ঝুঁকি নিয়ে চলছে ২৩ বিদ্যালয়ে পাঠদান, আতঙ্কে শিক্ষার্থী-অভিভাবক
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের পাঠদান হচ্ছে ব্যাহত। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রয়েছেন আতঙ্কে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে সহস্রাধিক শিশু-শিক্ষার্থীর শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ ২৩টি বিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে ১২৩ দিঘলদী সপ্রাবি, ২৮ উত্তর বাকরা সপ্রাবি, ভানুরপাড় সপ্রাবি, নাউজান সপ্রাবি, উত্তর দৌলতপুর সপ্রাবি, পশ্চিম নাগদা সপ্রাবি, তুষপুর সপ্রাবি, ১৭৬ ধলাইতলী, ১৫ কোটরবন্ধ সপ্রাবি, দক্ষিণ খিদিরপুর সপ্রাবি, পশ্চিম আঁচলছিলা সপ্রাবি, উত্তর নওগাঁও সপ্রাবি, বকচর সপ্রাবি, বিশ্বাস পুর সপ্রাবি, পশ্চিম আশ্বিনপুর সপ্রাবি, শাহপুর সপ্রাবি, কালিকাপুর সপ্রাবি, ১৫৬ কাশিমপুর সপ্রাবি, ডাটিকারা সপ্রাবি, উপাদী সপ্রাবি, মুন্সিরহাট সপ্রাবি, দক্ষিণ দিঘলদী সপ্রাবি ও চরমুকুন্দি সপ্রাবি। এখানে প্রথমদিকের ১০টি বিদ্যালয়ের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। এভাবে বছরের পর বছর জরাজীর্ণ স্কুলগুলোতে চলছে পাঠদান। সরেজমিনে দে
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের পাঠদান হচ্ছে ব্যাহত। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রয়েছেন আতঙ্কে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে সহস্রাধিক শিশু-শিক্ষার্থীর শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ ২৩টি বিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে ১২৩ দিঘলদী সপ্রাবি, ২৮ উত্তর বাকরা সপ্রাবি, ভানুরপাড় সপ্রাবি, নাউজান সপ্রাবি, উত্তর দৌলতপুর সপ্রাবি, পশ্চিম নাগদা সপ্রাবি, তুষপুর সপ্রাবি, ১৭৬ ধলাইতলী, ১৫ কোটরবন্ধ সপ্রাবি, দক্ষিণ খিদিরপুর সপ্রাবি, পশ্চিম আঁচলছিলা সপ্রাবি, উত্তর নওগাঁও সপ্রাবি, বকচর সপ্রাবি, বিশ্বাস পুর সপ্রাবি, পশ্চিম আশ্বিনপুর সপ্রাবি, শাহপুর সপ্রাবি, কালিকাপুর সপ্রাবি, ১৫৬ কাশিমপুর সপ্রাবি, ডাটিকারা সপ্রাবি, উপাদী সপ্রাবি, মুন্সিরহাট সপ্রাবি, দক্ষিণ দিঘলদী সপ্রাবি ও চরমুকুন্দি সপ্রাবি।
এখানে প্রথমদিকের ১০টি বিদ্যালয়ের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। এভাবে বছরের পর বছর জরাজীর্ণ স্কুলগুলোতে চলছে পাঠদান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়গুলোর ভবনের চারদিকে কোথাও খসে পড়ছে পলেস্তারা, কোথাও আবার মাথার ওপর থেকে ঝরে পড়ছে ইট আর চুন-সুরকি। ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরে বেরিয়ে আছে রড। বৃষ্টিতে ছাদ বেয়ে পড়ে পানি। কিছু বিদ্যালয়ের পেছনের অংশ হঠাৎ তাকালে মনে হবে ভূতের বাড়ি। অনেক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
দিঘলদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের স্কুলটি ভাঙাচোরা। বৃষ্টি এলে পানি পড়ে। মাঝেমধ্যে পলেস্তারা খসে পড়ে। আমরা ঝুঁকির মুখে পড়ালেখা করি। আমাদের অনেক ভয় হয় এ স্কুলে। বৃষ্টির সময় স্কুলে আসতে কষ্ট হয়। আমরা একটি সুন্দর স্কুল চাই।
দিঘলদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী জুনায়েদ আল মো. আলিফ জানায়, সে অত্র স্কুল থেকে ২০২২ সালে পঞ্চম শ্রেণি পাস করেছে ও বৃত্তি পেয়েছে। তখন থেকেই বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ। বর্তমানে এতটাই জরাজীর্ণ যে, ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করতে আগ্রহী নয়। দেখা যাচ্ছে, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করলেও তারা দুর্ঘটনার ভয়ে বিদ্যালয়ে আসে না। আমাদের এ গ্রামে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কোনো কেন্দ্র নেই। আমরা চাই, আমাদের বিদ্যালয়টি সাইক্লোন সেন্টার হিসেবে নতুন ভবন করা হোক।
অভিভাবক মো. মামুন মিয়া, আমেনা বেগম, মহসিন হোসেন বলেন, বাচ্চারা ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না। স্কুলের ছাদ ভেঙে পড়ে ঘটেছে দুর্ঘটনা। ওদের স্কুলে পাঠিয়ে থাকতে হয় আতঙ্কে। জরাজীর্ণ ভবনগুলো সংস্কার করার জন্য সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানাই।
ভানুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হোসনেয়ারা বেগম বলেন, আমার দেখা এমন ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ উপজেলায় একটিও নেই। আতঙ্ক নিয়েই শ্রেণিকক্ষে পাঠদান দিয়ে যাচ্ছি। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চায় না। ভবনগুলো সংস্কার করার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
ভানুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মনোয়ারা বেগম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ আছে। পাঠদানের কোনো পরিবেশ নেই। দেয়াল ও ছাদের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। কিছুদিন আগে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে, শিক্ষার্থীও আহত হয়েছে।
দিঘলদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, আমি ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ে যোগদান করতে এসেই দেখি জরাজীর্ণ। বর্তমানে বিদ্যালয়ের ভবন একেবারে ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ, পরিত্যক্ত হওয়ার পরও কষ্ট করে এই শ্রেণিকক্ষেই পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মামুন মিয়া বলেন, উপজেলার ২০ থেকে ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন আছে জরাজীর্ণ। এ কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মানসম্মত পাঠদানের পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাজমুন নাহার কালবেলাকে বলেন, এরই মধ্যে আমাদের উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ছবিসহ তালিকা দিয়েছি।
What's Your Reaction?