সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী সন্ত্রাসী কিংবা মানুষের স্বার্থ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে জাতীয়তাবাদী যুবদল। সংগঠনের এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি ।
নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, জাতীয়তাবাদী যুব দল স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চায় যে, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সংগঠনের নাম ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ড চালানোর সুযোগ পাবে না। ভবিষ্যতে যাতে কেউ সংগঠনের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে না পারে, সে জন্য যুবদল কঠোর নীতি গ্রহণ করবে। জাতীয়তাবাদী যুব দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে যেকোনো ওয়ার্ডের কর্মী পর্যন্ত প্রত্যেকের কাছে একটি আমরা বার্তা আমরা পৌঁছে দিতে চাই, জাতীয়তাবাদী যুব দলের কোনো নেতাকর্মী যদি কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কিংবা দেশবিরোধী বা মানুষের স্বার্থ পরিপন্থি কোনো কাজে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে দল কিন্তু তাদের কোনো ছাড় দেবে না।
তিনি বলেন, আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমান দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এটা ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন, আমরা এই বার্তাটি গণমাধ্যমের মাধ্যমে যুব দলের সকল নেতাকর্মীর কাছে পৌঁছে দিতে চাই।
সংগঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যুবদল সব সময় সুশৃঙ্খল ও আদর্শিক রাজনৈতিক চর্চায় বিশ্বাসী এবং কোনো রকমের বেআইনি, অনৈতিক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ প্রশ্রয় দেয় না। সংগঠনের আদর্শ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির কর্তৃক ইতিমধ্যে সারা দেশে প্রায় ৬০ জনের মতো যুবদল নেতাকে শোকজ এবং প্রায় ১৪০ জনের মতো নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এমনকি অপরাধীদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট জড়িত থাকার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। সংগঠনের অভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা থাকায় তাকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমাদের অবস্থান এখানে সীমাবদ্ধ নয়। যুবদলের পক্ষ থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে গতকাল (রোববার) তার বিরুদ্ধে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় ফৌজদারি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
নয়ন বলেন, অতীতে আমরা লক্ষ করেছি দলের কোনো নেতাকর্মী যদি অন্যায় করত, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ত তাহলে যেসব দল সন্ত্রাসীদের আড়াল করার জন্য, অস্বীকার করার জন্য এক ধরনের সংস্কৃতি তৈরি করেছিল। অর্থাৎ কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে অস্বীকার করা, অন্যায়কে অস্বীকার করা। প্রকারান্তে অন্যায় ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেওয়া হতো।
কিন্তু আমরা বলতে চাই, ইতিমধ্যে আমরা যে কয়টি অন্যায়ের খবর পেয়েছি যেখানে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিল। আমরা কিন্তু কোথাও অস্বীকার করি নাই, আমরা তাদের শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছ। কোথাও শোকজ করেছি, কোথাও তাদেরকে আমরা বহিষ্কার করেছি, কোথাও আমরা কমিটি বিলুপ্ত করেছি। সর্বশেষ মনে হয়েছে তাকে (জাহাঙ্গীর আলম) শুধু দল থেকে বহিষ্কার যথেষ্ট নয় এই কারণে আমরা গতকাল তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছি, তাকে গ্রেপ্তারের জন্য দাবি জানিয়েছি এবং গ্রেপ্তারের পরে তার বিরুদ্ধে যাতে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ইতিমধ্যে আহ্বান জানিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল করিম পল, প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেক, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল এবং দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল উপস্থিত ছিলেন।