জান্তার হামলা নিহত ৭, বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার
মিয়ানমারে জান্তার সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সংঘাত বেড়েই চলেছে। জান্তার হামলায় অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছে দেশটির বেসামরিক লোক। দেশটির সাগাইং অঞ্চলে জান্তার বিমান হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়েছেন হাজার হাজার বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাগাইং অঞ্চলের পালে শহরে বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা। এতে অন্তত ১০ হাজার বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রাণ হারিয়েছেন আরও সাতজন।
মিয়ানমারের বামার ন্যাশনাল রেভলুশনারি আর্মি (বিএনআরএ) অঞ্চলের পুলিশ স্টেশন ও প্রশাসনিক কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। এর জবাবে শহর ও আশপাশের এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা। সাগাইং প্রদেশের রাজধানী মনয়া থেকে মাত্র ৪৮ কিলোমিটার দূরের শহর হলো পালে।
বাস্তুচ্যুত লোকদের সহায়তা নিয়োজিত এক বাসিন্দা বলেন, মঙ্গলবার বিমান হামলা অব্যাহত থাকায় জান্তা কর্মীসহ অনেক শহরের বাসিন্দা আটকা পড়েছেন। এ ছাড়া আশপাশের গ্রামগুলো খালি হয়ে পড়েছে।
জান্তাবিরোধী এক সেনা জানান, এলাকাটিতে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সরকারবিমান ব্যবহার করছে এবং সেনাদের পুনরায় মোতায়েনের চেষ্টা করছে। আমরা বিভিন্ন শহরে জান্তার অবস্থানকে নিশানা করেছি।
দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর জানিয়েছে, তারা কর্মীদের ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। প্রশাসনের কাছে তথ্যফাঁস এড়াতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পালে টাউনশিপ পিপলস অথরিটি জানিয়েছে, জান্তার বিমান এবং কামান হামলায় সাতজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত তিনজন।
ইয়ানমাবিন জেলার বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্ল্যাক প্যান্থার ব্যাটালিয়ন জানিয়েছে, সোমবারের বোমা হামলায় পালের বৈদ্যুতিক বিভাগের একজন সদস্য নিহত এবং জান্তার এক ক্লার্ক গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ছাড়া পৃথক হামলায় তার স্ত্রী ও শিশু নিহত হয়েছেন।
পালে টাউনশিপ পিপলস ডিফেন্স টিমের এক সদস্য জানান: বেশিরভাগ বাস্তুচ্যুত মানুষ তাদের আত্মীয়দের কাছে আশ্রয় নিচ্ছে। আমরা তাদের খাবার সরবরাহ করছি। তবে তাদের থাকার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন হচ্ছে না।
ইরাবতি জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিমান হামলায় সরকারি হাসপাতালের পাশের বাড়িগুলোতে আগুন ধরে গেছে।
উল্লেখ্য, পালে টাউনশিপের ১৮৯টি গ্রাম রয়েছে।এর পূর্বে রয়েছে সালিংই টাউনশিপ, উত্তরে ইয়ানমাবিন এবং কানি টাউনশিপ, পশ্চিমে গাংগাও টাউনশিপ এবং দক্ষিণে মায়াং টাউনশিপ। শহরটির প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। এ ছাড়া সরকারি অফিস, স্কুল ও ক্লিনিক জান্তার দখলে রয়েছে। অন্যদিকে মিত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী পু সা তেও বেশ কয়েকটি গ্রামের দখল নিয়েছে।