জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ করবে সরকার

জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মূল্য সরকারকে নির্ধারণের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবন রক্ষকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকবে। ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সার্কুলারে ১১৭টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে রেখে বাকি ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ আগস্ট রায় দেয় হাইকোর্ট। আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। রিটকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, এই রায়ের ফলে মানুষের জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মূল্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যখন তখন ইচ্ছামাফিক নির্ধারণ করতে পারবে না। জানা যায়, সরকারের ওই সার্কুলারকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ ২০১৮ সালে হাইকোর্টে একটি রিট করে। এরপর হাইকোর্ট রুল জারি করে, পরে শুনানির জন্য বিষয়টি বিচারপতি মো. রেজাউল হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে আসে। শুনানি শেষে গত ২৫ আগস্ট আদালত রায় দেন। রিটের শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ওষুধ নিয়ন্ত্

জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ করবে সরকার

জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মূল্য সরকারকে নির্ধারণের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবন রক্ষকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকবে।

১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সার্কুলারে ১১৭টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে রেখে বাকি ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ আগস্ট রায় দেয় হাইকোর্ট। আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। রিটকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, এই রায়ের ফলে মানুষের জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মূল্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যখন তখন ইচ্ছামাফিক নির্ধারণ করতে পারবে না।

জানা যায়, সরকারের ওই সার্কুলারকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ ২০১৮ সালে হাইকোর্টে একটি রিট করে। এরপর হাইকোর্ট রুল জারি করে, পরে শুনানির জন্য বিষয়টি বিচারপতি মো. রেজাউল হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে আসে। শুনানি শেষে গত ২৫ আগস্ট আদালত রায় দেন।

রিটের শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর ১১ ধারায় সরকারকে ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। সে অনুসারে সরকার অধিকাংশ ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে এবং ১৯৯৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ৭৩৯টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে। পরে ওই ক্ষমতাকে সীমিত করে ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ১১৭টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে রেখে অন্য সকল ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে ন্যস্ত করা হয়।

শুনানিতে তিনি বলেন, ওষুধ যেহেতু জীবন ধারণের জন্য অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বেঁচে থাকার অন্যতম মাধ্যম, সে কারণে মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে নাগরিদের বেঁচে থাকার অধিকার সম্পর্কিত। তাই মূল্য নির্ধারণে সরকারের ক্ষমতা সীমিতকরণের সিদ্ধান্ত ও জারিকৃত সার্কুলার নাগরিকদের বেঁচে থাকার অধিকারকে ক্ষুন্ন করছে।

রায়ের কপি প্রকাশের পর তিনি বলেন, আদালত রায়ে রুল নিষ্পত্তি করে কতিপয় নির্দেশনা দিয়েছেন, যার মধ্যে অন্যতম হলো বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবন রক্ষকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকবে। জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা ওষুধ কোম্পানিগুলোর থাকবে না। আদালত রায়ে ওষুধ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশের বিধান, যা বর্তমানে ওষুধ ও কসমেটিক্স আইন, ২০২৩ এর সুনির্দিষ্ট বিধান অনুসারে সরকার কর্তৃক গঠিত কমিটির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণের বিষয়ও উল্লেখ করেছে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে আইনজীবী মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী রিট করেন। রিটে বিবাদীরা হলেন স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ওষুধ অধিদফতরের মহাপরিচালক, ওষুধ মালিক সমিতির সভাপতি, সেক্রেটারিসহ মোট ৬ জন। শুনানিতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী সঞ্জয় মন্ডল। ওষুধ মালিক সমিতির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস কে মোরশেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডি এ জি সৈয়দ এজাজ কবির।

এফএইচ/এএমএ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow