অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের বিষয়ে জাতির সামনে রাজনৈতিক দলের ইচ্ছাগুলোকে তুলে ধরাই হবে সরকারের প্রথম কাজ। তার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে কীভাবে কি করা যায়।
উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, ধরুন নির্বাচন কমিশন সংস্কার প্রতিবেদনে একশটি প্রস্তাব আছে, কোনো একটি দল বললো আমরা ৯৮টিতে রাজি আছি, দুটোতে রাজি নয়। জনগণ জানলো তারা কী বলেছে। আরেকদল বললো, আমরা দুটোতে রাজি ৯৮টাতে রাজি নয়। তখন জনগণ বলবে নির্বাচনের সংস্কার হবে, ১০০টি প্রস্তাবে মাত্র দুটোতে রাজি হলো। বাকিগুলোতে কেন রাজি হলো না তারা। এভাবেই রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা বসে কোন কোন সংস্কারের কি মতামত তা লিখিতভাবে আমাদের জানিয়ে দেবে। আমরা যথারীতি সেগুলো ওয়েবসাইটে দিয়ে দেবো।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকের সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হলো জুলাই চার্টার তৈরি করা। রাজনৈতিক দলের মতামতের প্রতিফলন ওই চার্টারে সব দল সই করবে। তাদের স্বাক্ষরিত ওই চার্টার জাদুকরসহ সর্বত্র রাখা হবে। মানুষ জানতে পারবে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে কোন দল কোন ধরনের সংস্কার করেছে।
- আরও পড়ুন
- আমরা শুধু সাচিবিক কাজগুলো করে দিলাম: প্রধান উপদেষ্টা
- সরকারের সব পজিটিভ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবে জামায়াত: ডা. তাহের
- সরকারের দ্বিতীয় পর্বেও হাঙ্গামা হবে, আশঙ্কা ড. ইউনূসের
ড. ইউনূস বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে একাধিক টেলিফোন সংযোগ থাকবে। রাজনৈতিক দলগুলো টেলিফোনে যোগাযোগ করেও তাদের মতামত ও বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব সম্পর্কে জানতে, বুঝতে ও ব্যাখ্যা চাইতে পারবেন। রাজনৈতিক দলগুলো চাইলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে পারবে।
তিনি বলেন, দেশটাকে দেশ হিসেবে রাখতে হলে অবশ্যই সংস্কার করতে হবে। রাজনৈতিক দলের নেতারাই দেশের নেতা। তাদের বলতে হবে কোন সংস্কারটা করবেন আর কোনটা করবেন না। এর পেছনে কোনো দুরভিসন্ধি নেই। রাষ্ট্রসংস্কার নিয়ে বহুকাল যাবত কথাবার্তা হচ্ছে। এবার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সেগুলো লিখে দেওয়া হয়েছে। যাতে করে সংস্কার কার্যক্রম সুন্দরভাবে এগোতে পারে।
সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের কপি হাতে পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো এককভাবে কিংবা দলগতভাবে কোন কোন সংস্কারের বিষয়ে একমত, কোনগুলোর বিষয়ে একমত না, কোনগুলোর সংশোধন সাপেক্ষে একমত তা জানাবেন। সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলের বক্তব্যগুলো জনসাধারণকে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানানো হবে।
এমইউ/এমএএইচ/এএসএম