ভারতের উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহর জেলার দস্তুরা গ্রামের ৩৫ বছরের সর্বেশ নামে এক নারীর গর্ভাবস্থা চিকিৎসা জগতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তার ক্ষেত্রে ভ্রূণটি জরায়ুর বদলে লিভারে বেড়ে উঠছিল, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ইন্ট্রাহেপ্যাটিক একটোপিক প্রেগনেন্সি’ নামে পরিচিত ও অত্যন্ত বিরল।
জানা গেছে, তিন মাস ধরে বমি, ক্লান্তি ও তীব্র ব্যথায় ভুগছিলেন সর্বেশ। প্রাথমিক আলট্রাসাউন্ডে কিছু ধরা না পড়লেও দ্বিতীয়বার স্ক্যানে চমকে ওঠেন চিকিৎসকরা। লিভারের ডান পাশে তারা ১২ সপ্তাহের ভ্রূণ খুঁজে পান, যার হৃদস্পন্দনও ছিল স্পষ্ট।
চিকিৎসকদের মতে, এ ধরনের গর্ভাবস্থায় ভ্রূণ বড় হলে লিভার ফেটে যেতে পারে, যা মা ও শিশুর জন্য প্রাণঘাতী। বুলন্দশহর বা মিরাটের অধিকাংশ চিকিৎসক কেসটি নিতে রাজি হননি। অর্থনৈতিক কারণে দিল্লি যাওয়া সম্ভব না হওয়ায়, মিরাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত হয়।
ডা. পারুল দাহিয়া ও ডা. সুনীল কানওয়ালের নেতৃত্বে দেড় ঘণ্টার জটিল সার্জারিতে ভ্রূণ অপসারণ করা হয়। বর্তমানে সর্বেশ বিশ্রামে আছেন ও ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন।
কীভাবে লিভারে ভ্রূণ?
সাধারণ গর্ভাবস্থায় নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুতে পৌঁছে বিকশিত হয়। কিন্তু ইন্ট্রাহেপ্যাটিক একটোপিক গর্ভাবস্থায় তা জরায়ুর বাইরে- যেমন ফ্যালোপিয়ান টিউব, ডিম্বাশয় বা অন্যান্য অঙ্গে স্থাপিত হয়। লিভারে রক্ত সরবরাহ ভালো থাকায় প্রাথমিক বিকাশ সম্ভব হলেও কিছুদিন পরই তা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
বিশ্বে মাত্র ৪৫টি ইন্ট্রাহেপ্যাটিক একটোপিক প্রেগনেন্সির ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি ভারতের। সর্বেশের কেসটি হবে ভারতের চতুর্থ। আগের ঘটনাগুলো ২০১২ দিল্লিতে, ২০২২ সালে গোয়ায় ও ২০২৩ সালে পাটনায় সালে ধরা পড়ে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই কেসের পূর্ণ বিবরণ আন্তর্জাতিক মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি
এসএএইচ