টাঙ্গাইল-২ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী শাকিল উজ্জামান

4 weeks ago 6

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথম ধাপে ৩৬টি আসনে ট্রাক প্রতীকে প্রার্থীতার ঘোষণা দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। এর মধ্যে টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনে দলটির মনোনয়ন পেয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে ঢাকায় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর এলাকায় জন্ম নেওয়া শাকিল উজ্জামান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তিনি। কোটা সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে তার দৃশ্যমান নেতৃত্ব রয়েছে।
 
নিজ আসনের বিষয়ে শাকিল উজ্জামান বলেন, গোপালপুর-ভূঞাপুর শুধু দুটি উপজেলার নাম নয়, এটি আমার অস্তিত্বের ঠিকানা। এখানেই আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা। এই মাটির মানুষের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের সময় আমি গুম, নির্যাতন ও কারাভোগের শিকার হয়েছি। তখন এই অঞ্চলের মানুষ আমার মুক্তির দাবিতে রাজপথে সোচ্চার হয়েছিল- সেই ঋণ শোধ হবার নয়।

শাকিলের ভাষ্য অনুযায়ী, গণঅধিকার পরিষদ হলো তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্বকারী একটি রাজনৈতিক শক্তি, যারা ভয়কে জয় করে রাজপথে মানুষের অধিকারের পক্ষে লড়াই করেছে। তিনি বলেন, যখন অনেক রাজনৈতিক দল নিরব ছিল, তখন আমরাই আন্দোলনের মশাল হাতে তুলে নিয়েছিলাম।

গণঅধিকার পরিষদ সূত্র জানায়, শিগগিরই দেশের সব আসনে ধাপে ধাপে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। তরুণ নেতৃত্ব ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে এ দফার প্রার্থী তালিকা জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। 

শাকিল উজ্জামান টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের সন্তান। তার শিক্ষাজীবনের সূচনা হয় নিজ গ্রামের হেমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর হেমনগর শশীমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ (এ+) অর্জন করে। হেমনগর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০১৮ সালের ঐতিহাসিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে তিনি সম্মুখ সারিতে থেকে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রদান করেন। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় তিনি ‘ছাত্র অধিকার পরিষদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়’ এর প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠিত ‘গণঅধিকার পরিষদ’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি শুরু থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি সবসময় ছিলেন দৃঢ় ও আপোসহীন। ২০২১ সালে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে তিনি র‍্যাব কর্তৃক গুম হন এবং ‘আয়না ঘর’ নামে কুখ্যাত নির্যাতন কেন্দ্রে ভয়াবহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকার পর মুক্ত হলেও তার সংগ্রামী চেতনায় কোনো ভাটা পড়েনি। বরং আরও দৃঢ় সংকল্পে তিনি গুম-খুন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুঃশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে সোচ্চার থাকেন।

২০২৪ এর জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানেও তিনি ছিলেন সম্মুখ সারির সাহসী নেতৃত্বে। মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে তিনি আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। দেশ গড়ার স্বপ্ন ও তরুণ নেতৃত্বের প্রতীক হয়ে শাকিল উজ্জামান এখন গোপালপুর-ভূঞাপুর সংসদীয় আসনে গণঅধিকার পরিষদের ‘ট্রাক’ প্রতীকে এমপি (সাংসদ) প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। 

Read Entire Article