ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান বলেছেন, দায়িত্ব পালনকালে ট্রাফিক পুলিশকে অনেক সময় বিরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। এরপরও রাষ্ট্রের কর্মচারি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো নাগরিকদের যথাসময়ে তার গন্তব্যে পৌঁছানো নিশ্চিত করা।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে কদমতলীর স্থানীয় এক কমিউনিটি সেন্টারে কদমতলী থানা এলাকার নাগরিকদের সমন্বয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার খোন্দকার নজমুল হাসান বলেন, যানজট ঢাকা শহরে একটি নিত্য নৈমিত্তিক সমস্যা। বাংলাদেশে প্রায় প্রতিবছর যানজটের কারণে ৩৬ হাজার কোটি টাকা অপচয় হয়। এ ছাড়া যখনই যানজটে পড়ি ভালো লাগুক আর না লাগুক পেছনের জন অনবরত হর্ণ বাজাতে থাকে। কিন্তু নাগরিক হিসেবে আমাদের এই কাজটি করা মোটেই কাম্য নয়। প্রায় সময় দেখা যায় অ্যাম্বুলেন্স ও মোটরসাইকেল চালকরা কারণে অকারণে হর্ন বাজাচ্ছে। এতে করে নিজের এবং অন্যের শ্রবণশক্তি হ্রাস পাচ্ছে। আমরা সবাই বড় বড় অট্টালিকা তৈরি করি কিন্তু বাড়ির পাশে বা সামনে কোন রাস্তা রাখতে চাই না। আমরা আত্মকেন্দ্রিক, এজন্য আমরা সুবিধা বঞ্চিত।
তিনি বলেন, যাত্রাবাড়ীতে ট্রাফিক পুলিশকে পিছন থেকে ছুরি মারা হয়েছে। গতকালও উল্টা পথে যাওয়ার জন্য আটক করার কারণে ট্রাফিক পুলিশকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এরপরেও আমাদের দায়িত্ব হলো নাগরিকদের যথাসময়ে তার গন্তব্যে পৌঁছানো। রাষ্ট্রের কর্মচারি হিসেবে আমাদের কাজে যত বাধাই আসুক আমরা দায়িত্বপালন করবো। রাজধানীকে আমরা পুরোপুরি যানজট মুক্ত থাকতে পারবো না কিন্তু কীভাবে যানজট কমানো যায় সে ব্যাপারে সমাজের সকলে আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন।
তিনি আরও বলেন, ট্রাফিক পুলিশের কোন সদস্য যদি অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়, আপনারা যথাযথ তথ্য দিলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা অপরাধী ধরতে না পারি কিন্তু আমরা যারা অপরাধ দমনের জন্য এসেছি আমরা যেন এই কাজে সম্পৃক্ত না হই। এখানের অধিকাংশ পুলিশ সদস্য নতুন। কাজেই তাদেরকে একটু সময় দিতে হবে। আমাদের তাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে। মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে কিন্তু অভিভাবক হিসেবে আপনার সন্তান কোথায় যাচ্ছে, সেদিকে খোঁজ খবর রাখতে হবে, তাদেরকে কাউন্সিলিং করতে হবে।
তিনি বলেন, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের বিষয়ে কারো সাথে যোগাযোগ করবেন না, অনলাইনে আবেদন করবেন। সাতদিনের ভিতরে কাজ হয়ে যাবে।
মতবিনিময় সভায় গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য সকলকে নিয়ে মোনাজাত করা হয়।