জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও নির্বাচন কমিশনারকে রাতভর অবরুদ্ধ করে রেখেছেন সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী-সমর্থকরা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে সিনেট হলে ছাত্র ইউনিয়ন ও সাংস্কৃতিক জোট সমর্থিত সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনার ও উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে। পরে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তারা অবরুদ্ধ ছিলেন বলে জানা যায়। ভোর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত গণমাধ্যমকর্মীসহ কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এর কিছু সময় পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা নিজের ইচ্ছায় এখানে নেই। আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এটা ঠিক যে নির্বাচনী কাজ করতে আমাদের কষ্ট হবে। আমরা বলেছিলাম আইনি কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলে অমর্ত্য রায়ের বিষয়টি সমাধান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, গভীর রাত হওয়ায় আমরা দুজন আইনজীবীর মধ্যে একজনকে পেয়েছি। তবে এখানে ওনারা (অবরোধকারীরা) কোনোভাবেই মানবেন না। পদ ফিরিয়ে না দিলে তারা নিজেও যাবেন না, আমাদেরকেও যেতে দেবেন না বলে জানান।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে হাইকোর্টের এক বেঞ্চ জাকসু নির্বাচন কমিশনের দেওয়া অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিলের আদেশ অবৈধ ঘোষণা করে। পরে এর বিরুদ্ধে চেম্বার জজের আদালতে আপিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চেম্বার জজ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। এতে তার নির্বাচনে লড়ার পথ বন্ধ হয়।
পরে তার প্রার্থীতা ফিরিয়ে দিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের সামনে জড়ো হন সম্প্রীতির ঐক্যের প্রার্থীরা। একপর্যায়ে তারা উপাচার্য ও নির্বাচন কমিশনারকে সিনেট হলের ভেতরে আলোচনায় বসতে বাধ্য করেন। নির্বাচন কমিশনার আদালতের রায়ের কথা জানালে একপর্যায়ে নির্বাচন কমিশনার ও উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন তারা।
সম্প্রীতির ঐক্যের প্রার্থীদের দাবি, অমর্ত্যের প্রার্থিতা বাতিলের আদেশ অবৈধ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইচ্ছাকৃত এটি করেছে। তার প্রার্থিতা ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত তারা সেখান থেকে যাবেন না। এসময় কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে তারা বাধা দেন। জানান, ভেতরে আলোচনা চলছে। তবে নির্বাচন কমিশন বলছে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, এটা আদালতের রায়। চাইলেই আমরা পরিবর্তন করে ফেলতে পারি না। তবে আমি চাই সমস্যার সমাধান হোক। কীভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ চাই।
মো. রকিব হাসান প্রান্ত/এমএন/জিকেএস