ডিমেনশিয়ার ৬ শারীরিক লক্ষণ

বয়স বাড়ার সঙ্গে অনেক রকম পরিবর্তন আসে। তার মধ্যে মাঝে মধ্যে কিছু ভুলে যাওয়া খুবই সাধারণ, যা নিয়ে অনেকেই চিন্তায় পড়ে যান। এই মানসিক পরিবর্তনগুলো স্বাভাবিক হতে পারে। তাই কখনো সখনো সানগ্লাস কোথায় রেখেছেন ভুলে যাওয়া বা ছেলের পুরোনো শিক্ষকের নাম মনে না পড়া মানেই ডিমেনশিয়া নয়। তবে সাধারণ বয়সজনিত ভুলে যাওয়া আর ডিমেনশিয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন মানসিক সমস্যা দৈনন্দিন কাজকে বাধাগ্রস্ত করে, তখন তা ডিমেনশিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে। জনস হপকিন্স স্কুল অব মেডিসিনের জেরিয়াট্রিশিয়ান ড. স্টেফানি নাথেল বলেন, ‘যখন কোনো মানসিক সমস্যা দৈনন্দিন কাজ করতে বাধা দেয়—সেই মুহূর্তেই mild cognitive impairment ডিমেনশিয়ায় রূপ নেয়।’ যেমন: গাড়ি চালাতে না পারা, চেনা পথে গাড়ি চালিয়ে হারিয়ে যাওয়া, বহু বছর ধরে করা হতো—এখন আর করা যাচ্ছে না... এসবই সতর্কতার লক্ষণ। ডিমেনশিয়া একটি ছাতা শব্দ, যার মধ্যে অ্যালঝাইমার, ভাসকুলার ডিমেনশিয়া, পারকিনসনসসহ অনেক ধরনের রোগ রয়েছে। প্রতিটি ধরনের প্রকাশ ভিন্ন হলেও কিছু শারীরিক লক্ষণ সাধারণভাবে দেখা যায়। চলুন জেনে নিই ডিমেনশিয়ার শারীরিক লক্ষণ: 

ডিমেনশিয়ার ৬ শারীরিক লক্ষণ

বয়স বাড়ার সঙ্গে অনেক রকম পরিবর্তন আসে। তার মধ্যে মাঝে মধ্যে কিছু ভুলে যাওয়া খুবই সাধারণ, যা নিয়ে অনেকেই চিন্তায় পড়ে যান।

এই মানসিক পরিবর্তনগুলো স্বাভাবিক হতে পারে। তাই কখনো সখনো সানগ্লাস কোথায় রেখেছেন ভুলে যাওয়া বা ছেলের পুরোনো শিক্ষকের নাম মনে না পড়া মানেই ডিমেনশিয়া নয়। তবে সাধারণ বয়সজনিত ভুলে যাওয়া আর ডিমেনশিয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন মানসিক সমস্যা দৈনন্দিন কাজকে বাধাগ্রস্ত করে, তখন তা ডিমেনশিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে।

জনস হপকিন্স স্কুল অব মেডিসিনের জেরিয়াট্রিশিয়ান ড. স্টেফানি নাথেল বলেন, ‘যখন কোনো মানসিক সমস্যা দৈনন্দিন কাজ করতে বাধা দেয়—সেই মুহূর্তেই mild cognitive impairment ডিমেনশিয়ায় রূপ নেয়।’

যেমন: গাড়ি চালাতে না পারা, চেনা পথে গাড়ি চালিয়ে হারিয়ে যাওয়া, বহু বছর ধরে করা হতো—এখন আর করা যাচ্ছে না... এসবই সতর্কতার লক্ষণ।

ডিমেনশিয়া একটি ছাতা শব্দ, যার মধ্যে অ্যালঝাইমার, ভাসকুলার ডিমেনশিয়া, পারকিনসনসসহ অনেক ধরনের রোগ রয়েছে। প্রতিটি ধরনের প্রকাশ ভিন্ন হলেও কিছু শারীরিক লক্ষণ সাধারণভাবে দেখা যায়।

চলুন জেনে নিই ডিমেনশিয়ার শারীরিক লক্ষণ: 

হাঁটা বা ভারসাম্য রাখতে সমস্যা হওয়া

ড. নাথেলের মতে, অনেক শারীরিক লক্ষণ ডিমেনশিয়ার শেষের দিকে দেখা গেলেও, হাঁটা বা ভারসাম্য রক্ষা করতে সমস্যা হওয়া এটি প্রথম দিকের সাধারণ লক্ষণ।

হাঁটা আসলে কঠিন একটি কাজ, কারণ: পায়ের অনুভূতি, চোখের সামনে কী আছে, চারপাশের পরিবেশ—সবকিছু মস্তিষ্ককে বিশ্লেষণ করতে হয়।

