পুরান ঢাকার সদরঘাটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত দেড়টার দিকে কোতোয়ালি জোনের এসি ফজলুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, যৌথবাহিনীর অভিযানে কিরণ নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। রাজনৈতিক পরিচয় জানা গেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো কিছু জানা যায়নি।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সদরঘাটের ১ নম্বর টার্মিনালে জবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুন্দরবন-১২ লঞ্চের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল কলেজ এবং সোহরাওয়ার্দী কলেজের অন্তত ৯ শিক্ষার্থী আহত হন।
ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা লঞ্চটি ঘেরাও করে ভাঙচুর করেন। এতে ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাবিল বরিশালগামী সুন্দরবন-১২ লঞ্চে উঠলে লঞ্চকর্মীরা তাকে জোর করে কেবিন ভাড়া নিতে বাধ্য করতে চান। নাবিল তা প্রত্যাখ্যান করলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে কয়েকজন স্টাফ মিলে তাকে মারধর করেন। খবর পেয়ে তার সহপাঠী ও বড় ভাইয়েরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন—নাবিল (ফিন্যান্স, ১৮তম ব্যাচ), শের আলী (আইএমএল, ১৮তম ব্যাচ), ব্রজ গোপাল রায় (সংগীত বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), জিলন (এমসিজে, ১৮তম ব্যাচ), ইমরোজ সিদ্দিক (আইন, ১৯তম ব্যাচ), আনিছ (থিয়েটার, ১৯তম ব্যাচ), টিঙ্কু (ফিলোসফি, ১৮তম ব্যাচ), মাকসুদুল হক (ইসলামিক স্টাডিজ, ১৪তম ব্যাচ), রিহাব (কবি নজরুল কলেজ) এবং মুজাহিদ (সোহরাওয়ার্দী কলেজ)। আহতদের সুমনা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় সদরঘাটের ইজারাদার ও দক্ষিণাঞ্চল শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়ার অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, সুমনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কিরণের নেতৃত্বে আজিজুল, রমজান, আনিছ, রফিক, কাদের, রাব্বি ও সাগরসহ কয়েকজন লঞ্চকর্মী হামলায় অংশ নেন। পরে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সুন্দরবন-১২ লঞ্চ ঘেরাও করে ভাঙচুর চালান। এতে লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. তাজাম্মুল হক বলেন, সদরঘাটের ঘটনা সম্পর্কে জানার পর ঘটনাস্থলে আসি। সবকিছু বিবেচনা করে শিক্ষার্থীরা পাঁচ দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবি মানা শর্তে এ ঘটনার সুরাহা হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- কিরণ ও তার সহযোগীদের দ্রুত সময়ে গ্রেফতার করতে হবে; সিসিটিভি ফুটেজ চেক; ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ফিরিয়ে দেওয়া এবং সাধারণ মানুষদের হয়রানি বন্ধ ও কুলিদের অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ করতে হবে।
টিএইচকিউ/এমকেআর/জিকেএস