জুলাইয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাবেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা

4 months ago 57

সার্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবি পূরণ না হলে আগামী ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনের সামনে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া। তিনি বলেন, গত ১৩ই মার্চ প্রজ্ঞাপন জারি করার পর থেকে শিক্ষকরা এ পর্যন্ত নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা কোনোভাবেই যেন বিঘ্নিত না হয়, তা বিবেচনায় নিয়ে প্রতীকী কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের সব ধরনের চেষ্টা করা হয়েছে। বিবৃতি প্রদান, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান এবং অবস্থান কর্মসূচির মত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হলেও এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের সঙ্গে দায়িত্বশীল কোনো পক্ষ যোগাযোগও করেনি। এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-সমাজের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রস্তাবিত 'প্রত্যয়' স্কিম বাস্তবায়ন হলে বর্তমান শিক্ষার্থী, যারা আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মত মহান পেশায় আসতে আগ্রহী, তারাই এর ভুক্তভোগী হবেন। কাজেই বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের চলমান আন্দোলন আগামী দিনের তরুণ সমাজের স্বার্থরক্ষা তথা উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে। শিক্ষক সমাজকে যারা সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছেন তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। অন্যথায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের চলমান প্রতীকী কর্মসূচি সর্বাত্মক আন্দোলনে পরিণত হবে।

জুলাইয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাবেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে চলমান আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আগামী ২৪ জুনের মধ্যে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালিত হবে। পরীক্ষাসমূহ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে।

যদি তারপরও দাবি না মানা হয় তাহলে ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হবে। এরপর ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে। সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে পরীক্ষা-ক্লাসসহ সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আকতারুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের যুগ্ম মহাসচিব ড. আব্দুর রহিম, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভুঁইয়া, সাদা দলের আহ্বায়ক লুৎফর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালিত হয়। পাশাপাশি একই দাবিতে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কর্মচারী ঐক্য পরিষদও কর্মবিরতি পালন করে।

এমএইচএ/এসআইটি/জেআইএম

Read Entire Article