ড. ইউনূসের কথা অসত্য, জনগণের জন্য অপমানজনক: আইনমন্ত্রী

4 months ago 41

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের করা মন্তব্যগুলো অসত্য এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য অপমানজনক বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

বুধবার (১২ জুন) সচিবালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলে সঙ্গে বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে মামলা হয়েছে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে। শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় তাকে দণ্ডও দেওয়া হয়। তবে ড. ইউনূস দাবি করে আসছেন তিনি কোনো অপরাধ করেননি।

বুধবার আদালতের কাঠগড়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আজকে সারাক্ষণ খাঁচার ভেতর ছিলাম। আসামিদের অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ার আগে তাদের খাঁচার ভেতরে রাখা ন্যায্য হলো কি না? এটা আমার কাছে গর্হিত কাজ মনে হয়। এ বিষয়ে সবাই আওয়াজ তুলুন।

সম্প্রতি তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল (আওয়ামী লীগ) সবধরনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতা মুছে ফেলায় একদলীয় ও কর্তৃত্ববাদী সরকার শাসিত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল ড. ইউনূসের বিচারের বিষয়ে জানতে চেয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ড. ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের দেশ থেকে অনেকগুলো প্রশ্ন এসেছে সেসব বিষয়গুলো তারা পরিষ্কার হতে চেয়েছিলেন। ড. ইউনূসের ব্যাপারে যেসব মামলা রয়েছে আমি তাদের সেসব বলেছি। তিনি শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘণ করেছিলেন সেখানে মামলা হয়েছে। তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। ১০৮ জন শ্রমিক ব্যক্তিগতভাবে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

আরও পড়ুন

আনিসুল হক বলেন, আমি তাদের বলেছি, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশসহ পশ্চিমা দেশগুলো গুরুত্বপূর্ণ মামলা হিসেবে বিবেচনা করে। ঠিক সেভাবেই ড. ইউনূসের মামলা হচ্ছে। দেশের যে কোনো নাগরিক আইন ভঙ্গ করলে তার যেমন বিচার হয় ড. ইউনূস এরও সেভাবেই বিচার হচ্ছে। তবে তিনি (ড. ইউনূস) যেসব কথা বলে বেড়াচ্ছেন এসব কথা অসত্য এবং এসব কথা বাংলাদেশের জনগণের জন্য অপমানজনক।

আইনমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি মামলা করেছে। সে মামলার ব্যাপারে আমি বলেছি- মামলাটি আদালতে চলমান। আদালতে যে মামলা চলমান থাকে সে মামলা সম্পর্কে আইনমন্ত্রী কোনো কথা বলেন না সে ব্যাপারটাও তাদের বলেছি।

‘আরেকটি বিষয় আমি বলেছি- তার বিরুদ্ধে ট্যাক্স না দেওয়ার মামলা রয়েছে। তার একটি মামলায় তিনি আপিল বিভাগ পর্যন্ত গিয়ে হারার পরে ট্যাক্স দিয়েছেন। অন্যান্য মামলা যেগুলো রয়েছে সেগুলোর ট্যাক্স না দেওয়ার মামলা।’

মন্ত্রী বলেন, ইউরোপীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে শ্রম আইন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সি আইনের ব্যাপারে কি করছি, ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, তাদের নির্বাচন কমিশন থেকে একটি টিম এসেছিল সেই টিমে রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কি চিন্তা ভাবনা করছি, রোহিঙ্গা ইস্যু এবং সর্বশেষ এন্টি ডিসস্ক্রিমিনেশন বেল সম্পর্কেও তাদের সাথে আলোচনা হয়েছে। তারা আমাকে ইউনূস সাহেবের মামলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিল। এসব ব্যাপারে তাদের সাথে কথা হয়েছে।

আনিসুল হক বলেন, আমরা কবে নাগাদ শ্রম আইন পাস করতে যাচ্ছি এসব তারা জানতে চেয়েছিল। আমি তাদের বলেছি- আন্তর্জাতিক শ্রম আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে যে নালিশ করা হয়েছিল সেই নালিশটার শেষ আমরা চাই। আমি তাদের বলেছি শ্রম আইন নিয়ে আমরা যথেষ্ট কাজ করেছি। শ্রম আইন সংশোধন নিয়েও কাজ করেছে। আমার মনে হয় বিষয়টা শেষ করে দেওয়া উচিত। তাদের সাথে কথা হয়েছে আগামী নভেম্বরে তাদের যে গভর্নিং বডির মিটিং হবে সেখানে আমাদের সমর্থন করার।

আরএমএম/এমআরএম/জিকেএস

Read Entire Article