২৪টি গ্র্যান্ডস্লামজয়ী টেনিস তারকা। নোভাক জকোভিচ কৃতিত্ব দিয়েই সর্বকালের সেরা টেনিস খেলোয়াড়ের তকমা নিজের নামের পাশে লিখে নিয়েছেন। তবে একটাই আক্ষেপ ছিল তার। ৫ বারের চেষ্টাও অলিম্পিকে পুরুষ এককে সোনা জিততে পারেননি তিনি। অবশেষে ৬ষ্ঠবারে এসে সেই আক্ষেপও ঘোচালেন। জিতলেন অলিম্পিক স্বর্ণ পদক।
রোববার রাতে ফিলিপে শাঁতিয়ের কোর্টে প্যারিস অলিম্পিক টেনিসের ফাইনালে সময়ের আরেক সেরা টেনিস তারকা স্পেনের কার্লোস আলকারাজকে হারালেন ৭-৬, ৭-৬ গেমে। দু’টি সেটই গড়ায় টাইব্রেকারে। ২৪টি গ্র্যান্ডস্লামের সঙ্গে এখন অলিম্পিক স্বর্ণেরও মালিক তিনি।
অন্যদিকে অলিম্পিকের সোনা জিতে নিজ দেশের রাফায়েল নাদালকে ছোঁয়া হল না আলকারাজের। অন্য দিকে স্টেফি গ্রাফ, আন্দ্রে আগাসি, রাফায়েল নাদাল এবং রজার ফেদেরারের পর বিশ্বের পঞ্চম টেনিস খেলোয়াড় হিসাবে ‘গোল্ডেন স্ল্যাম’, অর্থাৎ চারটি গ্র্যান্ড স্লামই একবার করে জেতার পাশাপাশি অলিম্পিকে সোনা জিতলেন জকোভিচ।
৩৭ বছরের জোকোভিচের কাছে এবারই ছিল শেষ সুযোগ। ফলে রোলাঁ গাঁরোয় নিজের সেরাটা ঢেলে দিয়েছেন তিনি। সোনা জয়ের পথে জোকোভিচের সামনে ছিল শুধু একটাই বাধা। কার্লোস আলকারাজ। উইম্বলডনের ফাইনালে সরাসরি সেটে হারের পর এক মাসও কাটেনি। জোকোভিচের হৃদয়ে ক্ষত যে দগদগে ছিল, তা রোববার পুরো ম্যাচে তার খেলা দেখেই বোঝা গেছে। হাঁটুর চোটে কিছুটা সমস্যায় থাকলেও কোনও ম্যাচে ১০০ শতাংশ দিতে ছাড়েননি।
রবিবার রোলাঁ গাঁরোয় ফাইনালের মতোই ফাইনাল হয়েছে। দুই খেলোয়াড়ের কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়েননি। বছরের সেরা পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে আলকারাজের বিরুদ্ধে জিততে হয়েছে জোকোভিচকে। দু’টি সেট টাইব্রেকারে যাওয়া থেকেই প্রমাণিত, কতটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে।
সোনা জিতেই জোকোভিচ জানিয়ে দিলেন, তার কাছে ২৪টি গ্র্যান্ড স্লামের চেয়ে সেরা সাফল্য অলিম্পিকে সোনা জেতাই। সোনার পদক গলায় ঝুলিয়ে জোকোভিচ বলেন, ‘তর্কাতীতভাবে এটাই আমার অন্যতম সেরা সাফল্য। ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারে যা রয়েছে প্রায় সবই জিতেছি। ডেভিস কাপও জিতেছি। কিন্তু ৩৭ বছর বয়সে সার্বিয়ার হয়ে অলিম্পিকে খেলতে এসে সোনা জেতা আমার কাছে বিশেষ অনুভূতি। এখনও সেভাবে উচ্ছ্বাস শুরুই করিনি। পরের ৪৮ ঘণ্টায় আমার সামনে কী আসতে চলেছে, সেটা ভেবেই উত্তেজিত।’
সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যামের পরে অলিম্পিকেও সোনা। তিনিই কি সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়? জোকোভিচ উত্তরে বলেছেন, ‘আমি জানি না। যা পেয়েছি তার জন্য গর্বিত। অসাধারণ লাগছে। আবেগ বাধ মানছে না। অত্যন্ত গর্বিত এবং খুশি। দেশের হয়ে প্রথম সোনার পদক জিততে পেরে খুশি।”
তার সংযোজন, ‘সার্বিয়ার হয়ে খেলতে পেরে আমি গর্বিত। আমি জানি কার্লোস (আলকারাজ) আর রাফা (নাদাল) স্পেনের হয়ে খেলার জন্য গর্ববোধ করে। অ্যান্ডি (মারে) গ্রেট ব্রিটেনের হয়ে খেলতে পেরে গর্বিত। ঠিক তেমনই সুইজারল্যান্ডের হয়ে রজার ফেদেরার। সোনা জেতার পর ওদের প্রত্যেকের আবেগ আপনারা দেখেছেন। আসলে এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’
হেরেও স্পেনের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গর্বিত আলকারাজ। তিনি বলেন, ‘যেভাবে হেরেছি তা যন্ত্রণার তো বটেই। সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। নোভাক দারুণ খেলেছে। আমি হতাশ, তবে কোর্ট থেকে মাথা উঁচু করেই বেরোতে পারব। কারণ স্পেনের হয়ে নিজের সেরাটা দিয়েছি।’
আইএইচএস/