আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলার কাছে জুমার দিন বিশেষ ফজিলতপূর্ণ দিন। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিভিন্ন হাদিসে জুমার দিনটিকে মর্যাদাপূর্ণ দিন ও সর্বশ্রেষ্ঠ দিন বলেছেন। আবু লুবাবা ইবনুল মুনজির থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
إِنَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ سَيِّدُ الْأَيَّامِ وَأَعْظَمُهَا عِنْدَ اللَّهِ وَهُوَ أَعْظَمُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ يَوْمِ الْأَضْحَى وَيَوْمِ الْفِطْرِ
জুমার দিন দিনসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। জুমার দিন আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে মহান দিন। এমনকি এ দিন আল্লাহ তাআলার কাছে ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর তথা ইসলামের দুই ঈদের দিন থেকেও মহান। (মুসনাদে আহমাদ: ১৫৫৪৮, সুনানে ইবনে মাজা: ১০৮৪১)
তাই জুমার দিনটিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এ দিনের আমলগুলো গুরুত্বের সাথে পালন করা উচিত। জুমার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল জুমার নামাজ আদায় করা। জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। কোরআনে আল্লাহ তাআলা জুমার নামাজের জন্য দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। জুমার নামাজের গুরুত্ব বোঝাতে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
من تَرَكَ ثلاث جمعٍ تهاوناً بها طبع الله على قلبه
যে ব্যক্তি অলসতা করে ধারাবাহিকভাবে তিনটি জুমার জামাতে অনুপস্থিত থাকে, আল্লাহ তা’আলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেন। (সুনানে নাসাঈ: ১৩৭২)
জুমার নামাজে যাওয়ার আগে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া, মিসওয়াক করা, গোসল করা, সুগন্ধি ব্যবহার করার পাশাপাশি সামর্থ্য অনুযায়ী সবচেয়ে উত্তম পোশাক পরিধান করাও সুন্নত। আবু সাঈদ ও আবু হোরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত তারা বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
من اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَلَبِسَ مِنْ أَحْسَنِ ثِيَابِهِ وَمَسَّ مِنْ طِيبٍ إِنْ كَانَ عِنْدَهُ ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ فَلَمْ يَتَخَطَّ أَعْنَاقَ النَّاسِ ثُمَّ صَلَّى مَا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ ثُمَّ أَنْصَتَ إِذا خرج إِمَام حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ صَلَاتِهِ كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ جُمُعَتِهِ الَّتِي قَبْلَهَا
যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করবে, উত্তম পোশাক পরবে, সুগন্ধি থাকলে সুগন্ধি লাগাবে, তারপর মসজিদে যাবে, মানুষের কাঁধ ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করবে না, যতো রাকাত সম্ভব হয় নফল নামাজ আদায় করবে এবং ইমাম খুতবার জন্য হুজরা থেকে বের হবার পর জুমার নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকবে, এ জুমা থেকে পূর্বের জুমা পর্যন্ত তার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (সুনানে আবু দাউদ: ৩৪৩)
তাই জুমার দিন আমরা যেন পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে, উত্তরূপে গোসল করি, মিসওয়াক করি বা দাঁত ব্রাশ করি, উত্তম পোশাক পরিধান করি, সুগন্ধি ব্যবহার করি। সুন্নত পালনের নিয়তে
আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে জুমার দিন গোসল করা, মিসওয়াক করা ও সুগন্ধি লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
غُسْلُ يَوْمِ الْجُمُعَةِ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ وَسِوَاكٌ وَيَمَسُّ مِنَ الطِّيبِ مَا قَدَرَ عَلَيْهِ
জুমার দিন প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির গোসল ও মিসওয়াক করা কর্তব্য এবং সামর্থ্য থাকলে সে যেন সুগন্ধি ব্যবহার করে। (সহিহ মুসলিম: ৮৪৬)
উবায়দ ইবনু সাব্বাক্ব (রহ.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন এক জুমার দিন বলেছেন,
يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِينَ إِنَّ هَذَا يَوْمٌ جَعَلَهُ اللَّهُ عِيدًا فَاغْتَسِلُوا وَمَنْ كَانَ عِنْدَهُ طِيبٌ فَلَا يَضُرُّهُ أَنْ يَمَسَّ مِنْهُ وَعَلَيْكُمْ بِالسِّوَاكِ
হে মুসলমানরা! এ দিনটিকে আল্লাহ তাআলা ঈদ হিসেবে গণ্য করেছেন। তাই তোমরা এ দিন গোসল করবে। যার কাছে সুগন্ধি আছে সে তা ব্যবহার করবে। আর তোমরা অবশ্যই মিসওয়াকও করবে। (সুনানে ইবনে মাজা: ১০৯৮)
ওএফএফ/এমএস