ছয় মাসে ৩২ দুর্ঘটনা, প্রাণ গেছে ৩ জনের

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জাহাজভাঙাশিল্পে দুর্ঘটনা যেন নিত্যসঙ্গীতে হিসেবে রূপ নিয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে ছয় মাসে অন্তত ৩২টি দুর্ঘটনায় তিন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪২ জন। বেশির ভাগ দুর্ঘটনাই ঘটেছে ভারী লোহার আঘাত, বিস্ফোরণ কিংবা অপ্রতুল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে।  বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজে (বিলস) প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই চিত্র।  বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলায় বেসরকারি সংস্থা ইপসার কার্যালয়ে স্থানীয় অংশীজনদের সামনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শেষ ছয় মাসে সীতাকুণ্ডের জাহাজভাঙা কারখানাগুলোয় ৩২টি দুর্ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এতে তিনজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন ১৮ জন এবং ২১ জন তুলনামূলক কম। বিলসের তথ্যমতে, আহত শ্রমিকদের মধ্যে অন্তত ১১ জনের হাত বা আঙুল কেটে ফেলতে হয়েছে বা থ্যাঁতলে গেছে। ১৩ জনের পা বাঁ- পায়ের হাড় ভেঙেছে অথবা দগ্ধ হয়েছেন। মাথায় আঘাত পেয়েছেন ১০ জন শ্রমিক এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন আরও চারজন। দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩২টি দুর্ঘট

ছয় মাসে ৩২ দুর্ঘটনা, প্রাণ গেছে ৩ জনের

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জাহাজভাঙাশিল্পে দুর্ঘটনা যেন নিত্যসঙ্গীতে হিসেবে রূপ নিয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে ছয় মাসে অন্তত ৩২টি দুর্ঘটনায় তিন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪২ জন। বেশির ভাগ দুর্ঘটনাই ঘটেছে ভারী লোহার আঘাত, বিস্ফোরণ কিংবা অপ্রতুল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে। 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজে (বিলস) প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই চিত্র। 

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলায় বেসরকারি সংস্থা ইপসার কার্যালয়ে স্থানীয় অংশীজনদের সামনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শেষ ছয় মাসে সীতাকুণ্ডের জাহাজভাঙা কারখানাগুলোয় ৩২টি দুর্ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এতে তিনজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন ১৮ জন এবং ২১ জন তুলনামূলক কম।

বিলসের তথ্যমতে, আহত শ্রমিকদের মধ্যে অন্তত ১১ জনের হাত বা আঙুল কেটে ফেলতে হয়েছে বা থ্যাঁতলে গেছে। ১৩ জনের পা বাঁ- পায়ের হাড় ভেঙেছে অথবা দগ্ধ হয়েছেন। মাথায় আঘাত পেয়েছেন ১০ জন শ্রমিক এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন আরও চারজন।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩২টি দুর্ঘটনার মধ্যে ভারী লোহার আঘাতে ঘটেছে ১৩টি। বিস্ফোরণ বা আগুনে দগ্ধ হওয়ার ঘটনা ১০টি। ভারী যন্ত্রপাতির আঘাতে ছয়টি এবং জাহাজের উঁচু অংশ থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ৩টি।

সময়ভেদে দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার প্রায় ৭৫ শতাংশ ঘটেছে দিনের বেলায়। বাকি ২৫ শতাংশ ঘটেছে রাতে। তবে নিহত তিন শ্রমিকের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে রাতের শিফটে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দিনে কাজের চাপ বেশি থাকায় দুর্ঘটনার সংখ্যাও বেশি হয়। আর রাতে তদারকি দুর্বল থাকায় এবং জরুরি চিকিৎসা সুবিধা সীমিত থাকায় ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত। সঞ্চালনা করেন বিলস-ডিটিডিএ প্রকল্পের সেন্টার কো-অর্ডিনেটর ফজলুল কবির মিন্টু।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম, ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন, বিএমএফএর যুগ্ম সম্পাদক মো. আলী, বিএমএসএফের যুগ্ম সম্পাদক মো. ইদ্রিস এবং জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের কেন্দ্রীর সভাপতি মানিক মণ্ডল।

এ ছাড়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা তজাম্মল হোসেন, উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা লুতফুন্নেছা বেগম, সাংবাদিক সৌমিত্র চক্রবর্তী প্রমুখ তাদের মতামত তুলে ধরেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow