জনরায়ের অপেক্ষায় কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

4 hours ago 6

দিনভর নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর ২০২৪) সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন সে দেশের নাগরিকেরা। এদিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে এমনটি দেখা গেছে। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। বিভিন্ন জরিপ অনুযায়ী ভোটগ্রহণ শেষ হলেও জনরায়ের চূড়ান্ত ফলাফল পেতে অপেক্ষা করতে হবে কমলা-ট্রাম্পসহ পুরো বিশ্ববাসীকে।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোরে ঘড়ির কাটা ৬টার ঘরে যেতেই বিভিন্ন রাজ্যে ভোটগ্রহণ শুরু করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে সব রাজ্যে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। একেক অঙ্গরাজ্যে স্থানীয় সময় অনুযায়ী ভোটগ্রহণ চলে এবং শেষ হয়। ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন। বিভিন্ন কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। কেন্দ্রের বাইরে প্রার্থীদের সমর্থকরা সাধারণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করেছেন। 

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখতে সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিছু রাজ্যে মোতায়েন করা হয় স্নাইপার ইউনিট। ভোটগ্রহণ শেষে এখন সবার কৌতূহল কে হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট? প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা কার কী অবস্থা?

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলমান ও বাংলাদেশিরা বরাবরের মতোই এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তাদের বেশিরভাগই অর্থনৈতিক বিবেচনায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট করার পক্ষে। অন্যদিকে গণতান্ত্রিক বিবেচনায় কমলা হ্যারিসের পক্ষে।

এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আরও চার জন প্রার্থীর নাম ব্যালটে রয়েছে। তারা হলেন- গ্রিন পার্টির জিল স্টেইন, স্বতন্ত্র কর্নেল ওয়েস্ট, লিবার্টারিয়ান পার্টির চেজ অলিভার এবং রবার্ট কেনেডি জুনিয়র। তাদের মধ্যে গত আগস্ট মাসে রবার্ট কেনেডি জুনিয়র ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। তবে কয়েকটি অঙ্গরাজ্য তার নাম ব্যালট থেকে সরাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। 

ভয়েস অব আমেরিকাসহ বিভিন্ন সূত্রের মতে, নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণায় কয়েকদিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। যেহেতু বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ব্যালট গণনা ও চিঠির মাধ্যমে আসা ভোট গণনা করার প্রয়োজন হবে, তাই এসব অঙ্গরাজ্যে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ বেশ সময়সাপেক্ষ। জানা যায়, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে বেশ কয়েকদিন সময় লেগেছিল। এবারও এমনটা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অর্থাৎ মার্কিন নতুন প্রেসিডেন্ট ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে বিজয়ীদের নাম জানতে কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সর্বমোট ইলেকটোরাল ভোট ৫৩৮টি। হোয়াইট হাউসে যেতে প্রয়োজন ২৭০টির। মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ শেষে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের হিসেব-নিকেশ। রিপাবলিকানরা ২১৯ (রেড স্টেট) এবং ডেমোক্র্যাটদের ২২৬টি (ব্লু স্টেট) ইলেকটোরাল ভোট প্রায় নিশ্চিত ধরা যায়। 

ক্ষমতার মসনদে যেতে-একটি সহজ হিসাব- 
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরও প্রয়োজন ৫১টি ইলেকটোরাল ভোট। কমলা হ্যারিসকে পেতে হবে আরও ৪৪টি ইলেকটোরাল ভোট। তবে সুইং স্টেটের ৯৩টি ইলেকটোরাল ভোটেই নির্ধারিত হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়-পরাজয়। সুইং স্টেটগুলো হচ্ছে- অ্যারিজোনা (১১ ভোট ), জর্জিয়া (১৬ ভোট), মিশিগান (১৫ ভোট), নেভাদা (৬ ভোট), নর্থ ক্যারোলিনা (১৬ ভোট), পেনসিলভেনিয়া (১৯ ভোট) এবং উইসকনসিন (১০ ভোট)।  এই সাতটি অঙ্গরাজ্যকে একত্রে সুইং স্টেট বলা হয়। সেক্ষেত্রে সুইং স্টেট পেনসেলভেনিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা এবং জর্জিয়া জিতলেই লক্ষ্য অর্জন করবেন ট্রাম্প।

অন্যদিকে সুইং স্টেট মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া এবং উইসকনসিন জিতলেই লক্ষ্যে পৌঁছবেন কমলা হ্যারিস। সর্বশেষ জরিপগুলো বলছে- সুইং স্টেটগুলোতে ভালোই সাড়া পাচ্ছেন ট্রাম্প। 

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি আমেরিকানরা বলছেন- বিশ্বের শক্তিশালী দেশ আমেরিকার আড়াইশত বছরের ইতিহাসে নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার নজির নেই। কমলা হ্যারিসের আগে ২৪ জন নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছিলেন। কেউই সফল হতে পারেননি। তাই নানা প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে ইতিহাস রচনা করতে বেশ বেগ পোহাতেই হবে ম্যাডাম কমলা হ্যারিসকে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বুথফেরত জরিপের প্রথম দফার ফলাফলে দেখা গেছে, ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ভোটাররা গণতন্ত্রের অবস্থাকে প্রথম বিষয় হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছেন।

জরিপে মতামত দেওয়া মোট ভোটারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বলেছেন, গণতন্ত্রই তাদের কাছে প্রধান বিবেচ্য। এরপর এসেছে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা। প্রতি ১০ জন ভোটারের মধ্যে ৩ জন অর্থনীতির কথা বলেছেন। এরপর গর্ভপাত ও অভিবাসনের প্রসঙ্গ এসেছে। সবচেয়ে কম ভোটার বলেছেন পররাষ্ট্রনীতির কথা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের মধ্যে চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। বাংলাদেশি স্টাইলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। অন্যান্য বছরের মতো এবারও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসারত বাংলাদেশিরা ঘরে বসে নেই। যারা সরাসরি মুলধারারা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত তারা প্রকাশ্যেই মাঠে নেমে কেউ কমলা হ্যারিস আবার কেউ ডোনাল্ট ট্রাম্পের জন্য প্রকাশ্যেই নির্বাচনী প্রচারণা চালান। ইতোমধ্যে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে কমলা ও ট্রাম্প সমর্থকদের নির্বাচনী সভা এবং ব্যানারযুক্ত গাড়ি প্রদর্শনও করেছেন প্রবাসীরা।

কমলা ও ট্রাম্প প্রবাসীরা কে কাকে ভোট দেবেন এতদিন তা গোপনেই ছিল। কিন্তু বেশি করে স্পষ্ট হয়েছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে এমন দাবি করে গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্স (টুইটার)-এ পোস্টটি করেন ট্রাম্প। বাংলাদেশের কঠোর সমালোচনা করে ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বর হামলার কড়া নিন্দা জানাচ্ছি। যারা উচ্ছৃঙ্খল জনতার দ্বারা হামলা ও লুটের শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। তার এ মন্তব্যের পর প্রবাসের আওয়ামী লীগপন্থিরা প্রকাশ্যেই ডোনাল্ট ট্রাম্পকে সমর্থন জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন প্রেসিডেন্ট হয়ে ক্ষমতার এলে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেকায়দায় পড়বে। অপরদিকে বিএনপিপন্থি বেশিরভাগ প্রবাসী কমলা হ্যারিসকে সমর্থন জানিয়েছেন।

২০০০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাস করছেন ২ লাখ ৭৭ হাজার। যা আমেরিকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ০.৫ শতাংশ। অবৈধ অভিবাসীদের বাদ দিলেও গত ১৪ বছরে বৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দেড় গুণ। এ ছাড়াও প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক অবৈধ অভিবাসী রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।  

