সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে চতুর্থদিন কর্মবিরতি পালন করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। গত কয়েকদিনের মতো বৃহস্পতিবারেও (৪ জুলাই) খোলেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগ ও প্রশাসনিক কার্যালয়।
এদিন কৃষি অনুষদে শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ের সামনে শতাধিক শিক্ষক দুপুর ১২টা থেকে দুইটা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এছাড়া শেখ কামাল ভবনের সামনে দুপুর ১২টা থেকে একটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সাবেক সদস্য অধ্যাপক ড. নুরজাহান বেগম বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। তাই শিক্ষকদের পর্যাপ্ত সম্মানটুকু দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন, জাতির মেরুদণ্ডকে সোজা রাখতে আমাদের সহযোগিতা করুন। আমাদের কাজ আন্দোলন করা নয়, আন্দোলনকে প্রশ্রয়ও দেই না, আমরা টাকার জন্য লড়ি না। আমরা দাঁড়িয়েছি আমাদের সম্মানের জন্য।
- আরও পড়ুন
চতুর্থ দিনের মতো কর্মবিরতিতে ঢাবি কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ
চতুর্থ দিনের মতো কর্মবিরতি পালন শাবিপ্রবি শিক্ষকদের
তিনি বলেন, টাকার জন্য দাঁড়াতে হলে আমরা বিদেশেই ভালো ভালো রিসার্চে থেকে যেতে পারতাম, কোটি কোটি টাকা উপার্জন করতে পারতাম। কিন্তু আমরা দেশকে, দেশের মানুষকে ভালোবাসি। প্রধানমন্ত্রী অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিসকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখে থাকেন। আমি বলবো, আসুন দেখে যান, আমরা শিক্ষকেরা কীভাবে জীবনযাপন করি। আমাদের বড় বড় গাড়ি, বাড়ির দরকার নেই। আমরা খুবই সাধারণ জীবনযাপন করি। আমাদের ছাত্ররা আসে বড় বড় গাড়িতে, অথচ লোকাল বাসে উঠি আমরা। তাতেও দুঃখ নেই, কিন্তু আমাদের সম্মানটুকু আপনি রাখেন।
অধ্যাপক ড. নুরজাহান বেগম আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে ভালো ভালো ছাত্রদের ধরে রাখা যাচ্ছে না। শিক্ষতাও করতে চাচ্ছেন না অনেক মেধাবী ছাত্র। অনেকেই পরবর্তী জীবনে পেনশনের দিকে তাকিয়ে শিক্ষকতা করতে আসেন, এটিও যদি চলে যায় তবে ভালো ছাত্ররা শিক্ষকতায় আসবেন না।
অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান বলেন, কর্মবিরতি দিলেও আমাদের খাতা দেখতে হচ্ছে, অ্যাসাইনমেন্ট দেখতে হচ্ছে, রিসার্চ করতে হচ্ছে, মাস্টার্সের ছাত্রদের থিসিস দেখাসহ বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক কাজ করতে হচ্ছে। আমরা মূলত কর্মবিরতিতে নেই, শুধু ক্লাস বন্ধ রয়েছে। কাজ সবই করতে হচ্ছে। আমরা আবার ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে যেতে চাই। অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে এ কয়েকদিনে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কমাতে চাই। তবে তার আগে আমাদের ন্যায্য দাবি মানতে হবে।
শেকৃবির সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সেকেন্দার আলী বলেন, অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। এটা স্কিমের নামে পেনশন তুলে দেওয়ার নাম। আপনি আপনার অফিসে যারা বসেন তাদের পেনশনকে আগে স্কিমের আওতায় আনেন। দেখবেন তারাও আন্দোলনে নামবে।
টিএটি/কেএসআর/জেআইএম