জয়পুরহাটে সার সংকট, বিপাকে কৃষক

উত্তরের কৃষিভান্ডার খ্যাত জয়পুরহাটে আমন মৌসুম শেষ। রবি মৌসুম শুরুর আগেই আবারও দেখা দিয়েছে সার সংকট। কৃষকরা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী ডিলারের কাছে গিয়ে সার মিলছে না। তবে ডিলারদের দাবি, তাদের কাছে বরাদ্দের বাইরে অতিরিক্ত সার দেওয়ার সুযোগ নেই। কৃষকরা বলছেন, বিগত বছরে আলুর ফলন ভালো হলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম আলু চাষ করেছিলেন। কিন্তু কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সেই স্বপ্নে ধূলিসাৎ। এখন চাহিদামতো সার না পাওয়া চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে। সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের পেঁচুলিয়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম ও মোমেজ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, জমি প্রস্তুত করে স্যারের জন্য ডিলারের ঘরে গেলে তিনি কৃষি কার্ডে কৃষি কর্মকর্তার সুপারিশ নিয়ে আসতে বলেন। পরে সুপারিশ নিয়ে এলেও সার মেলেনি। আক্কেলপুর উপজেলার রোয়ার গ্রামের কৃষক সোলায়মান আলী বলেন, ‘এবার পাঁচ বিঘা জমিতে আলু ও সরিষা চাষ করেছি। কিন্তু চাহিদামতো টিএসপি আর ডিএপি (ড্যাপ) পাচ্ছি না। দোকানে গেলে বলে সরবরাহ নেই। অথচ নিজ চোখেই দেখি গোপনে অনেকেই বেশি নিয়ে যাচ্ছেন।’ সদর উপজেলার পুরনাপৈল ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রাম

জয়পুরহাটে সার সংকট, বিপাকে কৃষক

উত্তরের কৃষিভান্ডার খ্যাত জয়পুরহাটে আমন মৌসুম শেষ। রবি মৌসুম শুরুর আগেই আবারও দেখা দিয়েছে সার সংকট। কৃষকরা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী ডিলারের কাছে গিয়ে সার মিলছে না। তবে ডিলারদের দাবি, তাদের কাছে বরাদ্দের বাইরে অতিরিক্ত সার দেওয়ার সুযোগ নেই।

কৃষকরা বলছেন, বিগত বছরে আলুর ফলন ভালো হলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম আলু চাষ করেছিলেন। কিন্তু কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সেই স্বপ্নে ধূলিসাৎ। এখন চাহিদামতো সার না পাওয়া চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে।

সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের পেঁচুলিয়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম ও মোমেজ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, জমি প্রস্তুত করে স্যারের জন্য ডিলারের ঘরে গেলে তিনি কৃষি কার্ডে কৃষি কর্মকর্তার সুপারিশ নিয়ে আসতে বলেন। পরে সুপারিশ নিয়ে এলেও সার মেলেনি।

আক্কেলপুর উপজেলার রোয়ার গ্রামের কৃষক সোলায়মান আলী বলেন, ‘এবার পাঁচ বিঘা জমিতে আলু ও সরিষা চাষ করেছি। কিন্তু চাহিদামতো টিএসপি আর ডিএপি (ড্যাপ) পাচ্ছি না। দোকানে গেলে বলে সরবরাহ নেই। অথচ নিজ চোখেই দেখি গোপনে অনেকেই বেশি নিয়ে যাচ্ছেন।’

জয়পুরহাটে সার সংকট, বিপাকে কৃষক

সদর উপজেলার পুরনাপৈল ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়। বাড়িতে আমার আলু বীজ অতিরিক্ত অঙ্কুরিত (টেক) হওয়ার ফলে লাগানোর অনুপযোগী হচ্ছে। কিছু আলু বীজে পচন শুরু হয়েছে। সার না পেলে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।’

এ বিষয়ে ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন জয়পুরহাটের সভাপতি রওনকুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘সরকার যে পরিমাণ বরাদ্দ দেয়, তা দিয়েই আমাদের চলতে হয়। কৃষকের চাহিদা বেড়ে গেলেও আমাদের হাতে তো অতিরিক্ত সার থাকে না। এমনকি এলাকাভিত্তিক বরাদ্দকৃত এক ওয়ার্ডের সার অন্য ওয়ার্ডের কৃষককে দিতে পারি না। কৃষকের জমির পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বরাদ্দকৃত পরিমাণ সার বিতরণ করছি।’

অনেক কৃষক নির্ধারিত জমির তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ সার চাইছেন, যা বাস্তবসম্মত নয় বলে মন্তব্য করেন জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এ কে এম সাদিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত সার প্রয়োগে সাময়িকভাবে ফসল উৎপাদন ভালো হলেও কয়েক বছর পর ওই জমিগুলো পূর্ণমাত্রায় তার উর্বরতা শক্তি হারিয়ে ফেলবে। কিছু কৃষক না বুঝেই জমিতে অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করছেন। তবে এ বিষয়ে আমরা কৃষকদের মাঝে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালাচ্ছি।’

স্থানীয় কৃষি গবেষক নুরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘সারের চাহিদা, সরবরাহ ও বাস্তব প্রয়োগের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় সংকট তৈরি হচ্ছে। এর স্থায়ী সমাধানে ডিজিটাল বিতরণ ব্যবস্থা ও কঠোর মনিটরিং জরুরি।’

এসআর/এমএস

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow