মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভঙ্গ করে আবারো সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। নতুন করে শুরু হওয়া এ সংঘাতে এরই মধ্যে একজন কম্বোডিয়ার দাই নাই নামের একজন নিহত হয়েছেন এবং আরও তিনজন আহত হয়েছেন। থাইল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় কাম্বোডিয়া তাদের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে শত শত পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনীর হামলায় কম্বোডিয়ার একজন সেনা নিহত হয়েছেন।
নতুন করে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় কম্বোডিয়া তাদের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বানতিয়ি মিয়ানচি প্রদেশের প্রেই চান গ্রাম থেকে শত শত বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছে। বৃহস্পতিবার(১৩ নভেম্বর) এ অঞ্চল থেকে ২৫০টিরও বেশি পরিবারকে সীমান্ত থেকে প্রায় ২৯ কিলোমিটার দূরে একটি বৌদ্ধ মন্দিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
উভয় দেশই একে অপরকে প্রথমে গুলি চালানোর জন্য দোষারোপ করেছে। থাই মেজর জেনারেল উইনথাই সুভারি বলেছেন, কম্বোডিয়ার সৈন্যরা আগে গুলি চালায়। অন্যদিকে কাম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, থাই সেনারাই বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে গুলি শুরু করে।
থাই সেনাবাহিনীর দেওয়া তথ্য মতে, দুই পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষটি প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী হয়।
এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছিল যে, কম্বোডিয়া নতুন করে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রেখেছে। এ ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে এক থাই সেনা পা হারিয়েছেন। কাম্বোডিয়া অভিযোগটি অস্বীকার করে জানিয়েছিল, এগুলো আগের সংঘর্ষের সময় স্থাপন করা হয়েছিল।
এ ঘটনার পর মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া কম্বোডিয়ার সঙ্গে ‘শান্তিচুক্তি’ স্থগিত করার ঘোষণা দেয় রয়্যাল থাই আর্মি।
ফলে অক্টোবরে স্বাক্ষরিত সম্প্রসারিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থগিত করার পাশাপাশি ১৮ কম্বোডিয়ান সেনার মুক্তি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিতর্কিত একটি সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয় দেশের পালটাপালটি দাবি রয়েছে। থাইল্যান্ড বলছে, এটি তাদের সা কেও প্রদেশের বান নং ইয়াও ক্যাও গ্রামের অংশ। আর কম্বোডিয়া বলছে, এটি তাদের বানতেয় মেনচে প্রদেশের প্রেই চান গ্রামের অন্তর্ভুক্ত।
গত ২৪ জুলাই দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে অন্তত ৪০ জন নিহত ও ২ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ ঘরছাড়া হন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ৮১৭ কিলোমিটার স্থলসীমান্তের বিভিন্ন অনির্ধারিত অংশ নিয়ে শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিরোধ চলছে। এই বিরোধের শিকড় হলো- ১৯০৭ সালে ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনের সময় সীমান্ত নির্ধারণ।
সূত্র : আল-জাজিরা
কেএম

1 hour ago
7







English (US) ·