তাই হাঁটতে কষ্ট, ভারসাম্য হারানো বা বারবার পড়ে যাওয়া ডিমেনশিয়ার লক্ষণ হতে পারে। তবে এগুলো আর্থ্রাইটিস বা স্বভাবগত ভারসাম্য-সমস্যা থেকেও হতে পারে।

শরীর ঝুঁকে যাওয়া বা পা ঘষটানো

রাশ ইউনিভার্সিটির নিউরোলজির অধ্যাপক ড. জরি ফ্লেইশারের মতে, লিউই বডি ডিমেনশিয়া (যার মধ্যে পারকিনসনও আছে) ডিমেনশিয়ার দ্বিতীয় সর্বাধিক সাধারণ ধরন।

এতে দেখা যায়— মানুষ ধীরে হাঁটে, পা টেনে হাঁটে ও শরীর একটু ঝুঁকে যায়। বয়স, মনোযোগ কম থাকা বা আর্থ্রাইটিস ভেবে অবহেলা না করে—এটি নিয়মিত ঘটলে গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে।

স্বাদ বা গন্ধ হঠাৎ কমে যাওয়া

স্বাদ বা গন্ধ কমে যাওয়ার কারণ অনেক হতে পারে। যেমন—সাইনাস সমস্যা, কভিড-১৯ ইত্যাদি। তবে যদি কোনো পরিচিত কারণ না থাকে, তবে এটি ডিমেনশিয়ার লক্ষণ হতে পারে।

অনেক সময় রোগী নিজে বুঝতে পারেন না, কিন্তু পরিবারের মানুষ খেয়াল করেন। যেমন চুলায় কিছু পুড়ছে কিন্তু তিনি গন্ধ পাচ্ছেন না। এ ধরনের পরিবর্তন হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।

খাবার গিলতে সমস্যা হওয়া

ডিমেনশিয়ায় অনেকেই খাবার বা পানি গিলতে সমস্যা অনুভব করেন। ড. নাথেল বলেন, ‘খেতে বা পান করতে গিয়ে খাবার ভুল পথে গলা দিয়ে নেমে যেতে পারে।’

এতে খাবার বা পানি ফুসফুসে ঢুকে গেলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। এ কারণেই ডিমেনশিয়ার পরের পর্যায়ে নিউমোনিয়া বেশি দেখা যায়।

মূত্রথলি নিয়ন্ত্রণে সমস্যা

ডিমেনশিয়ায় অনেকেই প্রস্রাব ধরে রাখতে পারেন না। কারণ মূত্রথলি নিয়ন্ত্রণে অনেক স্নায়ুর ভূমিকা থাকে এবং এগুলো ডিমেনশিয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

একইভাবে অনেকের পরবর্তী বয়সে কোষ্ঠকাঠিন্যও দেখা দেয়, যা পারকিনসন ও লিউই বডি ডিমেনশিয়ার আগমনী সংকেত হতে পারে।

ঘুমের সমস্যা বা অস্বাভাবিক আচরণ

রাতে, ঘুমের মধ্যে নড়াচড়া করা, হাত-পা ছোড়া, চিৎকার বা কথা বলা—এসব আচরণ REM Behavior Disorder-এর লক্ষণ হতে পারে, যা পারকিনসন বা লিউই বডি ডিমেনশিয়ার অনেক আগেই দেখা দিতে পারে।

এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলা খুব জরুরি। প্রাথমিক ভাবে শনাক্ত করা ভবিষ্যতের জন্য সহায়ক। সমস্যা মানতে কঠিন হলেও সত্যটি স্বীকার করা জরুরি—কারণ এখন ডিমেনশিয়ার চিকিৎসা ও গবেষণায় অনেক উন্নতি হয়েছে।

আজকাল রক্ত বা স্পাইনাল ফ্লুইডের পরীক্ষা করে ডিমেনশিয়ার ধরন নিশ্চিত করা যায়। যদিও চিকিৎসা পুরোপুরি রোগ সারায় না, তবে উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ ও জীবনের মান ভালো রাখতে সাহায্য করে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো - 

প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করলে রোগী ও পরিবার ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে পারে।

যেমন—ভবিষ্যতের চিকিৎসা, কোথায় থাকবেন, আর্থিক পরিকল্পনা—এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়।

ঝুঁকি কমানোর উপায়

আপনার ডিমেনশিয়া হোক বা না হোক—ঝুঁকি কমানোর জন্য যা করতে পারেন:

- পুষ্টিকর খাবার খাওয়া (ফ্লেইশার MIND ডায়েটের পরামর্শ দেন)

- নিয়মিত ব্যায়াম

- পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো

- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও স্লিপ অ্যাপনিয়া নিয়ন্ত্রণ করা

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ৫৫ বছর বয়সের পর আমেরিকার ৪২% মানুষ জীবনে কোনো না কোনো সময়ে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হবেন। তাই ঝুঁকি কমাতে এবং প্রয়োজনে প্রস্তুত থাকতে এই লক্ষণগুলো জানা গুরুত্বপূর্ণ।

সূত্র : HuffPost

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow