ট্রাম্পকে ভালোবাসার মানুষ কমে গেছে, বলছে জরিপ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বছর আগে এমনভাবে কথা বলেছিলেন, যেন মার্কিন জনগণ তাকে ঐতিহাসিক ব্যবধানে বিজয়ী করেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরের নির্বাচনের পর তিনি বলেছিলেন, ‘আমেরিকা আমাদের এক অভূতপূর্ব ও শক্তিশালী ম্যান্ডেট দিয়েছে।’ পরের বছরের জানুয়ারিতে শপথ ভাষণে ট্রাম্প দাবি করেন, তার জয় প্রমাণ করে দিয়েছে, ‘পুরো দেশ দ্রুত আমাদের এজেন্ডার পেছনে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে।’ তখনও এই দাবিগুলো অতিরঞ্জিত বলেই মনে করেছিলেন বিশ্লেষকেরা। এক বছর পর সেই বক্তব্য বাস্তবতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক জরিপগুলো বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি জনসমর্থন এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ভঙ্গুর। আরও পড়ুন>>বিবিসির বিরুদ্ধে ৬১ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা ট্রাম্পেরপুতিনকে ছেড়ে ট্রাম্পের হাত ধরছেন বেলারুশের লুকাশেঙ্কো?ট্রাম্পের মধ্যস্থতা বাতিল, সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা থাই প্রধানমন্ত্রীর সাধারণ অনুমোদনের হার কমে যাওয়া নিয়ে আলোচনা থাকলেও ট্রাম্পের রাজনৈতিক শক্তি বোঝার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূচক হলো—কত মানুষ তাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেন। কারণ রিপাবলিকান পার্টির ভেতরে তার কর্তৃত্

ট্রাম্পকে ভালোবাসার মানুষ কমে গেছে, বলছে জরিপ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বছর আগে এমনভাবে কথা বলেছিলেন, যেন মার্কিন জনগণ তাকে ঐতিহাসিক ব্যবধানে বিজয়ী করেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরের নির্বাচনের পর তিনি বলেছিলেন, ‘আমেরিকা আমাদের এক অভূতপূর্ব ও শক্তিশালী ম্যান্ডেট দিয়েছে।’

পরের বছরের জানুয়ারিতে শপথ ভাষণে ট্রাম্প দাবি করেন, তার জয় প্রমাণ করে দিয়েছে, ‘পুরো দেশ দ্রুত আমাদের এজেন্ডার পেছনে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে।’

তখনও এই দাবিগুলো অতিরঞ্জিত বলেই মনে করেছিলেন বিশ্লেষকেরা। এক বছর পর সেই বক্তব্য বাস্তবতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক জরিপগুলো বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি জনসমর্থন এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ভঙ্গুর।

আরও পড়ুন>>
বিবিসির বিরুদ্ধে ৬১ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা ট্রাম্পের
পুতিনকে ছেড়ে ট্রাম্পের হাত ধরছেন বেলারুশের লুকাশেঙ্কো?
ট্রাম্পের মধ্যস্থতা বাতিল, সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা থাই প্রধানমন্ত্রীর

সাধারণ অনুমোদনের হার কমে যাওয়া নিয়ে আলোচনা থাকলেও ট্রাম্পের রাজনৈতিক শক্তি বোঝার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূচক হলো—কত মানুষ তাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেন। কারণ রিপাবলিকান পার্টির ভেতরে তার কর্তৃত্ব মূলত এই নিবেদিত সমর্থক গোষ্ঠীর ওপরই দাঁড়িয়ে রয়েছে।

কিন্তু সাম্প্রতিক একাধিক জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্পকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেন এমন মানুষের হার নেমে এসেছে মোটামুটি প্রতি পাঁচজন মার্কিনির মধ্যে একজনের কাছাকাছি। এটি তার দ্বিতীয় মেয়াদের সর্বনিম্ন পর্যায় এবং অনেক জরিপে তা প্রথম মেয়াদেরও সর্বনিম্ন পর্যায়ের কাছাকাছি চলে এসেছে।

সপ্তাহান্তে প্রকাশিত এনবিসি নিউজ–সার্ভেমাঙ্কি জরিপে দেখা যায়, এপ্রিল মাসে যেখানে ট্রাম্পের ‘দৃঢ় সমর্থন’ ছিল ২৬ শতাংশ, বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২১ শতাংশে। একই জরিপে দেখা গেছে, মাগা রিপাবলিকানদের মধ্যেও এই হার ৭৮ শতাংশ থেকে নেমে ৭০ শতাংশে এসেছে।

এনবিসি জরিপ একা নয়। চলতি মাসের এপি–নর্ক জরিপেও ট্রাম্পের দৃঢ় সমর্থন ১৮ শতাংশে নেমেছে, যা ২০১৭ সালের কয়েকটি সময় ছাড়া তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। রয়টার্স–ইপসোস জরিপে এই হার ১৯ শতাংশ, যা জানুয়ারির ২৯ শতাংশ থেকে বড় ধরনের পতন। ফক্স নিউজের গত মাসের জরিপে পাওয়া গেছে ২২ শতাংশ, যা তার দুই মেয়াদের মধ্যে সর্বনিম্ন। মারকোয়েট ইউনিভার্সিটি ল’ স্কুলের জরিপে ছিল ২১ শতাংশ, যা দ্বিতীয় মেয়াদের আরেকটি নতুন নিম্নস্তর।

ব্যতিক্রম হিসেবে মারিস্ট ইউনিভার্সিটির এনপিআর ও পিবিএস নিউজের জন্য করা জরিপে এই হার কিছুটা বেশি, ২৬ শতাংশ। তবে সেটিও দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য সর্বনিম্ন এবং ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলার পর ট্রাম্পের সমর্থন যে পর্যায়ে নেমেছিল, তার কাছাকাছি।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি ভবিষ্যতে নজর রাখার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ট্রাম্প এর আগেও জনমত জরিপে দুর্বল অবস্থানে পড়েছেন। কিন্তু তার শক্তি ছিল নিবেদিত সমর্থকদের দৃঢ়তা, যা রিপাবলিকান নেতাদের তাকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করতে নিরুৎসাহিত করতো।

এখন ঝুঁকিটা হলো, রিপাবলিকানদের একটি অংশ ট্রাম্পকে ‘লেম ডাক’ হিসেবে দেখা শুরু করতে পারে এবং তার বিরোধিতা করলে রাজনৈতিক ক্ষতির ভয় কম অনুভব করতে পারে। এর ইঙ্গিত এরই মধ্যে মিলেছে। জেফ্রি এপস্টেইন সংক্রান্ত নথি প্রকাশে চাপ দেওয়া কয়েকজন হাউস রিপাবলিকান, জর্জিয়ার কংগ্রেস সদস্য মার্জোরি টেলর গ্রিনের অবস্থান, কিংবা ইন্ডিয়ানা সিনেটে কংগ্রেশনাল মানচিত্র পুনর্নির্ধারণ নিয়ে ট্রাম্পের দাবির বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের ভোট—সবই সেই প্রবণতার উদাহরণ।

মাত্র পাঁচজনের মধ্যে একজনের দৃঢ় সমর্থন থাকা মানেই যে রিপাবলিকান পার্টিতে হঠাৎ করে ব্যাপক বিদ্রোহ শুরু হবে, তা নয়। তবে এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়, ট্রাম্পের সবচেয়ে অনুগত সমর্থক গোষ্ঠী এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ছোট।

সূত্র: সিএনএন
কেএএ/

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow