জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব পাশে শিক্ষার্থীদের মারামারির ভিডিও করায় এক সাংবাদিককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক হলেন দৈনিক কালের কণ্ঠের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. জুনায়েত শেখ।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটার পরে ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়ার পাশে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ইংরেজি ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীদের মারামারি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ধূপখোলা মাঠে। পরে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে ফের মারামারি বাধে। এ ভিডিও করতে গেলে শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী সাংবাদিকের ওপর অতর্কিত হামলা করে এবং ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এর আগে একইদিন দুপুর বারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে গণিত বিভাগের বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়ায় ইংরেজি বিভাগ আনন্দ উল্লাস করতে থাকে। পরে গণিত বিভাগের অন্য শিক্ষার্থীরা এসে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারামারিতে জড়ায়। এসময় পুরো ধুপখোলা মাঠে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। হট্টগোলের এক পর্যায়ে শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এসময় উভয় বিভাগের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।
এদিকে এ ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কালের কণ্ঠের সাংবাদিক মো. জুনায়েত শেখ মারামারির ঘটনার ভিডিও মোবাইলে ধারণ করতে প্রথম বাধা দেন শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন। এসময় অজ্ঞাত আরও কয়েকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং সাংবাদিকের উপর হামলা করেন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মো. জুনায়েত শেখ বলেন, আমি ভাস্কর্য চত্বরে দাড়িয়ে ছিলাম। এসময় দেখতে পাই, ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব দিকে মারামারি হচ্ছে। আমি ফোন দিয়ে ভিডিও করতে শুরু করি। এ সময় চার থেকে পাঁচ জন ছাত্রদল নেতা এসে কেন আমি ভিডিও করছি জিজ্ঞেস করে। আমি সাংবাদিক পরিচয় দেই। পরে তারা বলেন, তুই কে? তুই কিসের সাংবাদিক! ভিডিও কেন করবি? বলে ফোন ছিনিয়ে নিতে যায়। বাধা দিলে তাদের কয়েকজন আমাকে কিলঘুষি মারতে থাকে। এ সময় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সবাইকে সরে যেতে বলেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন বলেন, আমি কারও উপর হামলা করিনি। সবাইকে সরিয়ে দিয়ে হামলা ঠেকিয়েছি। সেখানে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরাও ছিল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সেক্রেটারি সুজন মোল্লা বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে বোঝার উপায় নেই কারা গায়ে হাত তুলেছে। আমরা শনাক্ত করতে পারছি না। আমাদের সঙ্গে সাংবাদিকদের কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই এবং করতেও চাই না।
জবি ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। শুধু সাংবাদিক নয়, কোন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা হলেও আমরা তার তীব্র নিন্দা জানায়। কে হামলা করেছে, তার পরিচয় শনাক্ত করা গেলে আমরা সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.তাজাম্মুল হক বলেন, আমরা ঘটনা শুনেছি এবং অভিযোগও পেয়েছি। বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।