চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকগুলোর করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) খাতে ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জানুয়ারি-জুন ২০২৫ সময়ে ব্যাংকগুলোর সিএসআর ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৫০ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩০৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে ব্যয় কমেছে ১৫৯ কোটি টাকা।
ব্যাংকারদের মতে, গত বছরে ব্যাংকগুলোর নিট মুনাফা হ্রাস পাওয়ায় এ খাতে ব্যয়ও কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে আরও জানা যায়, ২০২৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে সিএসআর খাতে ব্যয় হয়েছিল ৩০৬ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জলবায়ুসহ সব খাতেই ব্যয় কমেছে। দেশের ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে ১২টি ব্যাংক এ সময়ে কোনো সিএসআর ব্যয়ই করেনি। এছাড়া ২০২৪ সালে ১৬টি ব্যাংক নিট মুনাফা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়, ফলে তারা এ খাতে অর্থ বরাদ্দ দিতে পারেনি।
আরও পড়ুন
২০২৫ সালের জন্য সিএসআর খাতে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৩৮ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের নিট মুনাফার ৩.১৪ শতাংশের সমপরিমাণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো তাদের নিট মুনাফার সর্বোচ্চ ১ শতাংশ পর্যন্ত সিএসআর খাতে ব্যয় করতে পারে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ শিক্ষা, ৩০ শতাংশ স্বাস্থ্য এবং ২০ শতাংশ পরিবেশ ও জলবায়ু খাতে বরাদ্দ বাধ্যতামূলক। বাকি ২০ শতাংশ ব্যয় করতে হবে আয়ের উৎস সৃষ্টি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ও অন্যান্য খাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নিট মুনাফা হ্রাস পাওয়া ছাড়াও আগে যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল ও শিক্ষা তহবিলে বাধ্যতামূলকভাবে অনুদান দিতে হতো, তা বর্তমানে কমে যাওয়াও ব্যয় হ্রাসের একটি বড় কারণ।
খাতভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে শিক্ষা খাতে ব্যয় হয়েছিল ৬৩ কোটি টাকা, স্বাস্থ্যখাতে ২৩ কোটি, পরিবেশে ৭.৩ কোটি এবং অন্যান্য খাতে ১৬৬ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২৫ সালের একই সময়ে শিক্ষা খাতে ব্যয় নেমে এসেছে ৩৪ কোটিতে, স্বাস্থ্যখাতে বেড়ে হয়েছে ২৮ কোটি, পরিবেশ ও জলবায়ু খাতে ৫ কোটি এবং অন্যান্য খাতে কমে দাঁড়িয়েছে ৮২ কোটি টাকা।
ইএআর/ইএ