জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হওয়া আমাদের আন্দোলনের বড় বিজয়

1 month ago 37

জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হওয়ায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনের বড় বিজয় হয়েছে বলে মনে করেন সংগঠনটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে গেজেট প্রকাশের পর জাগো নিউজকে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।

শাহরিয়ার কবির বলেন, এটিকে আমরা আমাদের আন্দোলনের বড় বিজয় বলে মনে করি। সরকারকে অভিনন্দন জানাই। বাংলাদেশকে সন্ত্রাসমুক্ত করার জন্য দেরিতে হলেও তারা জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছেন।

তবে এ বিষয়ে সতর্কও করেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি। তিনি বলেন, তবে এটা আমাদের মনে রাখতে হবে, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হলেই যে বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাস নির্মূল হয়ে যাবে, তা নয়। জামায়াতের বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে- একটা অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য রয়েছে, সামাজিক সংগঠন রয়েছে, শত শত এনজিও রয়েছে, বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের বিশাল একটা আধিপত্য রয়েছে—সবকিছুই সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।

আরও পড়ুন

‘যেখান থেকে জঙ্গিদের অর্থায়ন হয়, সন্ত্রাসের অর্থায়ন হয়, জামায়াতের রিক্রুটমেন্ট হয়, এগুলো যদি সরকারের নিয়ন্ত্রণে না আসে, জামায়াত কিন্তু থেকেই যাবে। জামায়াতের লোকেরাও অন্য নামে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। অন্য দলে যেতে পারে। তাদেরও গোয়েন্দা নজরদারিতে আনতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এগুলো সম্ভব।’

এই লেখক, গবেষক আরও বলেন, মনে রাখতে হবে জামায়াত কিন্তু শুধু একটা দল নয়, একটা আদর্শ। যেটিকে আমরা মওদুদীবাদ বলি। এটিকে নির্মূল করতে হবে। মৌলবাদ, ওয়াহাবীবাদ সব নির্মূল করতে হবে। ধর্মের নামে আরও অনেক সংগঠন আছে, যারা ধর্মের নামে সন্ত্রাস করে। তাদের সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে কিংবা নিষিদ্ধ করতে হবে।

‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সংবিধানে ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ধর্মের পবিত্রতা রক্ষার জন্যই সেটি করা হয়েছিল। ধর্মের নামে রাজনীতি থাকলে ধর্মের নামে সন্ত্রাস থাকবে না, এটির নিশ্চয়তা কী? ধর্ম ধর্মের জায়গায় থাকবে, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাকবে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এটিই হওয়া উচিত। সবকিছু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত হওয়া উচিত’- যোগ করেন শাহরিয়ার কবির।

আরও পড়ুন

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে গেজেট জারি করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও দলটির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

এতে বলা হয়, সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং এর অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাম্প্রতিককালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরাসরি এবং উসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিল। সরকার বিশ্বাস করে, জামায়াত-শিবিরসহ এর সব অঙ্গসংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। তাই ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮(১) এ দেওয়া ক্ষমতাবলে জামায়াত-শিবিরসহ এর সব অঙ্গসংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

এসইউজে/এমকেআর

Read Entire Article