জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আলেম সমাজের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য বলে দাবি করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছাত্রদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। বলিষ্ঠ নেতৃত্বে হাজার আলেম সমাজ, ছাত্রসহ সকল স্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এম সি অডিটোরিয়ামে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত নবীন আলেম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, বরিশাল মহানগরের তথ্য গবেষণা ও প্রচার সম্পাদক মুহাম্মদ মুমিনুল ইসলাম ইমন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, প্রধান অতিথির বক্তব্যে চরমোনাই পীর বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান দেশের ইতিহাসের কিংবদন্তিতুল্য আখ্যান। দেড় হাজারের অধিক নিহত এবং ৩০ হাজারের অধিক আহত ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশে সৃজিত হয়েছে নতুন ইতিহাস। যুগান্তকারী এ ইতিহাস বিনির্মাণে অংশ নিয়েছে জাতি-ধর্ম-শ্রেণিপেশা নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে আলেম-উলামা এবং মাদরাসা শিক্ষার্থীরাও।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয় সরকারি চাকরিতে বৈষম্য দূর করে কোটা সংস্কারের দাবিতে। দেশের সর্বস্তরের মানুষ এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে। ইসলামও সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং যৌক্তিক সংস্কারের পক্ষে। একই সঙ্গে সব ধরনের জুলুম ও বিশৃঙ্খলার বিপক্ষে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যেমন আলেম সমাজের অভিভাবক মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জি হুজুর ঘোষণা করেছিলেন, ‘এ যুদ্ধ জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের সংগ্রাম’, তেমনি ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানেও রাজপথে রক্তের স্রোত প্রবাহিত করে দেশের আলেম সমাজ এবং মাদরাসা শিক্ষার্থীরা।
তিনি আরও বলেন, দেশের আলেম সমাজ ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে যেভাবে রক্ত দিয়েছেন, তেমনি ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানেও আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ায় শতাধিক আলেম ও মাদরাসা শিক্ষার্থী শহিদ হয়েছেন, অঙ্গ হারিয়েছেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে জুমার খুতবা দেওয়ায় চাকরি হারিয়েছেন। এ ছাড়া সারা দেশে অসংখ্য আলেম শারীরিকভাবে নিগৃহীত হয়েছেন।
চরমোনাই পীর বলেন, এ দেশের মানুষ আলেমদের নেতৃত্ব দেখতে চায়। আলেমদের মাধ্যমে সমাজ গঠন করতে চায়। আলেমরাই হলো এদেশের সূর্য সন্তান।
প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মুনতাছির আহমাদ।
তিনি বলেন, ইসলামের সেই সোনালী যুগ পুনরুদ্ধার করতে হবে। এজন্য ছাত্র সমাজ কে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগরের সভাপতি গাজী মুহাম্মাদ রেদোয়ানের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক নাজমুল ইসলাম সুজন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মাদ লোকমান হাকিম ও সহ-সভাপতি মাওলানা সৈয়দ নাছির আহমেদ কাওছার ও সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ কাওছারুল ইসলাম, জামিয়া ইসলামিয়া হোসিনিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি মামুনুর রশীদ, জামিয়া মাদানিয়া হাজী ওমর শাহ বটতলা মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি শরিফুল ইসলাম, রওজাতুল জান্নাত মাদানিয়া আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক ত্বহা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান মিরাজ, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আরিফুর রহমান, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর এর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ রেজাউল করিম।