‘জেনোসাইড’ করেছে হানাদাররা, আপনার হুমকি জনগণ ভালোভাবে নেবে না
নির্বাচনের দিন গণভোট হলে নির্বাচনে ‘জেনোসাইড’ হওয়ার সম্ভাবনা আছে—জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের এ বক্তব্যকে ‘হুমকি’ উল্লেখ করে এমন বক্তব্য জনগণ ভালোভাবে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা জেনোসাইড করার চেষ্টা করেছে। একাত্তরে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী জেনোসাইড করেছে। আপনি (জামায়াত আমির) জেনোসাইডের হুমকি দিচ্ছেন, এটিতো জনগণ ভালোভাবে নেবে না। আপনি তো খুব বিপজ্জনক কথা বলেছেন। রোববার (২৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণতন্ত্রে উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক আনোয়ার মাহমুদ। গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের চকবাজার প্যারেড গ্রাউন্ডে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠানকে ভালোভাবে দেখছি না। নির্বাচনের দিন গণভোট হলে নির্বাচনে জেনোসাইড হওয়ার সম্ভাবনা আছে। জামায়াত আমিরের এ ধরনের বক্তব্যের
নির্বাচনের দিন গণভোট হলে নির্বাচনে ‘জেনোসাইড’ হওয়ার সম্ভাবনা আছে—জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের এ বক্তব্যকে ‘হুমকি’ উল্লেখ করে এমন বক্তব্য জনগণ ভালোভাবে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা জেনোসাইড করার চেষ্টা করেছে। একাত্তরে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী জেনোসাইড করেছে। আপনি (জামায়াত আমির) জেনোসাইডের হুমকি দিচ্ছেন, এটিতো জনগণ ভালোভাবে নেবে না। আপনি তো খুব বিপজ্জনক কথা বলেছেন।
রোববার (২৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণতন্ত্রে উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক আনোয়ার মাহমুদ।
গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের চকবাজার প্যারেড গ্রাউন্ডে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠানকে ভালোভাবে দেখছি না। নির্বাচনের দিন গণভোট হলে নির্বাচনে জেনোসাইড হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
জামায়াত আমিরের এ ধরনের বক্তব্যের পর এ বিষয়ে পুরো জাতিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রিজভী।
ডা. শফিকুর রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, জামায়াত আমির বলেছেন নির্বাচন ও গণভোট একদিনে হলে নাকি জেনোসাইড হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আপনি এটা বলে কি গোটা জাতিকে হুমকি দিলেন? জেনোসাইড হবে কেন? আমরা তো জেনোসাইড বন্ধ করার জন্য একটি গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, বহু মানুষের জীবনের বিনিময়ে একটা রক্তপিপাসু সরকারকে সরিয়েছি। আপনি এই আশঙ্কা করলেন কেন? আপনি তো একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান। আপনি গণহত্যার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। জনগণের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা চাচ্ছেন গণভোট যেন আগে হয়। বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দল বলেছে, আগে গণভোট করা হলে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একদিনে করলে ভালো হবে। এ ডিবেটটা চলছে। গণতন্ত্রের মানেই তো ডিবেট এবং ডিসকাশন।
‘কিন্তু আপনি সেখানে জেনোসাইডের ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন! আপনি একটি রক্তগঙ্গা বইয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন! এটাতো ভয়াবহ ব্যাপার। এটাতো জনগণ ভালোভাবে নেবে না’- জামায়াত আমিরের উদ্দেশে বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, আমরা এখনো পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। স্বাধীনতার পর থেকে গণতন্ত্রের যে ধারাবাহিকতা ছিল, সেটা আমরা রক্ষা করতে পারিনি। এখন আমাদের সেটা করতে হবে। এখন কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে দেশ এবং আমরা এমন পরিস্থিতিতে পড়বো যে—আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সংকটের মুখে পড়বে।
‘দেশ কিভাবে চলবে, সেই শাসন নিশ্চিত করবে জনগণ। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণই ঠিক করবে তাদের প্রতিনিধি কে হবে। সেই নির্বাচনটা হতে হবে অবাধ ও সুষ্ঠু। এটি না হলে গণতন্ত্র কখনোই শক্তিশালী হবে না।’
এআই দিয়ে বক্তব্য বিকৃত করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, একজন বক্তা বক্তব্য রাখলেন, কিন্তু আরেকজন সেটা মানতে পারলো না। পরে সে এআই দিয়ে সেটাকে বিকৃত করে, অশ্লীল ও অশ্রাব্য কথা ব্যবহার করছে। আপাতদৃষ্টিতে এটা ফানি মনে হলেও, এটা কিন্তু গণতন্ত্র না। এটা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আরেকটা আক্রমণ। সমাজ ও রাজনীতিতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এআই ব্যবহার করা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচন শুধু জনগণ দিয়ে নয়...যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসনের যারা আছে, তাদের সবাইকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। তারা আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেফতার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে।
জামায়াত নেতার এ বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের একজন বললেন, তাদের কথায় প্রশাসন উঠবে এবং বসবে। এটা গণতন্ত্রের কোনো বৈশিষ্ট্যের মধ্যে নেই। এই কথার মাধ্যমে আপনি তো আরেকটা দানবীয় শাসন তৈরির ইঙ্গিত দিয়েছেন। আরেকটা শেখ হাসিনা এবং আরেকটা ফ্যাসিবাদ তৈরি হওয়ার ইঙ্গিত দিলেন।
বিএনপির এ নেতা বলেন, শেখ হাসিনা পুলিশকে বানিয়েছে ছাত্রলীগ, র্যাবকে বানিয়েছে যুবলীগ। তারা গুম-খুন করে আনন্দিত হতো। যারা ক্যাডারভিত্তিক দল করে, তারা প্রশাসন ও বিচার বিভাগ প্রতিটি ক্ষেত্রে ক্যাডার বসানোর চেষ্টা করে। এটিই গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হয়।
সেমিনারে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. আব্দুস সালাম আজাদ ও দলটির প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মালেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এমকেআর/জেআইএম
What's Your Reaction?