিক বৃত্তির ব্যবস্থা করা।

৩. খাবারের মান উন্নত করা, প্রয়োজনে এক্ষেত্রে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা।

৪. ‌ফুল ফ্রি স্কলারশিপ ফর এভরি স্টুডেন্ট-লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করা। অনতিবিলম্বে, মেধা ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে পার্ট টাইম জব ও ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের জন্য আউটসোর্সিং চাকরির ব্যবস্থা করা

৫. বিদ্যমান গবেষণা কেন্দ্রগুলোকে আরো উন্নত ও আধুনিক করে বিশ্বমানের গবেষণা কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা।

৬. আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন পর্যাপ্ত লাইব্রেরির ব্যবস্থা করা, শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবস্থা চালু করা।

৭. রেজিস্ট্রার বিল্ডিং সংস্কার করা, ভর্তি, সার্টিফিকেট উত্তোলনসহ সব প্রক্রিয়া অটোমেশন ও ওয়ান স্টপ সার্ভিসের আওতায় নিয়ে আসা।

৮. অ্যাকাডেমিয়া ইন্ডাস্ট্রিয়া রিলেশন স্থাপন করা। দেশ ও বিশ্বের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে হিউম্যান রিসোর্স তৈরি করা।

৯. বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ ও যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ। নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া। বিশেষ করে সুফিয়া কামাল হল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, কুয়েত মৈত্রী হল ক্যাম্পাস এরিয়ার বাইরে হওয়ায় তাদের নিরাপত্তা ও সহজ যাতায়াতের ব্যবস্থা করা।

১০. বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্টেশন সংকট সমাধান করা, নিরাপত্তা ও কোন বাস কোথায় আছে তা জানার জন্য বাসগুলোতে ট্র্যাকার সিস্টেম চালু করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে চলাচলের জন্য পরিবেশ বান্ধব ইলেকট্রিক শাটল সংখ্যা বৃদ্ধি করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে চলাচলের জন্য বিশেষায়িত রিকশার ব্যবস্থা করা। প্রতিটি রুটে পর্যাপ্ত বাস ট্রিপ নিশ্চিত করা, ছুটির দিন পরীক্ষা থাকলে পর্যাপ্ত বাসের ব্যবস্থা করা এবং প্রতিটা রুটের জন্য রাত ৮টায় সর্বশেষ বাস রাখতে হবে।

১১. গোলাম মুর্তজা মেডিকেল সেন্টারে আধুনিক সেবা নিশ্চিত করা ও হল এলাকায় ফার্মেসি স্থাপন করা।

১২. বিশ্ববিদ্যালয়ের সব স্থাপনার টেম্পার টেস্ট করা এবং হল ও একাডেমিক ভবনসহ ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনা সংস্কার করা, পুকুরগুলো সংস্কার করা।

১৩. টিএসসিভিত্তিক ও এর বাইরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব ক্রিয়াশীল সংগঠন রয়েছে তাদের সঙ্গে আরো বেশি কো-অপোরেশন ও ডেভেলপমেন্ট ফাংশন করা।

১৪. ক্যাম্পাসে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ সমুন্নত রাখা। ক্রীড়া, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি চর্চার ভেতর দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত রাখা।

এফএআর/এমএমকে/এমএস

Read Entire Article