গত নির্বাচনে আমেরিকায় বসবাসরত অন্যান্য জাতিগুলোর তুলনায় বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সর্বাধিক ৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। একটি সমীক্ষা অনুসারে, ৯০ শতাংশ বাংলাদেশি-আমেরিকান ভোটার এবারের নির্বাচনে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। ২০২৪ সালের এই নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশি-আমেরিকানদের। তারা রাজ্যগুলোর নির্বাচনে বিজয়ের ব্যবধানকে প্রভাবিত করতে পারে। তাদের অর্ধেকেরও বেশি (৪৫ শতাংশ) ডেমোক্র্যাটদের প্রতি ঝুঁকেছেন। 

অন্যদিকে, ৩৫ শতাংশ বাংলাদেশি-আমেরিকান রিপাবলিকান সমর্থক। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশিদের মধ্যে রিপাবলিকান সমর্থক কম থাকার শীর্ষ ৫টি কারণ হলো- গর্ভপাত ইস্যু, সংখ্যালঘুদের অসহিষ্ণুতার উপলব্ধি, খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারের প্রতি আনুগত্য, অর্থনৈতিক নীতি ও বন্দুক বহন আইন। তবে অধিকাংশ প্রবাসী বাংলাদেশিদের মতামত অভিবাসন নীতি, অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে প্রার্থীদর অবস্থান রয়েছে তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করা দরকার।

বিগত নির্বাচনে দেখা গেছে, অভিবাসী সমাজের জন্য যেসব প্রার্থী ইতিবাচক নীতি এবং সহায়ক নীতি প্রয়োগ করেছেন, তারা আমেরিকান-বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সমর্থন পেয়েছেন। এইবারে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিবাসন নীতি কেমন, তাদের অর্থনৈতিক পরিকল্পনাগুলো আমেরিকান-বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়ক কি না, তা মূল্যায়ন করা জরুরি। এ ছাড়াও বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্কের উন্নতি ঘটানোর বিষয়ে প্রার্থীরা কী পরিকল্পনা করেছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। 

এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নিউইয়র্কের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টন কালবেলাকে বলেন, পুরো বিশ্ববাসীর নজর এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামল মানুষ দেখেছে। সুতরাং এবারের নির্বাচনে নানা সমালোচনা থাকলেও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেবেন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ। এখন চূড়ান্ত ফলাফল পেতে অপেক্ষা করতে হবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য সদস্য ও আমেরিকান বাংলাদেশি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গিয়াস আহমেদ কালবেলাকে বলেন, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আর ২০২৪ সালের নির্বাচনে কিছু পার্থক্য আছে। গতবার আমি রিপাবলিকন হওয়া সত্ত্বেও ট্রাম্পকে ভোট দেইনি। এবার গাজা নীতি, লেবানন ইস্যুতে দুই পার্টির কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু এই দুটি ইস্যুর কারণে কমালা হ্যারিস বেশ কিছু মুসলিম ভোট হারাবেন। এমনকি নতুন এবং তরুণ ভোটারদেরও। তবে কিছু তরুণ-তরুণী ভোট দেওয়া থেকেই বিরত থাকবে বলে জানিয়েছে। 

তিনি আরেকটি প্রসঙ্গ তুলে বলেন, এবারের নির্বাচনে থার্ড পার্টি অর্থাৎ গ্রিন পার্টি বড় ফ্যাক্টর। থার্ড পাটির প্রার্থীর জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু গ্রিন পার্টি প্রার্থী জিল স্টাইন বেশি ভোট কাটবেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসের। ফলে সুইং স্টেটগুলোতে মুসলমানদের ভোট ভাগ হয়ে যাবে। তাছাড়া আমেরিকার লিবারেল ইউনিভার্সিটির মুসলিম শিক্ষার্থীরা গাজা ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ইসরাইলের পক্ষ নেওয়ায় সেখানেও কমালা হ্যারিস ভোট হারাবেন। 

