ছুটি না দিয়ে গালাগাল, নারী শ্রমিকের আত্মহত্যা

1 month ago 24
গাজীপুরের টঙ্গির দত্তপাড়া আলম মার্কেট এলাকা থেকে এক নারী পোশাক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) তাকে উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের ৩ জনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন- ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন, লিখন ও সাকিব। নিহতের নাম মোছা. নৈশি আক্তার (১২)। সে নান্দাইল থানার ময়মনসিংহের মো. নুরুল ইসলামের মেয়ে। বর্তমানে আলম মার্কেট সংলগ্ন জনৈক বাদল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।  জানা যায়, টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকার কমপ্লায়েন্স ফ্যাশন কারখানায় হেলপার হিসেবে কাজ করতো নৈশি আক্তার। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় কারখানায় প্রবেশ করে সে। এরপর সে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চায়। একপর্যায় কর্তৃপক্ষ তাকে ছুটি না দেওয়ায় রাগ করে কারখানা থেকে বের হয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে বাসায় গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। পরে নৈশি আক্তারের নানি তাকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে রুমের ভেতর গিয়ে দেখতে পান, ওড়না দিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলে আছে সে। এসময় তার নানির চিৎকারে আশেপাশের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে নিহত নৈশি আক্তারের বাবা কালবেলাকে জানান, তার মেয়েকে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়তই শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন ও গালাগাল করতো। সেই নির্যাতন সইতে না পেরেই আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ছাড়া আমার মেয়ে কারখানার ভেতর থেকে কীভাবে বের হয়ে আসলো? আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।  তিনি আরও জানান, দুপুরে একটি অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে এসআই উৎপল। তখনো তিনি জানতেন না যে, এটি হত্যা মামলা না হয়ে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।  পরে কালবেলার  তবে ওই কোম্পানির ইনচার্জ মাসুম প্রায় সময়ই তাকে গালাগাল ও শারীরিক নির্যাতনের চেষ্টা করতো বলে মেয়ের বাবা অভিযোগ করেন। আগামীকাল শুক্রবার  দুপুরে তিনি টঙ্গি পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন। এ প্রতিবেদক রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানে গেলে, প্রতিষ্ঠানের দুই মালিক লিখন ও শাকিলের কথা সন্দেহজনক বলে মনে হয় এবং তারা অকপটে স্বীকার করেন যে ওই নারী শ্রমিক ছুটি চেয়েছিল কিন্তু ছুটি না দেওয়ায় সে বাড়িতে গিয়ে আত্মহত্যা করেছে।  খবর পেয়ে টঙ্গি পূর্ব থানার এসআই উৎপল কুমার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। এ বিষয়ে টঙ্গি পূর্ব থানার ওসি কায়সার আহমেদ কালবেলাকে বলেন, এ ঘটনায় ৩ মালিককে আটক করা হয়েছে। মূল রহস্য উদঘাটন করে প্রয়োজনে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Read Entire Article