পুলিশি বাধায় ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। তবে পুলিশ বলছে, অনুমতি ছিল না। সে কারণে কর্মসূচি করতে দেওয়া হয়নি।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন’র উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘পাহাড় থেকে সমতল, অস্তিত্ব রক্ষায় অটল’।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, এই সম্মেলনে ১৯৭২ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র দেখানোর কথা ছিল। পরে দুপুরে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ‘অনিবার্য কারণে’ সম্মেলন স্থগিত করে জানানো হয়, পরবর্তীতে যথাসময়ে এই সংখ্যালঘু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তন থেকে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের ফেসবুক পেজে লাইভ করে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছিল।
সরেজমিনে দেখা যায়, জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন ঘিরে শুক্রবার সকাল থেকেই তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হান্নানের নেতৃত্বে পুলিশের সদস্যরা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সামনে অবস্থান নেয়। পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে সকাল ১০টার দিকে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা করের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেখানে আসেন। তবে কর্মসূচির পুলিশি অনুমতি না থাকার কথা বলে পুলিশ তাদের ভেতরে প্রবেশে বাধা দেয়। এ সময় ইনস্টিটিউশনে প্রবেশের ফটকের সামনের ফুটপাটে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠানের অনুমতির জন্য আয়োজকদের পক্ষ থেকে পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলার চেষ্টা করা হয়।
একপর্যায়ে ফুটপাতে ব্যানার টাঙিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার উদ্যোগ নেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের নেতারা। তবে পুলিশ সেখানেও নিষেধ করে। এরপর দুপুর ১২টার দিকে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন সেখানে আসেন। তিনি সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং কর্মসূচির জন্য পুলিশের অনুমতি না থাকার কথা জানান। এ সময় আয়োজকদের পরবর্তীতে কর্মসূচির জন্য যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নতুন করে আবেদন করার জন্য বলেন ওসি।
পরে উপস্থিত পুলিশের সঙ্গে সমঝোতার একপর্যায়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেখান থেকে কিছুটা সরে পার্শ্ববর্তী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সামনে ব্যানার টাঙিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সুস্মিতা কর।
এর আগে ‘সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন’র উদ্যোগে এই সংখ্যালঘু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়ার কথা জানানো হলেও ব্যানারে আয়োজক হিসেবে ‘৮% জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত কন্ঠস্বর’ লেখা ছিল।
সুম্মিতা কর বলেন, ‘অনিবার্য কারণবশত এই জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন স্থগিত করতে হয়েছে। পরে সম্মেলনের পরবর্তী তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। এভাবে কর্মসূচি থামানো যাবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘উদ্যোক্তারা যথাসময়ে ও যথাস্থানে অনুমতির আবেদন জমা এবং অনুমোদন নিতে পারেনি। এ কারণে এখানে কর্মসূচি করতে দেওয়া গেল না।’