ডাকসু নির্বাচনের দুদিন পর জামিন পেলেন ভিপি প্রার্থী জালাল

4 hours ago 3
হলে রুমমেটকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) স্বতন্ত্র ভিপি পদপ্রার্থী জালাল আহমদ ওরফে জ্বালাময়ী জালাল নির্বাচনের দুদিন পর জামিন পেলেন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান শুনানি নিয়ে জামিনের আদেশ দেন । আদালতে প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই জিন্নাত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে এদিন জালালের পক্ষে তার আইনজীবী রফিকুল ইসলাম (হিমেল) জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘এ আসামি সম্পূর্ণ নির্দোষ। কোনো অপরাধ করেননি। শুধুমাত্র হয়রানি করার জন্য তাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। আসামির বিরুদ্ধে সুর্নিদিষ্ট কোনো প্রমাণ নেই। কথিত ঘটনার সময় আসামি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।’ এ আইনজীবী বলেন, ‘১৯ সেপ্টেম্বর বিসিএস পরীক্ষা। তিনি একজন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষায় তিনি অংশগ্রহণ করবেন। যে কোনো শর্তে তার জামিনের প্রার্থনা করছি।’ রাষ্ট্রপক্ষে ইসরাত জাহান জামিনের বিরোধিতা করেন৷ শুনানি শেষে আদালত পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড দেখানোর শর্তে আসামির জামিনের আদেশ দেন। জালালের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম পরে বলেন, জালালের জামিননামা দাখিল করেছি। তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই। আশা করছি, কাল (শুক্রবার) সকালে তিনি কারামুক্ত হবেন। মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, জালাল আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-২০১৪ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মো. রবিউল হক মিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর রুমে থেকে লেখাপড়া করতেন। জালাল আহমদ সিনিয়র শিক্ষার্থী হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থী মো. রবিউল হককে হলের রুমের ভিতর নানাভাবে তাকে মারপিট করতনে এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিতেন। ২৬ অগাস্ট রাত ১২টার দিকে রবিউল হক রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে জালাল আহমদ রুমের ভেতরে প্রবেশ করে বৈদ্যুতিক লাইট জ্বালায় এবং চেয়ার টানাহেঁচড়া করে বিকট শব্দ করতে শুরু করেন। যার ফলে রবিউলের ঘুম ভেঙে যায়। সে জালাল আহমেদ কে বলেন, ভাই সকালে আমি লাইব্রেরিতে যাবো। আপনি একটু আস্তে শব্দ করেন। এতে আসামি জালাল আহমদ ক্ষিপ্ত হয়ে রবিউলের সঙ্গে তর্কবিতর্ক শুরু করে। তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে জালাল আহমেদ রবিউলকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে কাঠের চেয়ার দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে তার কপাল জখমপ্রাপ্ত হয়।  পরে জালাল আহমেদ রুমের ভেতর থাকা পুরোনো টিউবলাইট দিয়ে রবিউলকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুনরায় মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করে। মাথা সরিয়ে নিলে তার বুকের বাঁপাশে লেগে টিউবলাইট ভেঙে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। পরে অন্যান্য রুমের শিক্ষার্থীরা রবিউলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জালালকে আটক করে পুলিশের সোপর্দ করা হয়। রুমমেটকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে বুধবার শাহবাগ থানায় মামলা করেন। ২৭ অগাস্ট জামিন আবেদন নাকচ করে জালালকে কারাগারে পাঠানো হয়। ১ সেপ্টেম্বর জালালের জামিন আবেদন করেও প্রত্যাহার করে নেন আইনজীবী। পরদিন জামিন আবেদন করেও আইনজীবী শুনানিতে যাননি। শুনানি না করায় আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছে। ৩ সেপ্টেম্বরও তার জামিন আবেদন নাকচ হয়। আজ জামিন শুনানি নিয়ে আদালত থেকে তার জামিনের আদেশ এলো।
Read Entire Article