সড়কে যানজট নিরসন ও শৃঙ্খলা আনতে ঢাকা মহানগরীতে কাউন্টার ও ই-টিকেটিং পদ্ধতিতে বাস চলাচল (প্রথম পর্ব) শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে এই কাউন্টার ও ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালু করে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে ঢাকার বিভিন্ন গন্তব্যে ২১টি কোম্পানির দুই হাজার ৬১০টি বাস যাত্রী পরিবহন করে। এখন থেকে এই বাসগুলোতে যাতায়াত করতে হলে নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকিট কিনে বাসে উঠতে হবে। গোলাপি রঙের এসব বাসে টিকিট ছাড়া কেউ উঠতে পারবেন না। যত্রতত্র ওঠানামাও করা যাবে না। চলতি মাসে মিরপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর এলাকায় যাতায়াত করা অন্যান্য রুটের বাসগুলোতেও কাউন্টার ও ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালু করা হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
আজ আজমপুরে কাউন্টার ও ই-টিকেটিং পদ্ধতির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী ও বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সারওয়ার। তারা দুজন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ওই উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ দেন। এছাড়া ঢাকায় যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকসহ নগরবাসীর সবার সহযোগিতা চান।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল আলম বলেন, গত ১৬ বছর ধরে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঢাকা শহরে বাস-মিনিবাস চুক্তিতে যাত্রী পরিবহন করেছে। এতে রুটে গাড়ি চলাচলে অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়। যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করার কারণে যানজট ও বিশৃ্ঙ্খলা সৃষ্টি এবং দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই গত ১৯ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সভায় সড়কে শৃঙ্খলা, ঢাকা মহানগরে যানজট নিরসন এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা হয়। পরে বাস মালিকদের সঙ্গে চালকের ট্রিপভিত্তিক চুক্তি না করে পাক্ষিক বা মাসিক ভিত্তিতে চুক্তি সম্পাদন করতে নির্দেশনা দেন উপদেষ্টা। সে নির্দেশনা অনুযায়ী আজ আব্দুল্লাহপুর থেকে ঢাকার বিভিন্ন গন্তব্যে টিকিট কাউন্টার স্থাপন ও ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালু করা হয়।
- আরও পড়ুন
- শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজায় যানজটে নাকাল যাত্রীরা
- মে থেকে শুক্রবার সকাল থেকেই মেট্রোরেল চালানোর চিন্তা
তিনি আরও বলেন, আব্দুল্লাহপুর ঢাকার যেসব গন্তব্যে বাস যায়, সেসব সড়কে নির্দিষ্ট স্থানে কাউন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এখন থেকে গাড়ি কাউন্টার পদ্ধতিতে চালাতে হবে এবং যাত্রীদের নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে গাড়িতে যাতায়াত করতে হবে। নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া গাড়ি দাঁড় করানো যাবে না এবং যাত্রী ওঠানো যাবে না। যাত্রীরাও নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে বাসে উঠবেন। চলতি মাসে আরও তিনটি রুটে (মিরপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর) টিকেটিং পদ্ধতি চালু করা হবে। ফলে পরিবহনে অতিরিক্ত যাত্রী নিতে চালকদের ওপর চাপ কমবে। সড়কে অনেকাংশে শৃঙ্খলা ফিরবে। আর এ কাজটি বাস্তবায়নে পরিবহন চালক ও শ্রমিকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
কাউন্টার ও ই-টিকেটিং পদ্ধতির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি এম এ বাতেন, কোষাধ্যক্ষ এ এস এম আহম্মেদ খোকন, দপ্তর সম্পাদক কাজী মো. জোবায়ের মাসুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএমএ/বিএ