ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গকে হারানোর শোকে আসামের আকাশ-বাতাস এখনো ভারী হয়ে আছে। বোরবার সেই হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সাক্ষী সরুসূযাই স্টেডিয়াম। শিল্পীর কফিনবন্দি মৃতদেহ দেখে ভেঙে পড়েছে সব শ্রেণির অনুরাগীরা। যে ছেলেটি নির্ধিদ্বায় প্রতিবাদ করত, যে ছেলেটি মানুষের আপদে-বিপদে ঝাপিয়ে পড়ত, তাকে আর কাছে পাওয়া যাবে না! বিষয়টি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না আসামবাসী। এমন অবস্থার মাঝেই আসামের কাজিরাঙ্গা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নাগা ছাত্র জুবিনকে নিয়ে কটুক্তি করায় তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ নাগা ছাত্র জুবিনের উদ্দেশে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করেছেন। এর ফলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাজিরাঙ্গা বিশ্ববিদ্যালয়। নাগাল্যান্ড থেকে আসামে পড়তে আসা ওই ছাত্রকে এরই মধ্যে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি নাগা পড়ুয়াদের যাতে কোনোরকম সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়, তার জন্যে ৩৭০ জনকে এরই মধ্যেই ডিমাপুরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ আচমকাই আসামের কাজিরাঙ্গা বিশ্ববিদ্যালয় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জুবিন গর্গকে ঘিরে বি টেক সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক পড়ুয়ার মন্তব্যকে ঘিরে। নেটপাড়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে ওই পড়ুয়াকে বলতে শোনা যায়, জুবিন গার্গের মৃত্যুতে কী যায়-আসে? সেকথা শুনেই বাকি ছাত্ররা প্রতিবাদে গর্জে উঠে বলে, ‘আর যাই হোক, জুবিনদাকে নিয়ে কোনো বাজে কথা কিং কটুক্তি সহ্য করব না।
জবাবে ওই ছাত্র বলেন, ‘রানির মৃত্যুতে কি তোমরা শোকপালন করেছিলে? তাহলে এ জুবিনকে নিয়ে এত কেনো শোক? ও কে?’ ভাইরাল ভিডিও ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। জানা যায়, ওই পড়ুয়া আদতে নাগাল্যান্ডের বাসিন্দা। ঘটনায় প্রতিবাদ করেছেন নাগাল্যান্ডের শিক্ষামন্ত্রী তেমজেন ইমনা।
গণমাধ্যমের কাছে তিনি জানান, জুবিন গার্গ শুধু আসাম নয়, পুরো উত্তর-পূর্ব ভারচের গর্ব। তার সংযোজন, এটা ভীষণই স্পর্শকাতর বিষয়। আমাদের রাজ্যের একজন ছাত্র জেনে বা না জেনে, রাগ কিংবা দুঃখের বশে, যেভাবে ওই মন্তব্য করে থাকুক না কেন, সেটা অনুচিত। খুব ভুল করেছে।
আরও পড়ুন:
কতটা অসুস্থ ছিলেন জুবিন, জানালেন আনু মালিক
সিঙ্গাপুর থেকে এলো জুবিনের মৃত্যুসনদ
তেমজেন জানান, ওই বিশঙ্খলার পর আরও কোনো উত্তেজনার খবর পাওয়া যায়নি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে। সবাই নিরাপদে রয়েছেন। নাগা স্টুডেন্ট ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করা হয়েছে ওই পড়ুয়াদের ডিমাপুরে আপাতভাবে স্থানান্তরিত করার জন্যে।
এমএমএফ/এমএস