মুকাব্বির হোসেন রানার বয়স এখন সাত বছর। এ বয়সে সমবয়সীদের সঙ্গে তার খেলাধুলার কথা। তবে টিউমারের ভারে এখন থমকে গেছে তার দুরন্তপনা। হাসির আড়ালে যেন লুকিয়ে আছে অবুঝ শিশুটির মাথার বোঝা। জন্মের পর থেকেই মাথায় বয়ে বেড়ানো টিউমারের আকার এখন দিন দিন বড় হচ্ছে। অর্থের অভাবে শিশু মুকাব্বিরের চিকিৎসা করাতে পারছে না পরিবার।
শিশু মুকাব্বিরের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের ধীতপুর শুনই গ্রামে। সে আ. হান্নান ও নাছিমা আক্তার দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান।
সম্প্রতি মোকাব্বিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু মুকাব্বির বাড়ির উঠানে সমবয়সীদের সঙ্গে ফুটবল নিয়ে খেলা করেছেন। কিছুটা দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হলেও আনন্দ খোঁজার চেষ্টা তার। বাড়ির সবাই তাকে চোখে চোখে রাখছে। এ সময় দেখা গেছে মাথায় বড়সড় একটি গুটি রয়েছে। গুটি বয়ে বেড়াচ্ছে শিশু মুকাব্বির। তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করলে হাসি মুখে কিছু বলার চেষ্টা করে। এ যেন হাসির আড়ালে লুকিয়ে আছে অবুঝ শিশু মুকাব্বিরের মাথার বোঝা।
শিশু মুকাব্বিরের বাবা আ. হান্নান বলেন, জন্মের পর এ গুটি ছোট দেখতে পাই। পরে ৯ মাস বয়সে সেটি একটু বড় হয়ে যায়। বিষয়টি দেখে তাকে ময়মনসিংহে একজন চিকিৎসকের কাছে নেই। সেখানে ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভালো চিকিৎসার কথা বলেন। কিন্তু চিকিৎসার অনেক খরচ। টাকা নাই যে চিকিৎসা করাব। দিনমজুরির আয়ে সংসার চলে, চিকিৎসার খরচ জোগানো অসম্ভব।
শিশু মুকাব্বিরকে জিজ্ঞাসা করলে, তার কণ্ঠে বলার চেষ্টা, সে এখন থেকেই মাদ্রাসায় যেতে চায়। পড়াশোনা করবে, অনেক বড় হবে।
প্রতিবেশী শহিদুল ইসলাম জানান, পরিবারটি দরিদ্র হওয়ায় চিকিৎসা করাতে পারছে না বাচ্চাটির। প্রতিবেশী হয়ে এ দৃশ্য দেখে খুবই খারাপ লাগে। সরকারিভাবে যদি ছেলেটির চিকিৎসা করা যেত, অথবা বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি এগিয়ে আসতেন, তাহলে হয়তো শিশুটি রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসত।
কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ আল মামুন বলেন, শিশুটি জন্মগতভাবে মাথায় টিউমার নিয়ে জন্মেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত বিশেষায়িত হাসপাতালে নেওয়া প্রয়োজন। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ বিষয়ে পরিবারকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করবে।