টেন্ডার ছাড়াই ৭০ হাজার টাকায় ১৮ বিঘা জমি নিলেন বিএনপি নেতা

2 hours ago 6

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের প্রায় ১৮ বিঘা কৃষিজমি টেন্ডার ছাড়াই মাত্র ৭০ হাজার টাকায় এক বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৯৫ হাজারে ইজারা দেওয়া হয়েছে একটি আমবাগান। নামমাত্র মূল্যে এমন ইজারায় বিপুল রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। এমনকি এসব বিষয়ে জানেও না কলেজের টেন্ডার ও ক্রয় কমিটি।

আর এভাবেই ইজারা নিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা মতিনুর রহমান কচি। তিনি সাতক্ষীরা পৌর ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। 

স্থানীয়রা জানান, বিএনপি নেতা কচি আগে থেকেই কলেজের অনেক সম্পত্তি নামমাত্র মূল্যে ইজারা নিয়ে আসছেন। কলেজের একজন শিক্ষক অধ্যক্ষকে ভুল বুঝিয়ে এসব করছেন। আর টেন্ডার ছাড়াই এমন কাণ্ডে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তাই পুনরায় যাতে দরপত্র আহ্বান করা হয় সেজন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান, একটি চক্র  কোনোরকম টেন্ডার ছাড়াই দীর্ঘদিন কলেজের লেক, পুকুর, কৃষি জমি ও আমবাগান ভোগ দখল করে আসছে। কলেজের সবকিছু একক নিয়ন্ত্রণ করতেন কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুল মিল্লাত। ফের তিনি কলেজের অধ্যক্ষকে ভুল বুঝিয়ে তার পছন্দের লোকদের সবকিছু নামমাত্র মূল্যে ইজারার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কলেজের টেন্ডার ও ক্রয় কমিটি থাকলেও তারা পুতুলের ভূমিকা পালন করেছেন।

এলাকাবাসী আরও জানান, উন্মুকক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে সবকিছু তিনগুণ দাম পাওয়া যেত। এমনকি রাতের আঁধারে বদরুল মিল্লাত হোস্টেল সংলগ্ন পুকুরের মাছ বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিনুর রহমান কচি বলেন, ‘আমি কলেজের খাল ও ছোট পুকুরটি লিজ নিয়েছি। হোস্টেলের পুকুর লিজ নেইনি। সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুল মিল্লাতের কাছ থেকে শুধু মাছগুলো ৫০ হাজার টাকায় কিনেছি।’

সহযোগী অধ্যাপক বদরুল মিল্লাত বলেন, ‘আমি পুকুরের মাছ বিক্রি করার কে? কলেজের অধ্যক্ষ ও ক্রয় ও টেন্ডার কমিটি আছে। আমি কোনো মাছ বিক্রি করিনি। আমাকে জড়িয়ে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ক্রয় ও টেন্ডার কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবস্থাপন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোন্তাজুর রহমান বলেন, ‘কলেজে শুধুমাত্র খাল, ছোট পুকুর ও আম গাছগুলোর টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। কৃষিজমির টেন্ডার এখনও হয়নি।’

তবে ইজারা দেওয়া হয়ে গেছে জানালে তিনি বলেন, ‘সেটা কলেজের অধ্যক্ষ বলতে পারবেন, আমি জানি না। আপনি অধ্যক্ষের কাছে জানতে পারেন।’

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল হাসেম জানান, ‘কলেজের খাল, ছোট পুকুর, আম বাগান ও কৃষিজমি লিজ দেওয়া হয়ে গেছে।’

এত কম মূল্যে ইজার দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আগে তো মোটেও ইজারা হতো না। আমি আসার পর সবকিছু ইজারা দিয়ে সরকার কিছু রাজস্ব পাচ্ছে।’

১৮ বিঘা জমি মাত্র ৭০ হাজার টাকায় ইজারা দিয়েছেন, ‘কলেজের টেন্ডার ও ক্রয় কমিটি জানে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তুমি কলেজে এসো, কাগজপত্র দেখে যাও।’

কলেজের একজন শিক্ষক সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে, এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সেটা সম্ভব না।

Read Entire Article