• সহসা হচ্ছে না ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি
• পদপ্রত্যাশীদের দৃষ্টি তারেক রহমানের দিকে
আগামী ঈদুল আজহার আগেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় আংশিক কমিটির কলেবর বাড়ানো হচ্ছে। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি কবে হবে তা অনিশ্চিত। ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা তাকিয়ে রয়েছেন তাদের সাংগঠনিক অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে।
ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, যত দ্রুত সম্ভব কমিটি ঘোষণা হবে। গত বছরের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে যারা আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন তাদের প্রতি সংগঠনের উদার দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে।
গত ১ মার্চ রাকিবুল ইসলামকে সভাপতি ও নাছির উদ্দীন নাছিরকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়াকে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি, শ্যামল মালুমকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আমানউল্লাহ আমানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, মো. জাহাঙ্গীর আলমকে দপ্তর সম্পাদক এবং শরিফ প্রধান শুভকে প্রচার সম্পাদক করা হয়।
ছাত্রদল সূত্র জানায়, চলতি মাসের শেষে বা আগামী মাসের প্রথমে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় আংশিক কমিটি ঘোষণা হবে। এবারের কমিটিতে ১৫ থেকে ২০ জন নারী জায়গা পাবেন। পরে দ্বিতীয় ধাপে আরও কিছু মুখ যুক্ত হয়ে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি হতে পারে। তবে দ্বিতীয় ধাপ কবে নাগাদ হবে তা নিয়ে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। বর্ধিত আংশিক কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রাধান্য পেতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
ছাত্রদলের ইডেন মহিলা কলেজ শাখার আহ্বায়ক রেহানা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, যারা আন্দোলন সংগ্রামে ছিল, বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের পর থেকে যারা সক্রিয় ছিল, তারা সামনের কেন্দ্রীয় আংশিক কমিটিতে পদ-পদবি পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তাদের মধ্যে আমিও একজন। আমি দলের জন্য রাজপথে যতটুকু কাজ করছি, তার ভিত্তিতে দল আমাকে যেখানে মনে করে বা আমার যে সেশন আছে, তার ভিত্তিতে দল আমাকে ভালো জায়গায় রাখবে বলে বিশ্বাস করি।’
ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ বি এম ইজাজুল কবির রুয়েল জাগো নিউজকে বলেন, ‘জানতে পেরেছি, শিগগির আমাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে। যারা মেধা-মননে সংগঠনকে একটা উচ্চতায় নিয়ে এসেছে, ভবিষ্যতে নিয়ে যেতে পারবেন এবং ত্যাগী, পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে এটাই আমার প্রত্যাশা।’
নতুন কমিটিতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান- জানতে চাইলে রুয়েল বলেন, ‘আন্দোলন সংগ্রামে আমার ত্যাগ-তিতীক্ষা বিশ্লেষণ করে আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমান যেখানে রাখবেন, সেটাই মাথা পেতে নেব। তারেক রহমানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ছাত্রদল পরিচালিত হয়। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সেটা বরণ করে নেন।’
আরও পড়ুন
- বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চালু চায় ছাত্রলীগ, কী বলছে ছাত্রদল?
- ছাত্রদল কখনো বিএনপির কমান্ডে পরিচালিত হয় না
- বর্ষায় সারাদেশে বৃক্ষরোপণ করবে ছাত্রদল
ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক হায়াত মাহমুদ জুয়েল জাগো নিউজকে বলেন, ‘নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে দল আমাকে যেখানে রাখতে চায়, আমি চেষ্টা করব দলের প্রত্যাশা পূরণ করতে। কমিটিতে থাকলেও জাতীয়তাবাদী শক্তির জন্য কাজ করব, না রাখলেও করব। আমরা জিয়ার সৈনিকরা কখনো পদের জন্য রাজনীতি করি না। দেশ এবং জনগণের অধিকারের জন্যই রাজনীতি করা আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’
হায়াত মাহমুদ জুয়েল বলেন, ‘খুব শিগগির কেন্দ্রীয় কমিটির কলেবর বাড়বে। জুন মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে কমিটি ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতারা খুবই আন্তরিক এবং ভিশনারি। আগের আন্দোলন-সংগ্রাম, সাংগঠনিক দক্ষতা, মেধা ও পরিশ্রম মূল্যায়নের মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রস্তুত করা হচ্ছে।’
যোগাযোগ করা হলে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে যারা ছিলেন বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের পরবর্তীসময়ে যাদের শ্রম ও ত্যাগ রয়েছে তাদের মূল্যায়ন করার বিষয়ে ছাত্রদলের অভিভাবক তারেক রহমানের নির্দেশনা রয়েছে। আমরাও সেভাবে কাজ করছি।’
‘যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করেছেন, আগামীতে পাশে থাকবেন, তাদের মূল্যায়ন করা হবে। যারা আন্দোলনের সময় ছিলেন না, তাদের কোনোভাবেই বিবেচনা করা হবে না। পদপ্রত্যাশীদের ব্যাপারে এখন যাচাই-বাছাই চলছে, সবার মতামত নেওয়া হচ্ছে। শিগগির কমিটি আসবে।’ যোগ করেন নাছির।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিগগির আমাদের কেন্দ্রীয় আংশিক কমিটি ঘোষণা হবে। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।’ নেতৃত্ব তৈরির ক্রাইটেরিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে রাকিব বলেন, ‘একটা ক্রাইটেরিয়ার ওপর ভিত্তি করে নেতৃত্ব বাছাই করা সম্ভব হয় না। নানা ইকুয়েশন রয়েছে। তবে ২৮ অক্টোবরের পর থেকে যারা আন্দোলন সংগ্রামে রয়েছেন এবং অতীতেও ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন তাদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’
কেএইচ/এমএমএআর/জিকেএস