২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বেরিয়ে আসতে থাকে আওয়ামী দুঃশাসনের ভয়াবহ সব ঘটনা। সেসব ঘটনার স্মৃতি ধরে রাখতে সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দেন বেশ কয়েকজন নির্মাতা। অভ্যুত্থানের বছর পেরোলো। কী অবস্থায় আছে সেসব সিনেমা? আদৌ কি নির্মিত হবে সেসব?
আওয়ামী দুঃশাসনের আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে যেসব সিনেমার নাম শোনা গিয়েছিল, সেগুলো হলো ‘আয়নাঘর’, ‘জুলাই গণ আন্দোলন’। গণ-অভ্যুত্থানকে পর্দায় নিয়ে আসতে কাজ করতে চেয়েছিলেন কয়েকজন নির্মাতা। এর মধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আটটি সিনেমা নির্মাণের ঘোষাণা দেওয়া হয়েছিল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ঘুরে-ফিরে ‘আয়নাঘর’ নামটি প্রাধান্য পেয়েছে। পরিচালক সমিতির শিডিউল খাতার তথ্য বলছে, বদিউল আলম খোকন ‘ভয়ংকর আয়নাঘর’, জয় সরকার ‘আয়নাঘর’, বেলাল সানি ‘পরিবর্তন’, জঁ নেসার ওসমান ‘অন্ধকারের আয়নাঘর’ নামে ছবি নির্মাণের জন্য নাম নিবন্ধন করেছিলেন। এ ছাড়া ৩৬ দিনে সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে ‘৩৬শে জুলাই’ শিরোনামে একটি সিনেমা বানাতে পরিচালক সমিতিতে নাম নিবন্ধন করেছিলেন রাশেদ শামীম স্যাম।
‘আয়নাঘর’ সিনেমার অগ্রগতি কত দূর? জানতে চাইলে জয় সরকার বলেন, “আয়নাঘর”-এর কাজ গুছিয়ে এনেছি। সামনের বছর জানুয়ারিতে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পরিকল্পনা আছে প্রযোজকের। দুদিন পর সিনেমাটি নিয়ে মিটিংও আছে প্রযোজকের সঙ্গে।’
‘৩৬শে জুলাই’ সিনেমাসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, সিনেমাটি হচ্ছে না। প্রযোজক এখন আর সিনেমাটি বানানোর আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। রাশেদ শামীম স্যাম চেষ্টা করছেন নতুন প্রযোজক খুঁজে সিনেমাটি নির্মাণ করতে। তবে সিনেমা সংশ্লিষ্ট কয়েক জন জানিয়েছেন, সিনেমাটি আর আলোর মুখ দেখবে না।
‘ভয়ংকর আয়নাঘর’ নিয়ে বদিউল আলম খোকন জানিয়েছেন, সিনেমার স্ক্রিপ্ট লেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘অনেক বড় ক্যানভাসে সিনেমাটি নির্মাণ করতে চাইছি। তাই একটু সময় নিচ্ছি। সিনেমার স্ক্রিপ্ট লেখা চলছে, পাশাপাশি নতুন একটা সিনেমার কাজ ধরেছি। সেটি শেষ করে “ভয়ংকর আয়নাঘর”-এর প্রিপ্রোডাকশন শুরু করবো।’
দেশব্যাপী সংস্কৃতির বিকাশ ও বিকেন্দ্রীকরণের কথা মাথায় রেখে জুলাই আন্দোলন নিয়ে সিনেমা বানানোর ঘোষণা দিয়েছিল খোদ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে দেশের আট বিভাগীয় শহরে কর্মশালাভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্য দেশের বরেণ্য ও মেধাবী চলচ্চিত্রকারদের কর্মশালা শেষ হয়েছে। একটি বিভাগের সিনেমা নির্মাণ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক অনম বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘একটা কাজের শুটিং শেষ হয়েছে। দ্বিতীয়টি শুটিংয়ে যাবে। আর সব বিভাগীয় শহরে কেবলই কর্মশালা শেষ হয়েছে।’
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই সিনেমা প্রকল্পের নাম ‘রিমেম্বারিং মনসুন রেভ্যুলেশন’। সিনেমা পরিচালনা করছেন অনম বিশ্বাস, হুমায়রা বিলকিস, নুহাশ হুমায়ূন, শঙ্খ দাশগুপ্ত, শাহীন দিল রিয়াজ, রবিউল আলম রবি, তাসমিয়াহ আফরিন মৌ এবং মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম।
এমআই/আরএমডি/এমএস