জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় প্রচলিত ধারা ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর নিজস্ব পরিকল্পনার ভিত্তিতেই সহনশীল নগর গড়ে তোলা সম্ভব হবে। ঢাকায় আয়োজিত জাতীয় কর্মশালায় প্রকাশিত এক প্রকল্পের ফলাফলে উঠে এসেছে এমন চিত্র।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত কর্মশালায় উপস্থাপন করা হয় ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক জলবায়ু স্মার্ট সিটির জন্য জনগণের অভিযোজন পরিকল্পনা’ প্রকল্পের ফলাফল। লাকসাম, ফেনী ও মীরসরাইয়ের মতো জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ শহরে প্রথমবারের মতো স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই সংকট মোকাবিলার পথ প্রস্তাব করেন।
প্রকল্পটির অর্থায়ন করেছে যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)। কৌশলগত সহায়তা দিয়েছে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন (জিসিএ), আর বাস্তবায়ন করেছে সেভ দ্যা চিলড্রেন বাংলাদেশ ও ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা)। কারিগরি সহায়তা দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনের ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট টিমের ডেপুটি টিম লিডার এ বি এম ফিরোজ আহমেদ, জিসিএ-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রিতা লোহানী, সেভ দ্যা চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং ফেনী জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও ফেনী সদর পৌরসভার প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন।
প্রকল্পের আওতায় আনা অঞ্চলগুলোর বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে বন্যা, অতিবৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ও তাপপ্রবাহের মতো দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছেন। এই প্রকল্পে প্রথমবারের মতো তারা জলবায়ু ঝুঁকি মূল্যায়ন সমীক্ষায় নিজেদের সমস্যা ও অগ্রাধিকার তুলে ধরেছেন।
লাকসাম থেকে আসা এক প্রতিনিধি বলেন, প্রতি বর্ষায় আমাদের বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যায় এবং নিরাপদ পানীয় জলের সংকট দেখা দেয়। যদি ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা যায়, তবে সমস্যার সমাধান হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন বলেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই প্রকল্পের সবচেয়ে উদ্ভাবনী দিক হলো কর্মকৌশল। আধুনিক জিআইএস ম্যাপিং, পারিবারিক জরিপ ও দলীয় আলোচনার সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে জনগণের অভিযোজন পরিকল্পনা। এটি স্থানীয়দের প্রয়োজন ও অগ্রাধিকারের প্রতিফলন ঘটিয়েছে, যা ভবিষ্যতে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর গঠনে সহায়ক হবে।
এসইউজে/এসএনআর/জেআইএম