ট্রাম্পের শাসনামলেই পরমাণু বোমা বানাবে ইরান?

4 hours ago 7

মাত্র এক সপ্তাহ পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে পা রাখলেই তেহরানের সঙ্গে পশ্চিমের সম্পর্কের সমীকরণ কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।  

প্রতিবেদনে বলা হয়—ইসরায়েল ও মার্কিন নেতৃত্ব খোলাখুলিভাবে আলোচনা করছেন যে ইরানকে লক্ষ্য করে সামরিক হামলা করা হতে পারে। দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলো, বিদ্যুৎকেন্দ্র, তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল ফ্যাক্টরিগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করতে চায় তারা। 

তবে, এমন হুমকির মধ্যেও ইরানের শাসক গোষ্ঠী, বিশেষ করে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি, এখনো অনড় অবস্থানে রয়েছেন। হামলা রুখতে দেশটির সেনারা বড় ধরনের বেশ কয়েকটি  মহড়া করেছে, যাতে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। 

ইরানের সাথে পশ্চিমের টানাপোড়েনের মূলে রয়েছে দেশটির পরমাণু প্রকল্প। তেহরান বারবার বলেছে, তারা পরমাণু বোমা বানাতে চায় না। তবে, বর্তমানে ইরানী শীর্ষ নেতারা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরির চিন্তাভাবনা করছেন বলে দাবি বিশ্লেষকদের। তাদের মধ্যে কিছু মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছে, আবার কিছু মানুষ মনে করছে, তাদের পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা উচিত, কারণ ইসরায়েল এবং তাদের আঞ্চলিক মিত্রদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করার শক্তি কমে গেছে।

ইরান এখন কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থায় রয়েছে। দেশটির মুদ্রার মান কমেছে, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, এবং তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণে জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায়, ইরানের সরকার পশ্চিমের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে চাচ্ছে, যাতে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া যায় এবং পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

২০১৫ সালে ইরান এবং পশ্চিমা দেশগুলো একটি পরমাণু চুক্তি করেছিল, যা জেসিপিওএ নামে পরিচিত। এই চুক্তির মাধ্যমে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি কিছুটা সীমিত করার বিনিময়ে কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কমিয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প ২০১৮ সালে এই চুক্তি থেকে বের হয়ে যান এবং ইরানের ওপর আবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

এবার, ইরান এবং পশ্চিমের মধ্যে আলোচনা আবার শুরু হতে পারে, তবে চুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সাথে বেশি একমত হতে পারে এখন, কারণ তারা ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে কিছুটা চিন্তিত।

এ ছাড়া, ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়সীমা আসবে, যখন পশ্চিম আবার ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। তখন ইরান এবং পশ্চিমের মধ্যে আরও উত্তেজনা তৈরি হতে পারে।

এতসব ঘটনার মধ্যে, ইরান কিছু সময় অপেক্ষা করছে এবং পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছে। তবে ট্রাম্প যদি খুব কঠোর পদক্ষেপ নেন, তাহলে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি আরো বাড়াতে পারে। কিন্তু যদি যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে, তাহলে ইরান কিছুটা শান্ত হতে পারে।

Read Entire Article