গিয়াস আহমেদ মুসলিম ভোটারদের হিসাব নিকাশ করে বলেন, এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা বেশি। কারণ মুসলিম ভোটের বিষয় প্রধান কারণ।

মূলধারার রাজনীতিবিদ ও নিউ ইয়র্ক প্রবাসী ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন বাদল কালবেলাকে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের নতুন রাষ্ট্রপতি চাই যিনি ভালো অর্থনৈতিক সাহায্য করতে পারেন। যিনি আমাদের আমেরিকান সীমান্তকে নিরাপদ করতে পারেন। এ ছাড়াও আমাদের সারা বিশ্বে ভালো ফরেন পলিসি ও গণতন্ত্র দরকার। তিনি মনে করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প সঠিক ব্যক্তি হবেন তিনি আমেরিকাকে মহান করে তুলবেন। পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হবেন ট্রাম্প বলে মন্তব্য করেন বাদল।

আরও কয়েকজন বাংলাদেশি আমেরিকান বলেন, যদি আমরা সবকিছু বিবেচনা করি তবে অবশ্যই ট্রাম্পকেকে ভোট দিব। কারণ আমরা কোনো যুদ্ধ চাই না, ৬০,০০০ নিরীহ মসুলমান এই কমলা এবং বাইডেন অলরেডি মেরে ফেলেছে। তাদের হাত মুসলমানের রক্তে ভরা। মসুলমান হয়ে তাদের ভোট দিলে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি হয়ে যাবে। আমরা আমেরিকার নাগরিক আজ আমাদের সবকিছুতেই ট্যাক্স বেড়েছে বাইডেন- কমলার আমলে। আমরা যুদ্ধ বন্ধ করতে, জিনিসপত্রের দাম কমাতে ১৫ মিলিয়ন অবৈধ প্রবাসী চলে এসে আমাদের জনজীবন অতিষ্ঠ। সব কিছু একমাত্র ট্রাম্প ঠিক করতে পারবেন। তাই এবার প্রচুর বাংলাদেশি আমেরিকান ট্রাম্পকেই ভোট দিবেন।

তবে অন্য কয়েকজন বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় নিরীহ মুসলমানদের গণহত্যার জন্য বাইডেন-কমলার ওপর রাগ করে ট্রাম্পকে জয়ী করবেন না, যাতে পশ্চিম তীর এবং গাজা ট্রাম্প ইসরায়েলকে দিয়ে দেয়। আপনারা ভুলে যাবেন না ২০১৬ সালে ট্রাম্প জেরুজালেমে একটি ইসরায়েলি দূতাবাস করে দিয়েছিল। এইবার হয়তোবা পুরো ফিলিস্তিন দিয়ে দেবে। 

নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে ‘ভবানী মা মন্দির’ ভোটকেন্দ্রে লাইনম্যান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাঙালি মো. নূর নবী। তিনি বলেন, যতটুকু জেনেছি বাংলাদেশি এবং মুসলমানরা নানা কারণে ট্রাম্পকে পছন্দ না করলেও প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাকেই বেছে নেবেন। সেক্ষেত্রে এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাঙালির ভোট কমলা হ্যারিসের বাক্সে অনেকটাই কম। 

সার্বিক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রামিংহাম স্টেট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. জাহেদ আরমান কালবেলাকে বলেন, এই নির্বাচনে নারীদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ কমলা হ্যারিসকে ভোট দিয়েছেন বলে আশা করা যাচ্ছে। কারণ, গর্ভপাত ইস্যুতে হ্যারিসের অবস্থানের কারণে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে হ্যারিস নারীদের ভোট বেশি পেতে পারেন এবং সেটা তাকে এগিয়ে রাখতে পারে। অন্যদিকে ট্রাম্প কয়েকটা সুইং স্টেট পুনরুদ্ধার করতে পারেন। তবে শেষ পর্যন্ত কে জিতে তা জানতে আরও সময় লাগবে।

Read Entire Article