খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আমরা মনে করি জুলাই সনদের ফসল ঘরে তুলতে না পারলে বাংলার মানুষ অর্জিত স্বাধীনতা আবার হাতছাড়া করবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের গণভোট বাস্তবায়ন করতে হবে। জুলাই সনদ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান করতে হবে।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার সরকারি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে খেলাফত মজলিস আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরে বিকেলে জেলার ফুলপুর সরকারি কলেজ মাঠে পাঁচ দফা দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মামুনুল হক।
গণসমাবেশে মামুনুল হক বলেন, ইসলামি সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। এখানে ইসলামি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই প্রকৃত ন্যায়বিচার ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। আধিপত্যবাদী ও ইসলামবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা সোনার বাংলাদেশ দেখেছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখেছি- এবারের বাংলাদেশ হবে খেলাফতের বাংলাদেশ, ইনশাআল্লাহ। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে, এ দেশের তামাম ছাত্র-জনতার রক্তের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী, বিদেশি আধিপত্যবাদ–বিরোধী বিপ্লবের প্রতিটি অর্জন ঘরে তোলার জন্য খেলাফত মজলিস সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, এ দেশের আলেম সমাজ ও ইসলামপন্থিরা ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, জুলুমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার জুলুম ও নির্যাতনের টার্গেটে পরিণত হয়েছিল। আমরা ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে জীবন দিয়েছি। ২০২১ সালে আন্দোলনে জালিমের বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছি, জালিমের রক্তচক্ষুর সামনে মাথা নোয়াইনি।
শেখ হাসিনার সমালোচনা করে মামুনুল হক বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের অন্যায়ভাবে বছরের পর বছর বন্দি রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতন সহ্য করেছি, তবু দেশ ও ইসলামের প্রশ্নে আমরা মাথা নত করিনি। দেশ, স্বাধীনতা ও ইসলামের প্রশ্নে আমরা কোনো অপশক্তির সামনে মাথা নত করবো না ইনশাআল্লাহ।
আরও পড়ুন
ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন চায় জামায়াত, তবে গণভোট একসঙ্গে নয়
কাবিননামায় সই করেছেন, ‘না’ বলার সুযোগ নেই: বিএনপিকে পাটওয়ারী
১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানকে ইসলাম ও স্বাধীনতার সংগ্রামের চেতনাবিরোধী আখ্যায়িত করে খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, ৭২ সালের সংবিধান ৭১-এর চেতনা পরিপন্থি। এই সংবিধানের মাধ্যমে দেশকে আল্লাহর বিধান থেকে বিচ্যুত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অতীতে বিভিন্ন সরকার সংখ্যালঘুদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ক্ষমতায় গেলে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও পাহাড়ি গারো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা হবে।
হালুয়াঘাটের সমাবেশে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মনোনীত ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা তাজুল ইসলাম এবং ফুলপুরের সমাবেশে ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মুফতি মুহাম্মাদুল্লাহর হাতে নির্বাচনী প্রতীক ‘রিকশা’ তুলে দেন মাওলানা মামুনুল হক।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের স্থানীয় শাখার উদ্যোগে দুই সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ হাদী এবং কেন্দ্রীয় বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ পশ্চিম জেলার সভাপতি মুফতি সারোয়ার হুসাইন, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রেজাউল করিম, ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুশতাক আহমেদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইয়াসিন আরাফাত, খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় আমেলা সদস্য মাওলানা মাহমুদুল হাসান নাঈম, খেলাফত ছাত্র মজলিস কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ মুসতাক আহমাদ, ময়মনসিংহ পূর্ব শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আনিসুর রহমান, হালুয়াঘাট থানা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রশিদ, মাওলানা আবু নাঈম, মাওলানা ফারুক হুসাইন, মাওলানা মোফাজ্জল হুসাইন প্রমুখ। এসময় খেলাফত মজলিস ও স্থানীয় অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
কামরুজ্জামান মিন্টু/কেএসআর

16 hours ago
11









English (US) ·